বার্থডে বাম্পস্’এ কী একটি ছেলে মারা গিয়েছিল? না, সে বেঁচে আছে এবং চাঙ্গা আছে
একটি ভিডিওতে কয়েকটি কিশোরকে তাদের এক বন্ধুকে বার্থডে বাম্পস্ দিতে দেখা যাচ্ছে। সেটি এই বলে ভাইরাল হয়েছে যে, মারের ফলে ছেলেটি মারা যায়।
একটি ছেলেকে তার বন্ধুরা জন্মদিনের দিন ‘বার্থডে বাম্পস’-এর নামে কিল চড় মারলে ছেলেটি মারা যায়। এমনই একটি দাবি সমেত ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। কিন্তু দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যে।
‘বার্থডে বাম্পস্’ হল এমন এক রীতি যেখানে জন্মদিনের দিন বন্ধুরা মজা করে যার জন্মদিন তাকে কিল চড় মারে।
ভাইরাল ভিডিওটি এমনকি বীরেন্দ্র সেহবাগের মতো ক্রিকেটারও ট্যুইট করেন। পরে অবশ্য উনি সেটি ডিলিট করে দেন।
ভিডিওটির সঙ্গে দেওয়া ক্যাপশনে বলা হয়েছে, “আইএমএম’এ একটি ছাত্র মারা যায় দু মাস আগে। কারণ, তার জন্মদিনে তার বন্ধুরা ‘বি-ডে বাম্পস’ লাগায়। পরের দিন তার পেটে যন্ত্রণা শুরু হয়। অগ্ন্যাশয়ে আঘাত লেগে ছিল। অপারেশন হয়। পরে মারা যায়। দয়া করে বাচ্চাদের বার্থডে বাম্পস দিতে বারন করুন।”
ভিডিওটি ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপেও ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে মাটিতে পড়ে আছে একটি ছেলে। তাকে মারছে এক দল যুবক। দেখা যাচ্ছে পাশে একটি টেবিলে দুটি কেক রাখা আছে। ভিডিওর শেষের দিকে, দলটি ছেলেটিকে তুলে টেবিলের দিকে নিয়ে যায়। ছেলেটিকে কেক কাটতে দেখা যায় না। কিন্তু ক্যাপশনে বলা হয় সেদিন তার জন্মদিন ছিল। পোস্টটিতে দাবি করা হয় যে, তার অগ্ন্যাশয়ে চোট লাগার ফলে ছেলেটি পরের দিন মারা যায়।
তথ্য যাচাই
এ বিষয়ে বুম আরও তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করে। কিন্তু মারের পর ছেলেটির মৃত্যুর খবরই কেবল পাওয়া যায় বিভিন্ন প্রতিবেদনে।
কিন্তু ‘ইন্ডিয়া টুডে’ তথ্য যাচাই করে জানায় ছেলেটি বেঁচে আছে।
যাঁরা তথ্য যাচাই করছিলেন, তাঁরা বীরেন্দ্র সেহবাগের টুইটার হ্যান্ডেলে, যেখান থেকে উনি ভিডিওটি পোস্ট করেছিলেন, সেখানে একটি মন্তব্য লক্ষ করেন। সেহবাগ টুইটটি তুলে ফেললেও, রঘুরাজ নামের এক ব্যক্তি মন্তব্যটি করেন। তিনি দাবি করেন যে, বার্থডে বাম্পসের শিকার যে ছেলেটি, উনি তার বন্ধু এবং খবরটি ১০০% মিথ্যে।
আসল সত্যটা কী
বুম নিজের মতো অনুসন্ধান করে। তাতে জানতে পারে যে, ওই দলে যারা ছিল তারা সবাই ডাক্তারির ছাত্র এবং ভিডিওটি তোলা হয় কিরগিজস্তানে, ভারতে নয়।
বুম রঘুরাজের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে। উনি জানান যে ঘটনাটি ঘটে ডিসেম্বর ২৮, ২০১৮ সালে। যে ছেলেটি সেদিন মার খেয়েছিল, তার নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন রঘুরাজ। উনি বলেন, ওই ধরনের পার্টিতে বার্থডে বাম্পস একটি প্রচলিত রীতি। আর সে রাতেও তার কোনও ব্যতিক্রম হয়নি। “তবে ভিডিওটি দেখলে মনে হবে যে, সব কিছু বোধহয় হাতের বাইরে চলে গেয়েছিল। কিন্তু তা আদৌ হয়নি। সে খুব ভাল আছে।”
রঘুরাজ আরও বলেন যে, ছেলেটি ডাক্তারির প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং রঘুরাজের জুনিয়র।
ওই ঘটনার একান্ত সাক্ষী এরকম দুজন ব্যক্তির সঙ্গেও বুম যোগাযোগ করে। দীপক আঞ্জানা ও তাঁর রুমমেট অমিত সিং পরিহারও বলেন যে, ভাইরাল ভিডিওটিতে যে ছেলেটিকে দেখা গেছে সে সম্পূর্ণ সুস্থ আছে।