কিউএস ক্রম অনুযায়ী কলকাতা ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কী প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে? একটি তথ্যযাচাই
রাজ্য সরকারের পরিচালনাধীন বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা অনুযায়ী সারা দেশের মধ্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
সম্প্রতি কিউএস ক্রম অনুযায়ী কলকাতা ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ২২ অক্টোবর করা টুইট ঘিরে সোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো পোস্ট করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী ওই টুইটে লিখেছেন, ‘‘আমি আপনাদের সঙ্গে এটা ভাগ করে অনন্দিত যে কিউএস ইন্ডিয়া ২০২০ ক্রম অনুযায়ী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে ভারতের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে। আমার হার্দিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা সবাইকে। জয় হিন্দ। জয় বাংলা।
বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টুইটের সঙ্গে কিউএস ২০২০ বর্ষের ক্রমের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে প্রথম অবস্থানে রয়েছে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি বম্বে ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স।
ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলিতে এর সঙ্গে লেখা হয়েছে, ‘‘শিক্ষাক্ষেত্রে শাসক দলের দুর্নীতি ও মিথ্যা প্রচারের আরও এক উজ্বলতর উদাহরণ’’
একটি ফেসবুক পোস্টে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, ‘‘তুলনাহীন মিথ্যাচার।’’
ফেসবুক পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
আরেকটি পোস্টে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, ‘‘লজ্জা হওয়া উচিৎ !! ছি:
পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
কিউএস ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০ সালের ক্রমে ১০৭ টি ভারতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষনা করা হয়েছে আটটি বিষয়ের মাপকাঠি পর্যালোচনা করে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সুনাম, নিয়োগকর্তাদের সুনাম, অধ্যাপক/ছাত্রদের অনুপাত, পিএইচডি ডিগ্রিধারী অধ্যাপক, বিষয় পিছু অধ্যাপক, গবেষণাপত্র প্রতি উল্লেখ, আন্তর্জাতিক মানের অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রী সংখ্যা।
বুম সম্প্রতি প্রকাশিত হওয়া কিউএস ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০ সালের ক্রম যাচাই করে দেখেছে। ওই ক্রম অনুযায়ী ভারতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি বম্বে ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স।
প্রথম দশের তালিকায় কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে পঞ্চম স্থানে রয়েছে খড়গপুর ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলির তালিকায় সপ্তম ও অষ্টম অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ও হায়দ্রাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়। যদিও এই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় সরকারের পরিচালনাধীন।
মূল তালিকায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রম যথাক্রমে একাদশ ও দ্বাদশ। কিন্তু যদি রাজ্যসরকারের পরিচালনাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কথা ধরা হয় তাহলে রাজ্যের এই বিশ্ববিদ্যালয় দুটি প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে। তালিকাটি দেখা যাবে এখানে।
পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তার ফেসবুক পোস্টে সেকথায় লিখেছেন।
১৮৫৭ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে ১৯৭৯ সালের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট দ্বারা পরিচালিত হয় এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। স্বাধীনতার পর ১৯৫৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গ সরকার নয়া আইন প্রণয়ন করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার নেয় রাজ্যের হাতে। রাজ্যের এই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা ও কৃতী ছাত্রছাত্রীদের তালিকার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু বরেণ্য ব্যক্তির নাম।