দুবাইয়ের আল-মিনহাদে ‘হিন্দ সিটি’ নামকরণে ভারতের সম্পর্ক নেই
বুমকে দুবাইয়ের মিডিয়া অফিস জানায় ‘হিন্দ সিটি’ রাখার সঙ্গে অন্য কোনও দেশের সম্পর্ক নেই।
দুবাই-এর (Dubai) আল-মিনহাদ জেলার নাম ‘হিন্দ সিটি’ (Hind City) রাখা হয়েছে ভারতকে এবং মানবতায় হিন্দুদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ, এমন একটি ভুয়ো ও বিভ্রান্তিকর বার্তা সোশাল মিডিয়ায় ঘুরছে।
বুম দুবাই সরকারের মিডিয়া দফতরে এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে তাদের স্পষ্ট জবাব, এই নামকরণের সঙ্গে অন্য কোনও দেশের কোনও সম্পর্ক নেই।
মেঘ আপডেট্স নামে একটি দক্ষিণপন্থী টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে এই ভুয়ো খবরটি ছড়ানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই টুইটটি এ কোটি ১০ লক্ষ লোক দেখে ফেলেছে।
টুইট পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
উত্তরাখণ্ডের সাংসদ এবং বিজেপির মুখপাত্র অনিল বুলানির দাবি—এটা নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের ক্রমবর্ধমান গুরুত্বেরই একটা প্রমাণ।
চলতি সপ্তাহের শুরুতেই ভারতের মূল ধারার বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম রিপোর্ট করে যে, দুবাইয়ের শাসক এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রধানমন্ত্রী ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট শেখ মহম্মদ বিন রসিদ আল-মখদুম ২৯জানুয়ারি, ২০২৩ তারিখে ‘আল মিনহাদ’ জনপদের নাম পাল্টে ‘হিন্দ সিটি’ করেছেন। হিন্দ-১, হিন্দ-২, হিন্দ-৩ এবং হিন্দ-৪-- এই চারটি এলাকায় বিভক্ত নগরীটির মোট আয়তন ৮৩.৯ কিলোমিটার। যে সংবাদ-মাধ্যমগুলি এই খবর রিপোর্ট করে, তাদের মধ্যে রয়েছে এএনআই, নিউজ-১৮, নিউজ-১৮ হিন্দি, এবং ইন্ডিয়া টুডে।
‘হিন্দ সিটি’ নামটির অর্থের গভীরে যাওয়ার চেষ্টা ভারতীয় গণমাধ্যমগুলি করেনি, তবে এটা উল্লেখ্য যে সচরাচর ভারতীয় পাঠকদের আগ্রহের বিষয় না হলে তারা অন্য দেশের খবর প্রচার করে না।
তথ্য যাচাই
এই নামকরণ সংক্রান্ত ঘোষণা দুবাই সরকারের মিডিয়া দফতর থেকে করা হয়, আমরা সেটা খতিয়ে দেখেছি। ওয়েবসাইটে এই ঘোষণা দেখে মনে হয়, এটা একটা নিয়মমাফিক সাধারণ ব্যাপার, যার সঙ্গে হিন্দুদের কিংবা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কোনও সম্পর্ক নেই। ঘোষণাটি পড়ে দেখতে পারেন এখানে।
বুম দুবাই সরকারের মিডিয়া বিভাগে খোঁজখবর করতে গেলে জানানো হয়, ভাইরাল হওয়া টুইটের দাবিটির কোনও সারবত্তা নেই। “হিন্দ একটি আরবি নাম এবং এলাকার প্রাচীন সভ্যতার শিকড়ে তার অস্তিত্ব রয়েছে। দুবাই-এর কোনও অঞ্চলের ‘হিন্দ সিটি’ নামকরণের সঙ্গে তাই অন্য কোনও দেশকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না।”
আমরা দুবাই-এর শাসক শেখ মহম্মদ বিন রশিদ আল-মখদুম-এর সরকারি টুইটার অ্যাকাউন্টও খতিয়ে দেখেছি। এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত সেখানেও এই নামকরণ নিয়ে কোনও পোস্ট নেই।
তাছাড়া, ‘হিন্দ’ শব্দটি একটি প্রাচীন আরবি শব্দও বটে। যেমন দুবাই-এর শাসক শেখ মহম্মদ বিন রশিদের প্রথম স্ত্রীর নামই হলো হিন্দ বিন মাখতুম আল মাখতুম। দুবাই থেকে প্রকাশিত যে ইংরাজি দৈনিক গাল্ফ নিউজ-এ এই নামকরণের ঘোষণাটি খবর হিসাবে প্রকাশিত হয়, তাতেও ভারতের কোনও উল্লেখই নেই। সংশ্লিষ্ট খবরটি দেখতে পারেন এখানে।