রিজার্ভ ব্যাংক জানাচ্ছে ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে ভারতে ব্যাংক জালিয়াতি হয়েছে ৭১,৫০০ কোটি টাকার
জালিয়াতি এই পরিমাণে বেড়ে যাওয়ায় ভারতীয় সরকারি ক্ষেত্রের ব্যাঙ্কগুলি বড় রকম ধাক্কা খেয়েছে এবং ইচ্ছা করে ঋণশোধ না করা ব্যক্তিদের এবং অলাভজনক সম্পদ নিয়ে একেবারে নাজেহাল হয়ে পড়েছে।
২০১৮-১৯ আর্থিক বর্ষে মোট ৬ হাজার ৮০০টি ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনা ভারতে ঘটেছে, যার ফলে মোট ৭১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গলে গিয়েছে বলে আরটিআই সূত্রে জানা গেছে।
২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে এই জালিয়াতির পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা, অর্থাৎ এক বছরে ৭৪ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে।
ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারে ব্যাংক জালিয়াতির সংজ্ঞা নিম্নরূপঃ
১) তহবিল তছরূপ কিংবা বিশ্বাসভঙ্গ
২) সই জাল করে টাকা তোলা, হিসাবের গরমিল করে কিংবা ভুয়ো আমানত খুলে সম্পত্তির রূপান্তর ঘটানো
৩) ঘুষ বা উতকোচের বিনিময়ে বেআইনি ঋণ-সুবিধা দেওয়া
৪) নগদে গরমিল ঘটানো
৫) প্রতারণা করা কিংবা জাল করা
৬) বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ে অনিয়ম
৭) এ ছাড়া অন্য যে-কোনও ধরনের জালিয়াতি বা প্রতারণা
সংবাদসংস্থা পিটিআই-এর এক সাংবাদিকের আরটিআই মারফত জিজ্ঞাসার উত্তরে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া উপরোক্ত তথ্যগুলি জানিয়েছে।
২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ যখন ক্ষমতাসীন হয়, তখন ব্যাংক জালিয়াতির পরিমাণ ছিল ১৯ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা। এর অর্থ ৫ বছরে এই জালিয়াতির পরিমাণ ২৬৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০১৭-১৮র তুলনায় ১৮-১৯-এর জালিয়াতির বৃদ্ধির শতাংশ অবশ্য খুব বেশি নয়—১৫ শতাংশ।
মামলা-পিছু জালিয়াতির গড় অঙ্ক ১৭-১৮য় যেখানে ছিল ৭ কোটি টাকা, ১৮-১৯-এ সেখানে সাড়ে ১০ কোটি টাকা হয়েছে।
রিজার্ভ ব্যাংক প্রকাশিত এই পরিসংখ্যান ভারতীয় ব্যাংকিং ব্যবস্থার এক উদ্বেগজনক ছবিই তুলে ধরছে। গত কয়েক বছরে ভারতীয় সরকারি ক্ষেত্রের ব্যাংকগুলি ক্রমাগত নীরব মোদি কিংবা বিজয় মাল্যর মতো ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে বকেয়া ঋণের কিস্তি বা প্রাপ্য সুদ উদ্ধারের মরিয়া চেষ্টায় প্রচুর ঘাম ঝরিয়েছে। নিজের পায়ে দাঁড়াবার জন্য তাদের প্রয়াস এই ধরনের জালিয়াতদের কারণে জোরালো ধাক্কা খেয়েছে।