অন্ধ্রপ্রদেশে নৃশংসভাবে খুনের ভিডিও ভুয়ো সাম্প্রদায়িক দাবিতে ভাইরাল
বুম দেখে ভিডিওটি অন্ধ্রপ্রদেশের; শেখ জিলানী নামক এক ব্যক্তি ওয়াইআরসিপি নেতা শেখ রাশিদকে ব্যক্তিগত শত্রুতার জন্য খুন করেন।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় নৃশংসভাবে এক ব্যক্তিকে খুন (murder) করার একটি ভিডিও শেয়ার করে ভুয়ো সাম্প্রদায়িক দাবি (communal claim) করা হচ্ছে যে দিল্লির সরাই কালে খান এলাকায় রাস্তার মাঝখানে এক মুসলমান (Muslim) ব্যক্তির হাতে এক হিন্দু (Hindu) খুন হয়েছেন।
বুম দেখে এই ঘটনার মধ্যে কোনও সাম্প্রদায়িক দিক নেই। ভিডিওটি অন্ধ্রপ্রদেশের পালনাডু জেলার বিনুকোন্ডায় ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার। আমরা যাচাই করে দেখি হামলাকারী এবং নিহত দুজনেই মুসলিম সম্প্রদায়ের।
ভাইরাল ভিডিওতে এক ব্যক্তিকে রাস্তার মাঝখানে একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে অন্য একজনকে বারংবার আঘাত করতে দেখা যায় যার ফলে আক্রান্তের হাতটি শরীর থেকে ছিন্ন হয়ে যায়।
ভিডিওটির নৃশংসতার জন্য বুম তথ্য যাচাইয়ে পোস্টগুলি অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার করে হিন্দিতে ক্যাপশন হিসাবে লেখা হয়, "এই ঘটনাটি দিল্লি সরাই কালে খান থেকে রিপোর্ট করা হচ্ছে। সমস্ত সাংবাদিকদের হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে এটি তুলে ধরার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। *দিল্লির সরাই কালে খানের কাছে ঘটনা, জাভেদ হিন্দু যুবক রোহিতকে হত্যা করেছে.... দেশে যেখানেই মুসলমানের সংখ্যা বেড়েছে, সেখানে।"
পোস্টের আর্কাইভ দেখুন এখানে।
ভিডিওটি মারাঠি ভাষায়ও ভুয়ো ক্যাপশন সহ ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে ঘটনাটি মুম্বাইয়ে ঘটেছে ও বজরং দলের কর্মী অরবিন্দ বৈদ্যকে মুসলমানরা হত্যা করে।
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওর দৃশ্যগুলির উপর ভিত্তি করে একটি সম্পর্কিত কিওয়ার্ড সার্চ করে ১৮ জুলাই, ২০২৪-এ টিভি৯ বাংলার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পায় যেখানে ঘটনার স্ক্রিনশট অন্তর্ভুক্ত ছিল।
প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায় ঘটনাটি অন্ধ্রপ্রদেশের পালনাডু জেলার বিনুকোন্ডা শহরের বড় রাস্তায় ঘটে। ওই ঘটনায় ওয়াইএসআরসিপির এক যুব নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
টিভি৯ বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, "পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। মাঝ রাস্তায়, চলন্ত গাড়িঘোড়ার মাঝেই ওয়াইএসআর কংগ্রেসের যুব শাখার কর্মী শেখ রশিদের উপরে হামলা চালায় এক ব্যক্তি। হামলাকারীর নাম শেখ জিলানি। ভরা রাস্তাতেই সকলের সামনে রশিদকে খুন করে জিলানি।"
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ১৯ জুলাইয়ের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায় ২৭ বছরের শেখ রশিদ পালনাডু জেলার ওয়াইএসআরসিপির যুব শাখার সম্পাদক ছিলেন।
২০২৪ সালের ১৮ জুলাইয়ে প্রকাশিত দ্য হিন্দুর একটি প্রতিবেদনে খুনটির সম্পর্কে আমরা পুলিশ সুপারের একটি বিবৃতি দেখতে পাই।
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন অনুসারে, "পুলিশ সুপার কাঞ্চি শ্রীনিবাস রাও একটি বিবৃতিতে জানান ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে এই খুনটি করা হয়। তিনি এই খুনে রাজনৈতিক মতবিরোধ জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।”
২৬ জুলাইয়ের একটি ফেসবুক পোস্টে পালনাডু পুলিশ জানায় তারা খুনের সঙ্গে জড়িত জিলানী এবং আরও ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে। তেলেগু ভাষায় করা ফেসবুক পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয় নৃশংস ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্তদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
পোস্টটি দেখুন এখানে।