না, Disha Ravi-র পক্ষে কোর্ট সওয়ালে Akhil Sibbal-কয়েক লক্ষ টাকা নেননি
আইনজীবী অখিল সিব্বল বুমকে বলেন দিশা রবির পক্ষে কোর্টে সাওয়ালের জন্য তিনি কোনও টাকা পারিশ্রমিক নিচ্ছেন না।
সোশাল মিডিয়া পোস্টে মিথ্যে দাবি করা হয়েছে যে, সমাজকর্মী দিশা রবি (Disha Ravi) এক বিরাট অঙ্কের ফি দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কপিল সিব্বলের ছেলে অখিল সিব্বলকে (Akhil Sibbal) তাঁর আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ করেছেন। বলা হচ্ছে, প্রতিবার কোর্টে সওয়াল করার জন্য দিশা রবি তাঁকে ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকা দিচ্ছেন।
বুম অখিল সিব্বলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে উনি বলেন যে, ওই মামলা উনি "প্রো বোনো" লড়ছেন এবং কোনও টাকা নিচ্ছেন না।
'প্রো বোনো' ল্যাটিন শব্দ। তার মানে হল, 'জনসাধারণের ভালর জন্য'।
অ্যাডভোকেট অখিল সিব্বল দিশা রবির হয়ে দিল্লি হাইকোর্টে লড়ছেন। কোর্টের কাছে দিশা আবেদন করেছেন যে, তাঁর গ্রেফতারিকে চটকদার খবর হিসেবে পরিবেশন করা থেকে মিডিয়াকে যেন বিরত থাকার নির্দেশ দেয় আদালত। বেশ কয়েকটি মিডিয়া সংস্থা তাঁর ব্যক্তিগত কথোপকথন প্রকাশ করে দিয়েছে। ১৮ ফেব্রুয়ারি, নিউজ-১৮, ইন্ডিয়া টুডে, টাইমস নাও, ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং স্ট্যানডার্ড অথরিটি (এনবিএসএ), তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক এবং দিল্লি পুলিশের কাছে নোটিশ পাঠায় দিল্লি হাইকোর্ট। তাতে বলা হয়, হোয়াটসঅ্যাপে যা আছে তা সমেত দিশার ব্যক্তিগত কথোপকথন বা সেগুলির অংশবিশেষ মিডিয়া যেন প্রকাশ না করে। অন্যথায়, তাঁর সুবিচার পাওয়ার অধিকারকে খর্ব করা হবে।
দিশা রবিকে দিল্লির এক কোর্ট ২৩ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার জামিন দিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে তিহার জেল থেকে ছাড়া পান তিনি। পরিবেশ কর্মী দিশা রবিকে দিল্লি পুলিশ ১৩ ফেব্রুয়ারি বেঙ্গালুরুতে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে একটি 'টুলকিট' সম্পাদনা করেন। পুলিশ দাবি করছে যে, ২৬ জানুয়ারি যাঁরা দিল্লির লালকেল্লায় হাঙ্গামা করে ছিলেন, তাঁরা 'হয়ত' ওই 'টুলকিট' পড়েছিলেন। আন্তর্জাতিক পরিবেশ কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ভুল করে ওই টুলকিটটি প্রকাশ করে ফেলেন।
কলামচি অভিজিৎ আইয়ার-মিত্র আইয়ার টুইট করে বলেন, "দিশা রবি অখিল সিব্বলকে নিয়োগ করেছেন। তার মানে, প্রতি হাজিরায় ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা। এবার অঙ্কটা করে নিন।"
অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারীও ওই মিথ্যে দবি শেয়ার করেন। সেই ধরনের পোস্ট নীচে দেখা যাবে। সেগুলি আর্কাইভ করা আছে দেখা যাবে এখানে ও এখানে।
একই দাবি সহ কটি মতামত ভিত্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে দ্য ফাস্ট্রেড ইন্ডিয়ান ওয়েবসাইট যা নিজেদের বর্ণনায় দাবি করে, "তৈরি হয়েছে মধ্য-দক্ষিণ পন্থার ন্যারিটিভ দিতে"। যদিও, ওয়েবাসাইটটি প্রতিবেদনের শেষ বাক্যে লেখে, "অখিল সিব্বাল স্পষ্ট করুন এবং বলুন যে তিনি তার (দিশা) এই মামলা প্রো বোনো লড়ছেন কিনা।"
আমি কোনও পারিশ্রমিক নিইনি: অখিল সিব্বল
বুম দেখে, পরিবেশ কর্মী দিশা রবির হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন আইনজীবী অভিনব শেখরি, বৃন্দা ভান্ডারি, সঞ্জনা শ্রীকুমার, সিদ্ধার্থ আগরওয়াল, কৃষ্ণেশ ভগত ও অখিল সিব্বল। আমরা অখিল সিবালের সঙ্গে যোগাযোগ করলে উনি বলেন, "আমি মামলাটা প্রো বোনো লড়ছি। আমি কোনও ফি নিচ্ছি না। টুইটগুলি ভুল।"
সিব্বল আরও বলেন, "আমি মামলাটা হাতে নিই কারণ আমি মনে করছি, পুলিশি তদন্ত চলা কালে একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন সামনে এনেছে এই কেস। এর মধ্যে আছে তাঁর সম্মান, গোপনীয়তা, মর্যাদা, এবং সুবিচারের অধিকার। সেই সঙ্গে আছে পুলিশের তথ্য ফাঁস করা আর মিডিয়ার দ্বারা বিচারের প্রশ্নগুলিও।"
আমরা দিশা রবির অন্য এক আইনজীবী, সঞ্জনা শ্রীকুমারের সঙ্গেও যোগাযোগ করি। উনিও বলেন, "আমরাও কেসটা প্রো বোনো লড়ছি। কোনও টাকা দেওয়া-নেওয়া হয়নি।"
অ্যাডভোকেট বৃন্দা ভান্ডারিও একই কথা বলেন।
আরও পড়ুন: প্যারাসিটামল পি-৫০০ বড়ি থেকে ম্যাচাপু ভাইরাস সংক্রমণ? একটি তথ্য যাচাই