স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কি বিষাক্ত চিনা বাজি কেনা সম্পর্কে কোনও হুঁশিয়ারি দিয়েছে?
একটি বার্তায় ক্ষতিকর চিনা আতসবাজি বয়কট করার আহ্বান জানানো হয়েছে, যে এই বাজিগুলি নাকি পাকিস্তানের তরফে উৎসবের মরশুমে ভারতীয় বাজি বাজার ছেয়ে ফেলেছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নামে একটি পুরনো ও ভুয়ো বার্তা নতুন করে চতুর্দিকে ছড়ানো হচ্ছে, যাতে নাকি ভারতীয়দের পক্ষে চিনা আতসবাজি কেনার উপর আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
বার্তাটিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের হয়ে চিন আসন্ন উৎসবের মরসুমে ভারতীয় বাজির বাজার চিনা বাজি দিয়ে ভরিয়ে ফেলবে।
বার্তাটি এমন সময় ছড়ানো হচ্ছে, যখন ভারত অসন্ন এক দীর্ঘ উৎসবের মরসুমে প্রবেশ করতে চলেছে, যা চলবে সেই ডিসেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত।
বার্তাটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে এবং বুম ও তার হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইন নম্বরে (৭৭০০৯০৬১১১) একাধিক জনের কাছ থেকে বিষয়টির সত্যতা জানতে চেয়ে বার্তা পেয়েছে।
বার্তাটি চালানো হচ্ছে জনৈক বিশ্বজিত মুখার্জির নামে, যিনি নাকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পদস্থ তদন্তকারী অফিসার।
বুম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জনসংযোগ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারে, এ ধরনের কোনও বিজ্ঞপ্তি বা নির্দেশনামার কথা তাদের জানা নেই। বুম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সব অফিসারদের নামের তালিকা খতিয়ে দেখেছে, সেখানেও বিশ্বজিত মুখার্জি নামে কোনও অফিসারের উল্লেখ নেই।
বুম “বিশ্বজিত মুখার্জি আতসবাজি” এই শব্দগুলি বসিয়ে খোঁজ লাগাতেই অনেকগুলি নিবন্ধের হদিস পায়, যেগুলির লেখক বিশ্বজিত মুখার্জি, যিনি আতসবাজির দূষণকারী দিক নিয়ে বারবার লিখেছেন এবং যাঁর কোনও-কোনও লেখা ২০০৯ সালের পুরনো। আরও জানতে এখানে, এখানে এবং এখানে ক্লিক করুন।
আসলে বিশ্বজিত মুখার্জি হলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন আইনি আধিকারিক।
বুম তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে বিশ্বজিত বাবু বলেন, তিনি এ ধরনের কোনও বার্তা কখনও পাঠাননি, যদিও সাধারণভাবে আতসবাজির বায়ুদূষণকারী দিক নিয়ে তিনি বহুবার নানা উপলক্ষ্যে বলেছেন বা লিখেছেন।
“আতসবাজি নিয়ে আমি অনেক চিঠি লিখেছি বা বার্তাও নানা সময়ে পাঠিয়েছি, কিন্তু এই বার্তাটি তার মধ্যে পড়ে না”
বিশ্বজিত মুখার্জি বুমকে বলেন।
একই বার্তা অনলাইনে অন্যত্রও পাওয়া গেছে, যা ২০১৭ সালের অক্টোবরের। যার অর্থ, এই পুরনো বার্তাটি ফরোয়ার্ড করা হয়েছে উৎসবের মরসুম আসন্ন হয়ে ওঠায়।
বুম তার নাগালে থাকা প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেখেছে, এই বার্তাটি ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর চলনচিত্রম নামের একটি চ্যাট-সাইটে প্রথম আত্মপ্রকাশ করে। তার চারদিন পরে যেটি আবার রেডিট নামের সোশাল মিডিয়া ওয়েবসাইটে দেখতে পাওয়া যায়।