স্কুলের গ্রীষ্মবকাশ ঘিরে গুজব ও বিভ্রান্তি তুঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায়
ছুটির নির্দেশিকা ঘিরে উৎপত্তি হয় গুজবের। অচিরেই সেই গুজব ধর্মীয় রং নেয়। ফেসবুকে সার্চ করলে এরকম অনেক পোস্ট দেখা যাবে এখানে।
বৃহস্পতিবার ২মে ২০১৯ এক বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে এই বিতর্কের সূত্রপাত। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সমস্ত সরকারী, সরকার পোষিত, সরকারী সাহায্যপ্রাপ্ত, অসরকারী সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ৩ মে থেকে ৩০ জুন ফনি ও দাবদহের কারনে বন্ধ থাকবে। ওই বিজ্ঞপ্তি দেখে অভিভাবক ও শিক্ষকদের একাংশের মধ্যে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়।
বুমের হেল্পলাইন ৭০০৯০৬১১১ এ বুম বাংলার একজন পাঠক এব্যপারে আমাদের বার্তা পাঠান। বার্তাটি নীচে দেওয়া হল।
ছুটির নির্দেশিকা ঘিরে উৎপত্তি হয় গুজবের। অচিরেই সেই গুজব ধর্মীয় রং নেয়। ফেসবুকে সার্চ করলে এরকম অনেক পোস্ট দেখা যাবে এখানে।
এরকম একটি ফেসবুক পোস্টে লেখা হয়েছে, পঃবঙ্গ সরকার স্কুলে ২-মাস ছুটি ঘোষণা করেছে। এতে খুশি হবার কিছু নেই। বরং সবাই গর্জে উঠুন। কারণ ঐ ২-মাসের মধ্যে ১-মাস ছুটি ঈদের যা উল্লেখ করা হয়নি। এটা একটা গভীর ষড়যন্ত্র৷ পশ্চিমবঙ্গকে কাশ্মীর-কেরালা করার চক্রান্ত হয়েছে এবং তা কার্যকর করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে। সময় থাকতে সবাই মিলে নিজের নিজের সাধ্যমতো প্রতিবাদ করুন। পথ দুটো…… (১) লড়াই করা {বাঁচার জন্য} (২) সহ্য করা {বিপন্ন/লুপ্ত হবার জন্য} just "Do or Die" সময় একদমই নাই ৷ ""যত বেশীজনকে সম্ভব মেসেজটি forward করুন" ।
পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
অন্য আরেকটি ভাইরাল পোস্টে দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
পরে শুক্রবার ৩ মে ওই বিজ্ঞপ্তি সংশোধন করে জানানো হয়, রাজ্যের সমস্ত সরকারী, সরকার পোষিত, সরকারী সাহায্যপ্রাপ্ত, অসরকারী সাহায্যপ্রাপ্ত প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের স্কুলে তীব্র সাইক্লোনের সম্ভাবনার কারনে ৩ মে ও ৪ মে বন্ধ থাকবে। ওই বিজ্ঞপিতে নির্দেশ দেওয়া হয়, ৬ মে থেকে ২০ মে তীব্র দাবদহের কারনে বিদ্যালয়গুলিতে গ্রীষ্মবকাশ চলবে।
ওই বিজ্ঞপিতে আরও বলা হয়, ৩০ জুন পর্যন্ত প্রতাশ্যিত চরম আবহাওয়ার কারনে বিদ্যালয়গুলি বন্ধ থাকবে।
উল্লেখ্য, ৭ই মে থেকে শুরু হওয়া মুসলিমদের উপবাসের মাস রমজান অন্তে ঈদ নির্ধারিত ৫জুন। অনেক সময় চন্দ্র মাসের হিসেবে ঈদের দিনের তারতম্য ঘটে। ঈদ উপলক্ষ্যে রাজ্যের বরাদ্দ সরকারী ছুটি দুদিন। চন্দ্রমাস বা সূর্যসিদ্ধান্ত কিংবা বাক সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা ক্যলেন্ডার অনুযায়ী বাঙালি উৎসবের দিনক্ষনের তারতম্য ঘটে। আরবি চন্দ্রমাস রমজান ও ঈদ উৎসবের হেরফের হয় প্রতিবছর। এবছরে গ্রীষ্মবকাশের ছুটির সঙ্গে এর যোগ নিছকই কাকতালীয়।
রাজ্যের মাদ্রাসা বোর্ডের নিয়ন্ত্রনাধীন স্কুলের কর্মদিবস বা ছুটির নিয়ম এবং রাজ্য সারকারের ছুটির নিয়ম একই। আলাদা করে রোমজান বা ঈদ পালনের জন্য কোনও অতিরিক্ত ছুটি বরাদ্দ থাকেনা।
বুমের তরফে মাদ্রাসা শিক্ষা পর্যদ সভাপতি আবু তাহের কামরুদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। পর্যদের ওয়েবসাইটের বিজ্ঞপ্তি সংশোধন করা হয়েছে বলে ওয়েবসাইট দেখতে বলেন।
গত বছর দাবদহের কারনে ২০ জুন থেকে ৩০ জুন ছুটি বর্ধিত করা হয়। ২০১২ সালে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি জারি করে গরমের ছুটির মেয়াদ ১৭ জুন ও ২০১৪ সালে ২৫ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল।