মোদীর কুশপুতুল পোড়ানোর সময় কংগ্রেস কর্মীদের লুঙ্গিতে আগুন লাগেনি, ভিডিওটি পুরনো
বুম দেখে ২০১২ সালের ভিডিওটিতে কেরল ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা মহাত্মা গান্ধী ইউনিভার্সিটির উপাচার্য্যের কুশপুতুল পোড়াচ্ছে।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পুরোনো ভিডিও ভুয়ো দাবিসহ ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হচ্ছে। ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে কর্নাটকে প্রধানমন্ত্রী (Prime Minister) নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) কুশপুতুল (Effigy) পোড়াতে গিয়ে কংগ্রেস (Congress) কর্মীরা নিজেদের লুঙ্গিতে আগুন লাগিয়ে ফেলেছে।
বুম দেখে দাবিটি ভুয়ো এবং ভিডিওটি ২০১২ সালের। ভিডিওটি কেরল ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের মহাত্মা গান্ধী ইউনিভার্সিটির তৎকালীন উপাচার্য্যের কুশপুতুল পোড়ানোর।
২৯ সেকেন্ডের ভাইরাল ভিডিওটিতে নীল পতাকাধারী একদল বিক্ষোভকারীদের একটি কুশপুতুল পোড়াতে দেখা যায় যখন হঠাৎই তাদের জামাকাপড় এবং লুঙ্গিতে আগুন লেগে যায়।
একজন ব্যবহারকারী ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার করে ক্যাপশন হিসাবে লিখেছেন, "কর্নাটকে মোদীজীর কুশপুতুল দাহ করতে গিয়ে, কয়েক জন কংগ্রেস কর্মীর লুঙ্গিতে আগুন লেগে গেল"।
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
আরও একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিও শেয়ার করে একই ক্যাপশন দিয়ে পোস্ট করেন।
দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম যাচাই করে দেখে ভিডিওটি ১২ বছরের পুরোনো একটি ঘটনার এবং চলতি লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে এটির কোনো যোগ নেই। ভিডিওটিতে কেরল ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের মহাত্মা গান্ধী ইউনিভার্সিটির তৎকালীন উপাচার্য্যের কুশপুতুল পোড়াতে দেখা যাচ্ছে।
বুম ২০১৮ সালে এই ভিডিওটির তথ্য যাচাই করেছে যখন এই একই দাবিসহ এটি ভাইরাল হয়েছিল।
ভাইরাল ভিডিওটির কিফ্রেমের রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ১ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখের একটি ফেসবুক পোস্ট পাই। সেখানে আমরা ভাইরাল ভিডিওর একেবারে অনুরূপ একটি ভিডিও দেখতে পাই। পোস্টটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়, "কেরলে প্রতিবাদের সময় মজার ঘটনা। লুঙ্গিতে আগুন লেগে গেল"। (ক্যাপশন অনুবাদ করা) পোস্টটির আর্কাইভ দেখুন এখানে।
এই ক্যাপশন থেকে ইঙ্গিত নিয়ে, আমরা কেরলে প্রতিবাদের সময় কর্মীদের গায়ে আগুন লেগে যাওয়া সংক্রান্ত কিওয়ার্ড সার্চ করে এশিয়ানেট নিউজের ইউটিউবে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাই। ৫ জুলাই ২০১২ তারিখের 'পাথানমথিট্টায় কেএসইউ কর্মীদের ভাগ্যক্রমে আগুন থেকে বাঁচা' শিরোনামসহ প্রতিবেদনটিতে ভাইরাল ভিডিও দেখা যায়।
আর্কাইভের জন্য এখানে ক্লিক করুন।
কেএসইউ-এর ফেসবুক পেজের একটি পোস্ট অনুসারে, ৪ জুলাই তৎকালীন উপাচার্য রাজন গুরুক্কালের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভটি হয়েছিল। কেএসইউ হল কেরলে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ছাত্র শাখা।
কুশপুতুল পোড়ানো নিষিদ্ধ করার জন্য কেরল হাইকোর্টে দায়ের করা একটি আবেদন নিয়ে ২০১২ সালের জুলাই মাসের একটি প্রতিবেদনেও এই ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায় সংগঠনের সদস্যরা ভাইস চ্যান্সেলরের তথাকথিত দুর্নীতির প্রতিবাদ করছিলেন যখন তাদের জামাকাপড়ে আগুন লেগে যায়। তাদের মধ্যে আগুনে আহতদের পাথানমথিট্টার একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।