সাম্প্রদায়িক দাবিতে ছড়াল সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদের পুরনো ভিডিও
বুম যাচাই করে দেখে ভাইরাল ভিডিওতে ২০১৯ সালের সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদের দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়।
সম্প্রতি কিছু ব্যক্তিদের একটি রেল স্টেশন (Railway Station) ভাংচুর চালানোর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হয় ট্রেনের হুইসেলের শব্দে নামাজে (Namaz) ব্যাঘাত পড়ায় মুর্শিদাবাদের এক স্টেশনে ভাংচুর চালানো হয় ।
বুম যাচাই করে দেখে ২০১৯ সালের পুরনো এই ভিডিওর সাথে কোনো সাম্প্রদায়িক যোগ নেই। সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদের সময় স্টেশন ভাঙচুরের এই ঘটনা ঘটে।
ভিডিওটি ফেসবুকে একজন ব্যবহারকারী পোস্ট করে লেখেন,"পশ্চিমবঙ্গের শান্তির জল পড়েছে। ট্রেনের আওয়াজে নামাজের অসুবিধে হচ্ছে, এই অজুহাতে....জনতা ভেঙ্গে দিল মুর্শিদাবাদের নওপাড়ামহিষাসুর স্টেশন। সেকুলারিজমের চূড়ান্ত পর্যায়!!!"
এই ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন এবং ভিডিওর আর্কাইভ দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
তথ্য যাচাই
বুম ২০২২ সালে এই ভিডিও একই ধরণের সাম্প্রদায়িক দাবি সমেত ভাইরাল হলে সেসময় তার তথ্য যাচাই করেছিল।
আমরা প্রথমেই লক্ষ্য করি ভিডিওতে দেখতে পাওয়া একটি নামফলকে 'নওপাড়া মহিষাশুর' লেখার উল্লেখ আছে, যার থেকে বোঝা যায় ভিডিওটি ওই স্টেশনেরই দৃশ্য। এই সূত্র ধরে আমরা সম্পর্কিত কিওয়ার্ড সার্চ করে ২০১৯ সালে পোস্ট করা ইউটিউবে এক ভিডিও খুঁজে পাই যার সাথে ভাইরাল ভিডিওর মিল দেখা যায়।
আমরা দেখি ২০১৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর তারিখে ভিডিওটি আপলোড করা হয়েছিল। ভিডিওটির ক্যাপশন হিসেবে লেখা হয়,"সাগড়দিঘির নওপাড়া মহিষাসুর স্টেশনে ক্যাব ও এন আর সি বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল"।
এছাড়াও আমরা ফেসবুকে সেসময়ের এধরণের বেশ কিছু ভিডিও খুঁজে পাই যা এখানে দেখা যাবে।
আমরা ওয়াইল্ড ফিল্মস ইন্ডিয়া নামক ইউটিউব চ্যানেলেও ওই ভিডিওর এক দীর্ঘ সংস্করণ খুঁজে পাই যা এখানে দেখা যাবে। ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর তারিখে আপলোড করা ওই ভিডিওটি পশ্চিমবঙ্গে সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদের সময় কিছু লোকের স্টেশন ভাঙচুরের ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করা হয়।
এই ভিডিওয় থাকা দৃশ্যের সাথে বুম ভাইরাল ভিডিওর দৃশ্যগুলির তুলনা করে যা নিচে দেখা যাবে।
রেল স্টেশনে ভাংচুরের সেই ঘটনার বিষয়ে ২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর বর্তমান পত্রিকার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনও আমরা খুঁজে পাই। ওই প্রতিবেদন দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
বুম সেসময় সাগরদিঘি থানার সাব-ইন্সপেক্টর প্রিয়তোষ সিনহার সাথেও কথা বলে। সিনহা আমাদের নিশ্চিত করে বলেন দাবিটি ভুল ও ২০১৯ সালে সিএএ বিরোধী প্রতিবাদের সময় এমন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছিল।