মেরঠে ধর্ষণের চেষ্টায় অভিযুক্ত ব্যক্তির ছবি সাম্প্রদায়িক দাবিতে ছড়াল
দৌরালার পুলিশ বুমকে নিশ্চিত করে জানিয়েছে অভিযুক্ত ব্যক্তি মোহিত সাইনি হিন্দু, মুসলমান নন।
এক মহিলাকে ধর্ষণ (Rape) করার চেষ্টা করলে, সেই মহিলার প্রতিআক্রমণে জখম এক ব্যক্তির ছবি সাম্প্রদায়িক রঙ (Communal Spin) চড়িয়ে সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে। ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, ওই ব্যক্তি মহম্মদ ইসরার নামে একজন মুসলমান।
বুম দেখে, দাবিটি মিথ্যে। আমরা মেরঠের দৌরালার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা নিশ্চিত করে বলেন যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি একজন হিন্দু ও তার নাম মোহিত সাইনি। মহিলাকে জোর করে চুম্বন করতে গেলে, উনি অভিযুক্তের ঠোঁট কামড়ে দেন।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে ওই ব্যক্তির নীচের ঠোঁটে ক্ষত রয়েছে। হিন্দিতে লেখা ক্যাপশনে বলা হয়েছে, “মেরঠ ব্রেকিং। ধর্ষণের চেষ্টা করার জন্য উচিত শিক্ষা। অভিযুক্তের ঠোঁট কামড়ে দেন মহিলা। ওনাকে জোর করে চুম্বন করা হয়। মাঠে ঘাস কাটার সময় উনি আক্রান্ত হন। অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্তের নাম মহম্মদ ইসরার।”
(হিন্দিতে লেখা ক্যাপশন: *मेरठ ब्रेकिंग..........* रेप अटेम्प्ट करने पर दरिंदे को सबक महिला ने आरोपी का होठ काट लिया महिला को दबोचकर किस किया था खेत में घास काट रही महिला पर अटैक पुलिस ने आरोपी को किया गिरफ्तार आरोपी का नाम मोहम्मद इसरार है)
পোস্টটি দেখতে এখানে, এখানে ও এখানে ক্লিক করুন।
লোকটি মুসলমান এমন দাবি করে ছবিটি টুইটারেও শেয়ার করা হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
বুম ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ওই ঘটনা সম্পর্কে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন দেখতে পায়।
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ অমর উজালায় প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়, মেরঠের দৌরালা থানার অধীনে আজহোতা গ্রামের এক তরুণ একজন মহিলার শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করলে, মহিলা তার ঠোঁট কামড়ে দেন। ওই রিপোর্টে অভিযুক্তকে মোহিত সাইনি বলে শনাক্ত করা হয়। বলা হয়, সাইনি লাভাড-এর বাসিন্দা এবং পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
আমরা দেখি, টিভি৯ ভারতবর্ষ ও দৈনিক ভাস্কর-এও ওই ঘটনা সম্পর্কে প্রতিবেদন লেখা হয়।
দৈনিক ভাস্কর-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, লোকটি মহিলাকে ধর্ষণ করতে গেলে, উনি ওই ব্যক্তির ঠোঁট কামড়ে দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। ওই প্রতিবেদনেও অভিযুক্তকে লাভাড গ্রামের বাসিন্দা মোহিত সাইনি বলে শনাক্ত করা হয়।
ওই ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে বুম দৌরালা থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে।
একজন ইনস্পেক্টর নিশ্চিত করে জানান যে, অভিযুক্তের নাম মোহিত সাইনি। এবং তিনি একজন হিন্দু। তিনি এও বলেন, অভিযুক্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত, এই মর্মে যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, সেটি মিথ্যে। ঘটনাটি ৪ ফেব্রুয়ারি ঘটে। লোকটি মহিলাকে ধর্ষণ করতে গেলে, তিনি তার ঠোঁট কামড়ে দেন। ৩২৩, ৫০৪, ৫০৬ ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক ধারায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।