মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বেলডাঙায় (Beldanga) সাম্প্রতিক গোষ্ঠীসংঘর্ষের (violence) দৃশ্য ভুয়ো দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবহারকারীরা জনতার হাতে রাস্তায় দুজন পুলিশ কর্মীর আক্রান্ত হওয়ার একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। ভাইরাল ভিডিওতে হিন্দিতে কথোপকথন শোনা যায়।
বুম দেখে ভাইরাল ভিডিওটি পুরনো এবং মুর্শিদাবাদের নয়। ভিডিওয় ২০১৫ সালে দিল্লির গোকূলপুরীতে দুজন ট্রাফিক পুলিশকে মারধরের ঘটনার দৃশ্য দেখা যায়।
এই সময়ের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন জানায় গত ১৬ নভেম্বর একটি কার্তিক পুজোকে কেন্দ্র করে গোষ্ঠী সংঘর্ষের সুত্রপাত হয় মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাতেই পৌঁছে যান পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের আধিকারিকরা। ঘটনায় একাধিক বাড়ি ভাঙচুর হয় এবং বেশ কিছুক্ষণের জন্য রেল অবরোধও করা হয়। জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানায় তার ঘটনায় এক পুজো কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে।
ভাইরাল ভিডিওটি এক ফেসবুক ব্যবহারকারী শেয়ার করে লেখেন, "কিছু বলার ভাষা নেই। যোগীজির "বাটেঙ্গের তো কাটেঙ্গে" এর সবথেকে সুন্দর উদাহরণ...স্থানঃ- বেলডাঙা; মুর্শিদাবাদ দয়া করে কেউ অ্যাংরি রিএক্ট দেবেন না।"
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
তথ্য যাচাইঃ বেলডাঙা নয়, দিল্লির ভিডিও
বুম দাবিটির সত্যতা যাচাই করতে প্রথমে ভাইরাল ভিডিওর একাধিক কিফ্রেমের রিভার্স ইমেজ সার্চ করে। সার্চটি আমাদের ২০১৫ সালের জুলাই মাসে এনডিটিভি ইন্ডিয়ার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা একটি ভিডিও প্রতিবেদনে নিয়ে যায়।
ওই প্রতিবেদনে আমরা ভাইরাল ভিডিওর একটি দীর্ঘতর সংস্করণ দেখতে পাই যেখানে উত্তেজিত জনতাকে দুজন পুলিশকর্মীকে মারধর করতে দেখা যায়। প্রতিবেদন অনুসারে ঘটনার স্থান উত্তরপূর্ব দিল্লির গোকূলপুরী এলাকায়।
ভিডিওটি দেখুন এখানে।
কী ঘটেছিল দিল্লির গোকূলপুরীতে?
আমরা দিল্লির ঘটনার ব্যাপারে বিশদভাবে জানতে গুগলে কিওয়ার্ড সার্চ করে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে প্রকাশিত একাধিক সংবাদ প্রতিবেদন পাই।
১৩ জুলাই, ২০১৫-এ জি নিউজের প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন জানায় ট্রাফিক নিয়ম লঙ্ঘন করার জন্য দুই ট্রাফিক পুলিশ কর্মী বাইক আরোহী কিছু যুবককে আটক করে লাইসেন্স দেখাতে বলে। এরপর তারা তাদের পরিবারের লোককে ঘটনাস্থলে ডাকে এবং তারা সেখানে গিয়ে পুলিশের উপর চড়াও হয়ে মারধর করে।
ঘটনায় আক্রান্ত পুলিশ কর্মীদের তৎকালীন হেড কনস্টেবল জয় ভগবান এবং কনস্টেবল মনোজ কুমার বলে চিহ্নিত করা হয় যা জানা যায় টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় ১৪ জুলাই, ২০১৫-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে। ওই প্রতিবেদন অনুসারে, ঘটনাটি ওয়াজিরাবাদ রোডে ভজনপুরা-গোকূলপুরী ক্রসিংয়ে সকাল দশটায় ঘটে।