ফ্যাক্ট চেক
উত্তরাখণ্ড বিপর্যয়ে RSS এর ত্রাণ কার্য বলে ২০১৩ সালের ছবি ভাইরাল
বুম দেখে ছবিটি ২০১৩ সালে উত্তরাখণ্ডে বিপর্যয়ের পর RSS কর্মীদের ত্রাণ বন্টনের।
২০১৩-য়, উত্তরাখণ্ডে বন্যার (2013 Uttarakhand Disaster) সময় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (Rashtriya Swayamsevak Sangh - RSS) স্বেচ্ছাসেবীদের ত্রাণ সামগ্রী বয়ে নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে একটি ছবিতে। সেটি এখন এই মিথ্যে দাবি সমেত ভাইরাল হয়েছে যে, উত্তরাখণ্ডে সাম্প্রতিক হিমবাহ ধসে (Glacier Burst) পড়ার ঘটনার পর, ওই সংগঠনের কর্মীরা ত্রাণের কাজে নেমে পড়েছেন।
উত্তরাখণ্ডের চামোলী (Chamoli) জেলায় হিমবাহ ভেঙ্গে পড়লে, নদীতে যে হড়পা বান (Flash Flood) সৃষ্টি হয়, তার ফলে ১৭০ জন নিখোঁজ হয়েছেন। এ পর্যন্ত ৩৪ টি দেহ উদ্ধার করা গেছে। জল, পাথর আর কাদা প্রচণ্ড গতিতে নেমে আসে। তার ফলে ভেঙ্গে যায় ব্রিজ আর রাস্তা। ওই বিপর্যয়ে দু'টি জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের (Hydroelectric Projects) ব্যাপক ক্ষতি হয়। মাটি আর পাথরে ভরে গিয়ে বন্ধ হয়ে যায় তপোবন টানেল। বিভিন্ন জায়গায় উদ্ধার কাজ চলছে।
ছবিতে চারজনকে দেখা যাচ্ছে। তাঁদের জামাকাপড় দেখে মনে হয় তাঁরা আরএসএস-এর পোশাক পরে আছেন। বস্তা ভর্তি সামগ্রী নিয়ে পাহাড়ি পথ ধরে চলেছেন তাঁরা।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়, "হিমবাহ ধসে পড়ার মর্মান্তিক ঘটনার পর, আরএসএস-এর স্বেচ্ছাসেবীরা মানুষকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন।"
ওই পোস্টগুলির আর্কাইভ এখানে ও এখানে দেখা যাবে।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়, "হিমবাহ ধসে পড়ার মর্মান্তিক ঘটনার পর, আরএসএস-এর স্বেচ্ছাসেবীরা মানুষকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন।"
ওই পোস্টগুলির আর্কাইভ এখানে ও এখানে দেখা যাবে।
ওই একই ছবি টুইটারেও ভাইরাল হয়েছে। তার সঙ্গে হিন্দিতে লেখা ক্যাপশনে বলা হয়, "চামোলী – তপোবনের অনেক গ্রামে, নারী, পুরুষ ও শিশুরা খোলা আকাশের নীচে রয়েছেন। ব্রিজটি ভেসে গেছে...রাস্তাঘাট অপরিচিত...এই পরিস্থিতিতে এই ব্যক্তিরা কারা, যাঁরা বস্তা ভর্তি খাবার নিয়ে যাচ্ছেন? দেশের প্রতি নিঃস্বার্থ আনুগত্যের এ এক চমৎকার দৃষ্টান্ত...কোনও দেখনদারি নেই।"
(হিন্দিবয়ান: चमोली - तपोवन के कई गाँवो में सैकड़ों स्त्री-पुरुष-बच्चे खुले में पड़े हैं। पुल बह चुका है... सड़कों का नामोनिशान नहीं... ऐसे में खाने के सामान से भरी बोरियाँ कंधे पर उठाए यह कौन लोग है ? नमन...वंदन राष्ट्र के प्रति ऐसी निश्वार्थ निष्ठा पर....कोई दिखावा नही।")
