লেন্সের মুখ ঢেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চিতার ছবি তোলার ছবি সম্পাদিত
বুম দেখে মূল ছবিতে ছবিতে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে খোলা লেন্স দিয়েই ছবি তুলতে দেখা যাচ্ছে।
কংগ্রেস দল (Congress) ও তার সমর্থকদের বেশ কিছু হ্যান্ডেল থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) একটি ছবি শেয়ার করা হচ্ছে। তাতে দেখা যাচ্ছে যে, লেন্সে মুখ লাগানো অবস্থাতেই তিনি একটি ডিএসএলআর ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলছেন। যেসব পোস্টে মোদীর ওই ছবি শেয়ার করা হয়েছে, সেগুলিতে বিদ্রুপও করা হয়েছে এই দাবি করে যে, ক্যামেরার লেন্স ঢাকা অবস্থাতেই মোদী নামিবিয়া (Namibia) থেকে আমদানি করা চিতাদের (Cheetah) ছবি তুলছেন।
বুম যাচাই করে দেখে, ওই পোস্টগুলিতে যে ছবিটি শেয়ার করা হয়েছে সেটি জোড়াতালি দিয়ে তৈরি। আসল ছবিটি হল ভাইরাল ছবিটির প্রতিচ্ছবি, তাতে দেখা যাচ্ছে, মোদী মুখ খোলা লেন্স দিয়েই ছবি তুলছেন। লেন্সের মুখটি ডিজিটাল পদ্ধতিতে ছবিটিতে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভারত সম্প্রতি নামিবিয়া থেকে আটটি চিতা নিয়ে এসেছে। সেগুলিকে শনিবার মধ্যপ্রদেশের কুনো পালপুর জাতীয় উদ্যানে ছাড়া হয়। ভারতেও চিতা ছিল এক সময়, কিন্তু পরে তারা বিলুপ্ত হয়ে যায়। সেগুলি আসার পর, মোদী তাদের ছবি তোলেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে শেয়ার করা হচ্ছে সম্পাদনা করা ভাইরাল ছবিটি।
যে সব উল্লেখযোগ্য অ্যাকাউন্ট থেকে ছবিটি শেয়ার করা হয়, তার মধ্যে রয়েছে মহারাষ্ট্র কংগ্রেস সেবাদল, উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস কমিটির সভাপতি বীরেন্দ্র চৌধুরী ও কংগ্রেস সদস্য আমান দুবে ও ঈশিতা সেধা'র টুইটার অ্যাকাউন্ট।
তাঁদের টুইটের আর্কাইভ দেখুন যথাক্রমে এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
ছবিটি একাধিক ব্যবহারকারী টুইটার এবং ফেসবুকেও শেয়ার করেন।
আরও পড়ুন: "ফ্রিডম মার্চের" ভিডিও বিভ্রান্তি সহ ছড়াল "ভারত জোড়ো যাত্রা" বলে
তথ্য যাচাই
আমরা ভাইরাল ছবিটি জুম করে নিয়ে ভাল করে দেখি। খুব কাছ থেকে দেখার ফলে অনেকগুলি অসঙ্গতি আমাদের চোখে ধরা পড়ে।
নীচে দেওয়া অসঙ্গতিগুলি আমাদের নজরে আসে:
১) ডিএসএলআর ক্যামেরাটি নিকন, কিন্তু তার লেন্সের মুখটি ক্যানন-এর।
২) 'নিকন' লেখাটি উল্টে গেছে, কিন্তু 'ক্যানন' লেখাটি সোজাই আছে। তার থেকে বোঝা যায় যে, ক্যামেরা হাতে মোদীর ছবিটি আড়াআড়ি ভাবে উল্টে নিয়ে প্রতিবিম্ব ছবি তৈরি করা হয়। তারপর, সেটির ওপর জুড়ে দেওয়া হয় 'ক্যানন' লেখা লেন্সের ঢাকা।
৩) উল্টে যাওয়া 'নিকন' লেখাটি বেশ অস্পষ্ট। সেই তুলনায় 'ক্যানন' শব্দটি অনেক স্পষ্ট। এর থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, 'ক্যানন' লেখা লেন্সের ঢাকাটি ডিজিটাল উপায়ে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। আসল ছবিতে সেটি ছিল না।
এই সূত্র ধরে আমরা ইংরেজিতে 'মোদী চিতার ছবি তুলছেন' (Modi Taking Picture of Cheetas) কি-ওয়ার্ডগুলি দিয়ে সার্চ করি। তার ফলে, আমরা কিছু সংবাদ প্রতিবেদন ও পোস্ট দেখতে পাই যেগুলিতে আসল ছবিটি ব্যবহার করা হয়।
বিজেপি গুজরাট-এর অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল শনিবার আসল ছবিটি প্রকাশ করে, সেই ছবিতে, মোদীর হাতের ক্যামেরার লেন্সে কোনও মুখ লাগলো ছিল না।
ছবিটি পঞ্জাব কেশরী ও ফার্স্টপোস্টেও প্রকাশিত হয়।
আরও পড়ুন: শুভেন্দু বলছেন মাতঙ্গিনী হাজরা বর্ণপরিচয়ের স্রষ্টা? ভিডিওটি সম্পাদিত