হিজাব বিতর্ক: কর্নাটকের পুরনো ভিডিওকে পশ্চিমবঙ্গে পুলিশ পদক্ষেপ বলা হল
বুম দেখে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি জাতীয় শিক্ষানীতির প্রতিবাদে বেঙ্গালুরুতে গত বছর হওয়া বিক্ষোভের দৃশ্য।
![হিজাব বিতর্ক: কর্নাটকের পুরনো ভিডিওকে পশ্চিমবঙ্গে পুলিশ পদক্ষেপ বলা হল হিজাব বিতর্ক: কর্নাটকের পুরনো ভিডিওকে পশ্চিমবঙ্গে পুলিশ পদক্ষেপ বলা হল](https://bangla.boomlive.in/h-upload/2022/02/15/970094-969990-nep-protest-in-bengaluru-shared-as-police-brutality-in-murshidabad-65.webp)
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কর্নাটকের (Karnataka) বেঙ্গালুরুতে জাতীয় শিক্ষানীতি (New Education Policy) রূপায়নের প্রতিবাদে (Protest) আন্দোলনরত ছাত্রদের পুলিশ জোর করে সরিয়ে দিচ্ছে, এমন একটি ভিডিওকে ভুয়ো ব্যাখ্যা সহ প্রচার করা হচ্ছে যে, এটি পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) হিজাব-পরা (Hijab) ছাত্রদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের (Violence) ছবি।
কর্নাটকের শ্রেণিকক্ষে হিজাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে ওই রাজ্যে এবং সারা দেশে পক্ষে-বিপক্ষে যে তুমুল আন্দোলন চলছে, তার পটভূমিতেই এই ভিডিওটি ভাইরাল করা হয়েছেi
হিন্দুস্তান টাইমস-এ ১২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, মুর্শিদাবাদের সুতিতে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছাত্রীদের হিজাব পরার বদলে স্কুলের ইউনিফর্ম পরে আসার কথা বলেন। পরের দিনই স্থানীয় জনসাধারণ স্কুলবাড়িতে চড়াও হয়ে শিক্ষকদের ঘরের ভিতর তালাবন্দি করে দেয়। পুলিশ ঘটনায় জড়িত 18 জন গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করে এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষককে সাসপেন্ড করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠি-চার্জ করতে হয়, এমনকী কাঁদানে গ্যাসের সেলও ফাটাতে হয়।
কিন্তু যে ভিডিওটি ভাইরাল হযেছে, তা আদৌ মুর্শিদাবাদের ওই ঘটনার ছবি নয়। ২১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে পুলিশকে দেখা যাচ্ছে একদল ছাত্রকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যেতে এবং অদূরে রাস্তায় হিজাব-পরা একদল মেয়েও বসে রয়েছে।
ভিডিওটির হিন্দি ক্যাপশনে লেখা হয়েছে: "এই ঘটনাটি মমতা ব্যানার্জি এবং মহুয়া মৈত্র শাসিত পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার। প্রথমে মেয়েদের সেখানে হিজাব বা বোরখা না পরে কলেজে যেতে বাধা দেওয়া হয়, তারা প্রতিবাদ করলে পুলিশ নির্দয়ভাবে তাদের প্রহার করে। সংসদে শ্রীমতি মৈত্র যে বক্তৃতা দেন, তার সঙ্গে তাঁর রাজ্যের বাস্তবতার অনেক পার্থক্য রয়েছে।"
(হিন্দিতে মূল ক্যপশন: यह @MahuaMoitra और @MamataOfficial बंगाल के मुर्शिदाबाद जिले का वीडियो है। पहले लड़कियों को हिज़ाब और बुर्के में कॉलेज जाने से रोका गया। जब लड़कियों ने इसका विरोध किया तब पुलिस बर्बरतापूर्ण तरीकें से पेश आयी। @MahuaMoitra जी के संसद में दिए भाषण और एक्शन में बहुत फ़र्क़ है
একই ভুয়ো দাবি সহ এই ভিডিওটি ফেসবুকেও ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়েছে। পোস্টগুলি দেখতে ক্লিক করুন এখানে এবং এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটির কয়েকটি মূল ফ্রেম গুগল-এ দিয়ে খোঁজ করে দেখেছে, ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সাহিল অনলাইন নামের একটি পোর্টালে এই একই ছবি পোস্ট করা হয়েছিল। তার শিরোনাম ছিল, "বেঙ্গালুরু: জাতীয় শিক্ষানীতির প্রতিবাদীদের ওপর পুলিশের মৃদু লাঠি-চার্জ!"
একই শিরোনাম সহ একই ভিডিও একই দিনে সাহিল অনলাইন ইউটিউবেও পোস্ট করে।
ভিডিওটির দু'মিনিটের মাথায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ছবিগুলোই ভেসে উঠতে থাকে।
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ডেকান হেরাল্ড-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রায় চারশো ছাত্র নয়া শিক্ষানীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল। বিক্ষোভকারীরা বিধানসৌধে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশি লাঠি-চার্জে তাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়, তাদের হাসপাতালে ভর্তিও করতে হয়।
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ টিভি৯ কন্নড় শিক্ষানীতির প্রতিবাদে ছাত্রদের বিক্ষোভে পুলিশি পীড়নের খবর প্রকাশ করে।
আরও পড়ুন: কর্নাটক হিজাব বিতর্ক: বাংলাদেশের পুরনো ভিডিও বিভ্রান্তিকর দাবিতে ছড়াল