বেঙ্গালুরুর মোদী মসজিদের নাম মোটেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর নাম অনুসারে নয়
মোদী মসজিদ আসলে ১৭০বছর আগে তৈরি হয়েছিল হজরতমোদী আব্দুল গফুর নামে এক ধনী দাতার নাম অনুসারে
বেঙ্গালুরুর মোদী মসজিদের একটি ছবি টুইটারে ভাইরাল হয়েছে। তাতে মিথ্যে দাবি করা হয়েছে যে মসজিদটির নাম প্রধানমন্ত্রী মোদীর নাম অনুসারে দেওয়া হয়েছে।
টুইটটি ১৩০০-র বেশি বার লাইক করা হয়েছে। এই টুইটটিতে দুটি সম্পূর্ণ আলাদা ঘটনার ছবি একসঙ্গে প্রচার করা হচ্ছে। একটি ছবি মোদী মসজিদের সাইন বোর্ডের, এবং অন্যটি মসজিদের ভিতরে ঝোলানো একটি ফ্লেক্সের ছবি,যাতে নরেন্দ্র মোদীকে একটি মুসলিম সমাবেশে দেখা যাচ্ছে।
মাধব নামে এক টুইট হ্যান্ডেল থেকে এই ছবিটি শেয়ার করা হয়েছে। সঙ্গে লেখা হয়েছে, “বেঙ্গালুরুর মুসলিমরা মসজিদের নাম রেখেছেন নরেন্দ্র মোদীজির নামে। এটা জেনে কতজন আত্মহত্যা করবেন, জানিনা”।
আরকাইভ ডভার্সনের জন্য এখানে ক্লিক করুন।
তথ্য যাচাই
‘মোদী মসজিদ বেঙ্গালুরু’ এই শব্দগুলি দিয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করে বুম ইউটিউবে একটি ভিডিও দেখতে পায়। নতুন করে তৈরি করার পর বেঙ্গালুরুর মোদী মসজিদের দ্বারোদ্ঘাটন অনুষ্ঠান ভিডিওটিতে দেখানো হয়েছে।
বেঙ্গালুরুর মোদী মসজিদের নেপথ্য কাহিনী
ভিডিওটিতে দেখা যায় মোদীম সজিদের প্রেসিডেন্ট মৌলানা সৈয়দ আলতাফ আহমেদ জানাচ্ছেন যে মোদী মসজিদ তৈরি হয় ১৭০ বছর আগে। হজরত মোদী আব্দুল গফুর নামে এক ধনী দাতার নাম অনুসারে এই মসজিদের নাম রাখা হয়। তিনি জানান, “মোদী মসজিদ ১৭০ বছরের পুরানো। হজরত মোদী আব্দুল গফুর এই মসজিদ তৈরির জন্য অর্থ দান করেন। সেই সময় মাত্র ৬০ থেকে ৭০ জন মানুষ এখানে নমাজ পড়তে পারতেন”। আহমেদ আরও জানান যে হজরত মোদী আব্দুল গফুরকে ‘মোদী’ উপাধি দিয়েছিল তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার।
মসজিদটি সাম্প্রতিক সংস্কার করা হয়েছে।
বুম দেখতে পায় যে দ্বিতীয় ছবিটি, যেটিকে বেঙ্গালুরুর মোদী মসজিদের ভিতরের ছবি বলে শেয়ার করা হয়েছে, সেটি আসলে ইন্দোরের সইফি নগর মসজিদের ছবি।
ভাইরাল হওয়া ভুয়ো টুইটের একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মসজিদের একটি হলঘরের একতলার প্যারাপেট থেকে একটি ফ্লেক্স ঝুলছে। তাতে যে ছবিটি রয়েছে, তাতে সৈদানা এবং প্রধানমন্ত্রীকে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে।
বুম দাউদি ভোরা সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছে, যাঁরা সইফি নগর মসজিদে ওই দিনগুলিতে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা ওই হলঘরটির অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত করে জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত বছর সেপ্টেম্বরে ডঃ সৈদানা মফাদল সৈফুদ্দিন-এর সঙ্গে ইন্দোরে দেখা করেন। ইন্দোরের বাসিন্দা ডঃ সৈদানা মফাদল সৈফুদ্দিন একজন ইসলামিক স্কলার।
প্রধানমন্ত্রী এই সাক্ষাৎকার বিষয়ে টুইট করেন এবং জানান, “ডঃ সৈদানা মফাদল সৈফুদ্দিন –এর সঙ্গে দেখা হওয়া সবসময়ই খুব আনন্দের। তিনি একজন সন্ন্যাসী এবং জ্ঞানী মানুষ। জাতির নির্মাণে তাঁর ভূমিকা প্রশংসনীয়। বিভিন্ন সমাজসেবামুলক কাজে তিনি সবসময় অগ্রণী ভূমিকা নেন”।
নরেন্দ্র মোদী অন্য একটি টুইটে একটি ভিডিও শেয়ার করেন এবং জানান, “ইন্দোরে ইমাম হোসেন অন্তিম যাত্রার পর আশারা মুবারকা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলাম এবং সেখানকার কিছু মুহূর্তের ছবি এখানে দেওয়া হল”।