কোমর থেকে দুমড়ে এক মহিলার দেহ বহন করার ২০১৬ সালের ছবি ভাইরাল হল
বুম অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ছবিটি ২০১৬ সালের। শববাহী গাড়ি ভাড়ার সামর্থ না থকায় দু’জন লোক বয়ে নিয়ে যান মহিলার মৃতদেহ।
২০১৬ সালের দুটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হল সাম্প্রতিক ছবি বলে। ওড়িশার একটি হাসপাতালের ওই ছবি দুটিতে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি ওই মহিলার দেহ কোমর থেকে ভাঁজ করে দিচ্ছে যাতে তা বহন করতে সুবিধা হয়।
ছবিগুলি হোয়াটসঅ্যাপ এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।অনেকেই ছবিগুলি শেয়ার করে রাজ্যে চিকিৎসা পরিকাঠামোর বিপুল অভাব ও মৃতের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের অভাবের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।
অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে ছবিগুলি শেয়ার করা হয়েছে। পোস্টটিতে লেখা হয়েছে,‘ওড়িশায় এত সুন্দর সুন্দর মন্দির রয়েছে। সেখানে এক জন বাবা তাঁর সন্তানের দেহ দুমড়েমুচড়ে ভেঙে দিচ্ছেন যাতে তাঁদের গ্রাম পর্যন্ত দেহ বয়ে নিয়ে যেতে সুবিধা হয়, কারণ সেখানে কোনও অ্যাম্বুল্যান্সপাওয়া যায় না।'
পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
তথ্য যাচাই
আমরা ‘ মহিলার দেহ ভাঙা’ এবং ‘ওড়িশা’ এই কিওয়ার্ডস দিয়ে সার্চ করে ২০১৬ সালের বেশ কিছু সংবাদ প্রতিবেদন দেখতে পাই। ওই প্রতিবেদনগুলিতে ভাইরাল হওয়া ছবির ওই লোকগুলিকে বাঁশে ঝুলিয়ে এক মহিলার দেহ বয়ে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
ওই প্রতিবেদনের ছবিতে লোকদুটির জামাকাপড় এবং চেহারা ভাইরাল হওয়া ছবির ব্যক্তিদের সঙ্গে একেবারে মিলে যায়।
২০১৬ সালের ২৬ অগস্ট তারিখের ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুসারে, এই ঘটনাটি ওড়িশার সোরো রেলওয়ে স্টেশনের কাছে ঘটে। দুজন ব্যাক্তিকে এক বৃদ্ধার মৃতদেহ বহন করে নিয়ে যেতে দেখা যায়। মালবাহী ট্রেনে কাটা পড়ে ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন থেকে জানা যায় সালামনি বেহরা (৮০) নামের ওই বৃদ্ধার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বালাসোর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল, কিন্তু কোনও অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়া যাচ্ছিল না।
সোরো জিআরপি-র অ্যাসিসটেন্ট সাব-ইন্সপেক্টর প্রতাপ রুদ্র দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন যে দেহটি রেলওয়ে স্টেশনে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি প্রথমে এক অটোচালককে অনুরোধ করেছিলেন।
“সেই অটোচালক ভাড়াবাবদ ৩,৫০০ টাকা দাবি করেন, কিন্তু এইসব ক্ষেত্রে আমরা ১০০০ টাকার বেশি খরচ করতে পারি না। ফলে সোরো সিএইচসি-র কয়েকজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মীকে বলা ছাড়া আমার কাছে আর কোনও উপায় ছিল না,” দাবি করেন মিশ্র।
এই ঘটনাটির খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিপুল ভাবে প্রকাশিত হয়। এর আগে এই রাজ্যেই কালাহান্ডি জেলায় এক আদিবাসীর তাঁর স্ত্রীর দেহ কাঁধে বয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা সামনে এসেছিল।