ছবিটি নিতিন গডকড়ীর কাছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ক্ষমা চাওয়া নয়
বুম দেখে ছবিটি ই-রিক্সা বৈধতা নিয়ে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নিতিন গডকড়ীর সঙ্গে ২০১৪ সালে আলোচনার ঘটনা।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal) ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর (Nitin Gadkari) একটি পুরনো ছবি অনলাইনে ভাইরাল হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, কেজরিওয়াল গডকড়ীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করছেন, এবং গডকড়ী সেই চিঠি পড়ছেন।
বুম দেখে, ছবিটি ২০১৪ সালে তোলা। সেই সময় কেজরিওয়াল ই-রিক্সা বিধিসম্মত করার ব্যাপারে গডকড়ীর সঙ্গে আলোচনা করতে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন।
সম্প্রতি এক মানহানির মামলায়, সুরাটের একটি আদালত কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে দু’বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করলে, তিনি তাঁর সাংসদ পদ হারান। রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার বিরুদ্ধে অরবিন্দ কেজরিওয়াল সোচ্চার হন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই কেজরিওয়াল ও গডকড়ীর ছবিটি শেয়ার করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, রাহুল গান্ধীর ঘটনাকে কেন্দ্র করে কড়া কথা বলার জন্য কেজরিওয়াল গডকড়ীর কছে ক্ষমা চান।
সঞ্জয় তির্থওয়ানি নামের একজন টুইটার ব্যবহারকারী তাঁর যাচাই করা হ্যান্ডেল থেকে ছবিটি শেয়ার করেন। তিনি লেখেন, “এই ছবিতে কেজরিওয়ালের সঙ্গে নিতিন গডকড়ীজিকে দেখা যাচ্ছে! ভাববেন না যে, দিল্লির কোনও ‘রাস্তার পরিকল্পনা’ নিয়ে আলোচনা করতে গেছেন। কেজরিওয়ালজি নিতিন গডকড়ীজির কাছে লিখিতভাবে ‘মাপ’ চাইতে গেছেন। গডকড়ীজি সেই ‘মাপনামা’ পড়ছেন!”
(হিন্দিতে লেখা আসল বার্তা: "नितीन गडकरी" जी है ! अब आप ये ना सोचियेगा कि, केजरीवाल जी दिल्ली के लिए कोई "सड़क परियोजना" पर चर्चा करने गए है ! केजरीवाल जी नितीन गडकरी को लिखित में "माफी" मांगने गए है, गडकरी जी "माफ़ीनामा" पढ़ते हुए !”)
আর্কাইভ দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
আর্কাইভের জন্য এখানে ক্লিক করুন। একই ধরনের টুইট এখানে, এখানে।
একই দাবি ফেসবুকেও ভাইরাল হয়েছে।
একই ধরনের পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম দেখে, ছবিটি পুরনো। সেটি ২০১৪ সালে তোলা হয়। সেই সময়, দিল্লিতে ই-রিক্সা চালু করার বিষয়ে আলোচনা করতে নিতিন গডকড়ীর সঙ্গে দেখা করেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
দেখা যায়, ভাইরাল ছবিটির ওপর গেট্টি ইমেজ লেখা রয়েছে। সেই সূত্র ধরে আমরা প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড দিয়ে ওই স্টক ফটোর ওয়েবসাইটে ভাইরাল ছবিটির সন্ধান করি।
ছবিটির বিবরণে বলা হয়, “১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, আম আদমি পার্টির আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়াল কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও হাইওয়ে মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর সঙ্গে, দিল্লির ট্রান্সপোর্ট ভবনে মিটিং করেন।”
নতুন দিল্লিতে ই-রিক্সা চালু করার ব্যাপারে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর মধ্যে ওই সাক্ষাৎ সংক্রান্ত বেশ কিছু খবর প্রকাশিত হয়। এখানে ও এখানে দেখুন সেগুলি।
ওই সাক্ষাৎ সম্পর্কে অরবিন্দ কেজরিওয়াল টুইট করেন।
নিতিন গডকড়ীও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে তাঁর ওই সাক্ষাতের ছবি টুইট করেন।
এরপর আমরা নিতিন গডকড়ীর কাছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মাপ চাওয়া সম্পর্কে আরও খোঁজ নিতে থাকি। তার ফলে, আমরা দেখি যে, ২০১৮’য় একটি মানহানির মামলায়, কেজরিওয়াল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গডকড়ীর কাছে লিখিত ভাবে মাপ চান।
জানুয়ারি ২০১৪ সালে, কেজরিওয়াল দেশের তথাকথিক সবচেয়ে দুর্নীতিপরায়ন নেতাদের একটি তালিকা প্রকাশ করেন। তার মধ্যে ছিল নিতিন গডকড়ী ও কপিল সিবালের নাম। তাঁর এক বিবৃতিতে, কেজরিওয়াল বলেন, নিতিন গডকড়ী হলেন “দেশের এক অন্যতম দুর্নীতিপরায়ন নেতা”। ওই মন্তব্যের জন্য নিতিন গডকড়ী তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন। তার পরই,কেজরিওয়াল গডকড়ীর কাছে লিখিত ভাবে ক্ষমা চান এবং গডকড়ী তা গ্রহণ করেন।
চিঠিতে কেজরিওয়াল লেখেন, “ব্যক্তিগত ভাবে, আপনার বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। আমি দুঃখিত।”
সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই সময়, কেজরিওয়াল কংগ্রেস নেতা কপিল সিবাল ও অকালি দলের নেতা বিক্রম মাজিথিয়া’র কাছেও ক্ষমা চান।