(হিন্দিবয়ান: चमोली - तपोवन के कई गाँवो में सैकड़ों स्त्री-पुरुष-बच्चे खुले में पड़े हैं। पुल बह चुका है... सड़कों का नामोनिशान नहीं... ऐसे में खाने के सामान से भरी बोरियाँ कंधे पर उठाए यह कौन लोग है ? नमन...वंदन राष्ट्र के प्रति ऐसी निश्वार्थ निष्ठा पर....कोई दिखावा नही।")
আর্কাইভ দেখুন এখানে।
একটি বিভ্রান্তিকর টুইটসহ অন্য একজন ব্যবহারকারী আরও কয়েকটি ছবি সমেত এই ছবিটি শেয়ার করেছেন। টুইটটির আর্কাইভ দেখুন এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে। তার ফলে, ২০১৩ তে প্রকাশিত 'সংবাদ' সংগঠনের একটি লেখা নজরে আসে। তাতে ওই একই ছবি ব্যবহার করা হয়। লেখাটির শিরোনাম ছিল এই রকম: '১২তম দিন: উত্তরাখণ্ডে আরএসএস-এর ত্রাণের কাজ – একটি সংক্ষিপ্ত রিপোর্ট; আরও সাহায্যকারী হাতের প্রয়োজন'।ওই রিপোর্টে বলা হয়, বিপর্যয়ের পর প্রায় ৫,০০০ আরএসএস স্বেচ্ছাসেবী ১৫ টি ত্রাণ কেন্দ্র চালান। সেগুলির মধ্যে ছিল খাদ্য, চিকিৎসা, উদ্ধার কাজে সহায়তা, নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত করা, ও যাত্রীদের আত্মীয়দের জন্য হেল্পলাইন চালানোর মতো কেন্দ্র।
'আরএসএস হেলপিং উত্তরাখণ্ড ফ্লাড এরিয়াজ' (উত্তরাখণ্ডের বন্যাকবলিত এলাকাগুলিতে আরএসএস সাহায্য করছে) – শব্দগুলি দিয়ে আমরা কি-ওয়ার্ড সার্চ করি। তার ফলে, ২০১৩ তে উত্তরাখণ্ডের বন্যায়, আরএসএস কর্মীদের ত্রাণের কাজ চালানোর ওপর বেশ কয়েকটি রিপোর্ট সামনে আসে।
বন্যার সময় আরএসএস স্বয়মসেবকদের ত্রাণ কাজের ওপর 'এফডকুমেন্ট'-এ রাখা একটি রিপোর্টে আমরা ওই একই ছবি দেখতে পাই। তাতে বলা হয়, ভারতীয় সেনাবাহিনীর পরই স্বয়মসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) ছিল সবচেয়ে সুশৃঙ্খল দল।
তাছাড়া, ২০১৩-র উত্তরাখণ্ডের বন্যায় তাদের কাজ সংক্রান্ত বেশ কিছু ছবি আরএসএস নিজেদের ওয়েবসাইটে শেয়ার করে।
কিন্তু উত্তরাখণ্ডে হিমবাহ ভেঙ্গে যে বিপর্যয় সম্প্রতি ঘটেছে, সেই বিপর্যয়ে আরএসএস ত্রাণ পৌঁছনর কাজ করছে, এমন কোনও খবর এখনও পাওয়া যায়নি। তবে এটা নিশ্চিত যে, ভাইরাল ছবিটি আট বছর আগে উত্তরাখণ্ডে বন্যার সময় তোলা হয়।
কিন্তু উত্তরাখণ্ডে হিমবাহ ভেঙ্গে যে বিপর্যয় সম্প্রতি ঘটেছে, সেই বিপর্যয়ে আরএসএস ত্রাণ পৌঁছনর কাজ করছে, এমন কোনও খবর এখনও পাওয়া যায়নি। তবে এটা নিশ্চিত যে, ভাইরাল ছবিটি আট বছর আগে উত্তরাখণ্ডে বন্যার সময় তোলা হয়।
Claim : ছবি দেখায় উত্তরাখণ্ডে সাম্প্রতিক হিমবাহ ধস বিপর্যয়ের পর RSS কর্মীরা ত্রানের কাজ করছেন
Claimed By : Twitter & Facebook Users
Fact Check : False
Next Story