সত্যিই কি কুয়েতে অতিরিক্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে গাড়ি গলে যাচ্ছে? একটি তথ্য যাচাই
বুম অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ছবিগুলি পুরানো এবং ছবিতে দেখানো জিনিসগুলোর গলে যাওয়ার কারণ কুয়েতের আবহাওয়া নয়।

বিভ্রান্তিকর দাবির সঙ্গে গাড়ির বাম্পার এবং ট্রাফিক সিগনালের লাইট গলে যাওয়ার কিছু পরস্পর সম্পর্কহীন ছবি শেয়ার করা হয়েছে। ওই ছবিগুলিতে দাবি করা হয়েছে যে কুয়েতে প্রবল তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে জিনিসপত্র গলে যাচ্ছে।
বুম দেখেছে যে এই ছবিগুলির মধ্যে একটি অ্যারিজোনার এক কন্সট্রাকশন সাইটের ছবি, যেখানে আগুন ধরে গিয়েছিল এবং অন্যটি কুয়েতে একটি গাড়ি দুর্ঘটনার পর ট্রাফিক লাইটে আগুন ধরে যাওয়ার ছবি।

ইমেজগুলির সঙ্গে ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে, “শনিবার কুয়েতে বিশ্বের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল।আল কাবাস সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী ওইদিন প্রত্যক্ষ দিবালোকে কুয়েতের তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস-এ।”
আমরা ফেসবুকে সার্চ করে দেখতে পাই, এই একই ক্যাপশনের সঙ্গে ছবিটি শেয়ার করা হয়েছে।

পোস্টটি এখানে দেখা যাবে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
পোস্টটি বাংলাতেও ভাইরাল হয়েছে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
একটি সংবাদ প্রতিবেদন থেকে এই ক্যাপশনটি নেওয়া হয়েছে
ক্যাপশনটির গুগল সার্চ করে আমরা গালফ নিউজের ১২ই জুন ২০১৯-র একটি প্রতিবেদন দেখতে পাই। তাপপ্রবাহের ফলে কুয়েত এবং সৌদি আরবে বিশ্বের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকার বিষয়ে ছিল সেই প্রতিবেদনটি।

গলে যাওয়া গাড়ির ছবি

রুশ সার্চ ইঞ্জিন ইয়ানডেক্স-এর সাহায্যে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বুম টাকসন নিউজ নাউ-এর একটি সংবাদ প্রতিবেদন দেখতে পায়।
ওই প্রতিবেদন অনুসারে এই ছবিটি আসলে অ্যারিজোনার টাকসনের। সেখানে২০১৮-র ১৯ জুন একটি কন্সট্রাকশন সাইটে আগুন লাগার ফলে কাছাকাছি পার্ক করা প্রায় এক ডজন গাড়ি পুড়ে যায়।
ফেসবুক-হোয়াসটঅ্যাপে ভাইরাল হওয়া পোস্টে যা দাবি করা হয়েছে, অর্থাৎ ছবিতে দেখানো গাড়ির বাম্পারগুলো অতিরিক্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে গলে গিয়েছে, সেটা সত্যি নয়। ওগুলো গলে গেছে আগুন লাগার ফলে।
ট্রাফিক সিগনালের ছবি

ট্রাফিক লাইটের ছবিটি অবশ্য কুয়েতেরই, কিন্তু তা আবহাওয়ার কারণে গলে যায়নি।
ফ্যাক্ট চেকিং ওয়েবসাইট স্নোপস-এ প্রকাশিত ২০১৭-র অগস্টের একটি প্রতিবেদন-এ লেখা হয়েছিল, ২০১৩-য় দুর্ঘটনার ফলে একটি গাড়ি ট্রাফিক সিগনালে ধাক্কা মারে এবং ট্রাফিক সিগনালে আগুন লেগে ট্রাফিক লাইট গলে যায়।
নীচে দেখানো ২০১৩-র জুলাই-এর ইউটিউব ভিডিওতে দুর্ঘটনার ফলে স্ট্রিট লাইটে আগুন লাগতে দেখা যাচ্ছে।