মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতিতে মৃত রোগীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন?
ভাইরাল হওয়া ফেসবুক পোস্টের ছবির সঙ্গে চিকিৎসা গাফিলতিতে মৃত মহম্মাদ সইদের মুখের কোনও মিল নেই।
ছবি সহ একটি ভাইরাল হওয়া ফেসবুক পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ছবিটিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের সঙ্গে মহম্মাদ সইদ রয়েছেন; চিকিৎসার গাফিলতিতে এন আর এস মেডিকেল কলেজে ১০ জুন ২০১৯ ৭৫ বয়সী মহম্মাদ সইদ মারা যান।
ছবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়কে শুভ্র দাড়ি মুখের এক চশমা পরিহিত ব্যক্তির সঙ্গে হাত মেলাতে দেখা যাচ্ছে। উর্দু ও ইংরেজি শব্দের দৃশ্যমানতা বিশ্লেষণ করে সম্ভবত 'কলকাতা খিলাফাত কমিটি' লেখা রয়েছে পিছনের ব্যানারে।
পোস্টটিতে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, ''এনার মৃত্যুতেই দুশো লোক এসেছিল ডাক্তার পেটাতে। এতক্ষণে সমস্ত ঘটনার আসল কারন বোঝা গেল। ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়েছে।''
এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পোস্টটি লাইক করেছেন ২৫১ জন ও শেয়ার করেছেন ২৪৬ জন। পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম ওই ছবিটি খুঁজে পেয়েছে। ৪ জুন ২০১৯ রেড রোডে ইদের নামাজের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের শুভেচ্ছা বিনিময়ের ছবি এটি। তিনি ওই ছবি টুইটার ও ফেসবুকে পোস্ট করেন।
ছবিটি এনআরএসে ডাক্তারদের গাফিলতিতে মৃত মহম্মাদ সইদের ছবি নয়। সইদের ছবি দেখা যাবে দ্য টেলিগ্রাফ-এর এই প্রতিবেদনে। ছবি দুটি তুলনা করা হল। ভ্রু ও গালের মধ্য তুলনা তারতম্য দেখা যায়। সইদের ভ্রু সাদা ও গাল চাপা। অপরদিকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হাত মেলানো ব্যক্তিটির ভ্রু স্পষ্ট নয় তার গাল স্থুল। কখনও তার বয়স ৭৫ বছর বলে মনে হয়না।
১০ জুন ২০১৯ কলকাতার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা গাফিলতিতে ৭৫ বছর বয়সী মহম্মাদ সইদ মারা যান। ৫:৪৫ নাগাদ কয়েকজন ইন্টার্নের সঙ্গে রোগীর বাড়ির লোকজনের বচসা শুরু হয়। দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকায়নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডাক্তারের বয়ান অনুযায়ী, ১০:৪৫ নাগাদ ট্রাক ভর্তি ২০০ জনের একদল বহিরাগত ডাক্তারদের ওপর চড়াও হয়। সেসময় পাথরের আঘাতে মাথার খুলিতে গুরুতর চোট পান জুনিয়র ডাক্তার পরিবহ মুখোপাধ্যায় ও যশ টেকওয়ানি। ডাক্তাররাও রুগী পক্ষের লোকজনদের পাল্টা মার দেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে সরকারী হাসপাতালে চলে জুনিয়র ডাক্তারদের সুপ্তাহব্যাপী কর্মবিরতি। ডাক্তারদের দাবি মত, জুনিয়র ডাক্তার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের মধ্যে বৈঠকের পর অচলাবস্থার নিরসন হয়।