২০১৫ সালে প্রজাতন্ত্র দিবসে ভারত-পাক সৌহার্দ্যের দৃশ্য সাম্প্রতিক বলে ভাইরাল হয়েছে
ভিডিওটিতে ২০১৫ সালে ভারতীয় ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রথাগত মিষ্টি বিনিময়ের দৃশ্য রেকর্ড করা হয়েছে।
সীমান্তরেখা বরাবর ভারত ও পাকিস্তানি সেনাবহিনীর সদস্যদের প্রজাতন্ত্র দিবসের মিষ্টি বিনিময় করার চার বছর আগের এক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়।
ভিডিওটি দীপাবলি উপলক্ষে শেয়ার করা হচ্ছে। ওই দিন দুই সেনাবাহিনীর মধ্যে মিষ্টি বিতরণের এক প্রথা বজায় আছে অনেক বছর ধরে। কিন্তু এ বছর দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ লেগে থাকায় ওই প্রথায় ছেদ পড়ে।
ভিডিওটি ৬৬তম (২০১৫) প্রজাতন্ত্র দিবসের। তাতে ভারতীয় ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অফিসারদের জম্মু ও কাশ্মীরের উরিতে একে অপরকে অভিনন্দন জানাতে ও মিষ্টি বিনিময় করতে দেখা যাচ্ছে। এখন ফেসবুকে মিথ্যে দাবি সমেত ভাইরাল হয়েছে ভিডিওটি। বলা হচ্ছে, “ভারতীয় আর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী মিষ্টি আর অভিনন্দন বিনিময় করছে। কোনও মিডিয়া চ্যানেল দেশকে এই দৃশ্য দেখায়নি। ক’টা খবরের কাগজ এই খবর প্রথম পাতায় ছেপেছে? ঢাক-পেটানো, বুক চাপড়ানো মি ৫৬ ইঞ্চি ২০২৪ সালের আগে যত সম্ভব মানুষকে বলি দেবে। সাবধান!”
ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে যে, দুই দেশের সেনাবাহিনী মিষ্টি বিনিময় করছে এবং তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় আছে। কিন্তু মিডিয়া অন্য কথা বলে।
তথ্য যাচাই
ভিডিওটির প্রধান ফ্রেম নিয়ে সার্চ করলে দেখা যায়, সেটি ২০১৫ সালের। সেই সময় পাকিস্তান আর ভারতীয় সেনারা জম্মু ও কাশ্মীরের উরি সেক্টরের কামান পোস্টে মিষ্টি বিনিময় করে।
২৬ জানুয়ারি ২০১৫’য় ‘বিজনেস স্ট্যান্ডর্ড’ কাগজে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়, “সোমবার, ৬৬তম প্রজাতন্ত্রদিবস উপলক্ষে, পাকিস্তানি ও ভারতীয় সেনারা লাইন অফ কন্ট্রোলে (এলওসি) মিষ্টি বিনিময় করে। উরি সেক্টরে, শ্রীনগর-মুজাফ্ফরাবাদ রাস্তায় অবস্থিত কামান চৌকিতে সেনাবাহিনীর ১২ ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেডের একটি দল পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে মিষ্টি বিনিময় করে।”
খোঁজ করে দেখা যায়, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রতিবেদনটি ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারি আপলোড করা হয়েছিল। যে ভিডিওটি এখন ভাইরাল হয়েছে, দেখা যায় সেই একই ভিডিও প্রতিবেদনটির সঙ্গে সেই সময় ব্যবহার করা হয়েছিল।
ভাইরাল ভিডিওতে যে সেনা অফিসারদের দেখা যাচ্ছে, ‘অমর উজালা’ কাগজে প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা যাচ্ছে ওই একই ব্যক্তিদের।
সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-এর খবরে বলা হয়, পাকিস্তানের পুঞ্চ জেলায় সীমান্তরেখা বরাবর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করায়, ভারতীয় সেনাবাহিনী ওই প্রথা বন্ধ করে দেয়। তবে আতারি সীমান্ত পোস্টে ওই প্রথা চালু থাকে।
উরির কামান পোস্টে ওই প্রথা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল কি না, সে ব্যাপারে বুম নিশ্চিত হতে পারেনি। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়া জানতে আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁদের বক্তব্য জানার পর এই প্রতিবেদন আপডেট করা হবে।