না, ভাইরাল ভিডিওটি চাঁদে সোনা পাওয়ার দৃশ্যের নয়
বুম দেখে ভিডিওটিতে মঙ্গল গ্রহের কিছু দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর (ISRO) পাঠানো চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3) চাঁদে সফল অবতরণ করার পর থেকেই নেটিজেনদের অনেকে চন্দ্রপৃষ্ঠের নানা ছবি ও ভিডিও শেয়ার করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এরই মধ্যে চাঁদে সোনা পাওয়া গেছে দাবি করে এক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সমাজ মাধ্যমে।
বুম যাচাই করে দেখে দাবিটি ভুয়ো। ভাইরাল ওই ভিডিওতে চাঁদ নয় বরং মঙ্গল গ্রহের কিছু দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ান ওই ভিডিওর প্রথম অংশে মাটিতে এক ধরণের চকচকে বস্তু পড়ে থাকতে দেখা যায়। ভিডিওটির পরের অংশে কিছু পাথরের খাঁজে স্ফটিকের মত স্বচ্ছ এক বস্তুর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশন হিসেবে লেখা হয়,"চাঁদে সোনা পাওয়া গেছে"।
পোস্টটির আর্কাইভ দেখা যাবে এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম প্রথমেই ভিডিওটিতে লক্ষ্য করে ওই ভিডিওর শেষ অংশে সোম ইটি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ও ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির ক্যালটেক বিভাগের উল্লেখ রয়েছে।
এই তথ্যকে সূত্র হিসাবে গ্রহণ করে সম্পর্কিত কীওয়ার্ড সার্চ করায় som.et নামক ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে ভাইরাল ভিডিওটিকে খুঁজে পাই। ১৮ অগাস্ট ভিডিওটি পোস্ট করে সেখানে লেখা হয়, নাসার পার্সিভারেন্স রোভার মঙ্গল গ্রহে ছবিটি ২০২২ সালের ১৩ জুন তোলে।
ছবিটির সূত্র হিসাবে সেখানে নাসার ওয়েবসাইটের এক লিঙ্কও দেওয়া হয়। আমরা নাসার সেই লিংক অনুসরণ করে মঙ্গল গ্রহে উপস্থিত ভিডিওটির অনুরূপ দৃশ্য দেখতে পাই।
নিচে ভাইরাল ভিডিওয় দেখতে পাওয়া দৃশ্য ও নাসার তোলা মঙ্গল গ্রহের ছবির তুলনা করা হল।
এছাড়াও আমরা ভিডিওটির পরের অংশে দেখতে পাওয়া স্বচ্ছ স্ফটিকের দৃশ্যটি রিভার্স সার্চ করে দেখতে পাই নাসা ২০২২ সালের ১৫ জুন তার মঙ্গল অভিযানে পাঠানো পার্সিভিয়ারেন্স রোভারের বিষয়ে এক ছবি পোস্ট করে। ওই ছবিটিতেও ভাইরাল ভিডিওর অনুরূপ স্বচ্ছ স্ফটিক লক্ষ্য করা যায়।
ছবিটির বিষয়ে নাসা জানায়, বস্তুটি মঙ্গলে উপস্থিত এক থার্মাল ব্ল্যাঙ্কেট হতে পারে যা পূর্ববর্তী কোনও এক মঙ্গল অভিযানের সময় রয়ে গেছে লাল গ্রহের পৃষ্ঠে।
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
নাসার ওয়েবসাইটে থাকা তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মঙ্গল গ্রহে অবতরণ করে পার্সিভিয়ারেন্স রোভার। লাল গ্রহে অবতরণের সময় এই রোভারের সাথে যুক্ত ছিল নাসার তৈরি ইঞ্জেনুইটি হেলিকপ্টারও। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওই মহাকাশ গবেষণা সংস্থার এই মঙ্গল অভিযানের উদ্দেশ্য হল গ্রহটির বিষয়ে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান করা।