ভিন্ন ভিডিও ছড়াল মুম্বইয়ের বান্দ্রায় মহিলাদের সমুদ্রে ভেসে যাওয়া বলে
বান্দ্রা পুলিশ বুমকে জানায় সেখানের সমুদ্রতটে এই ধরণের কোনও ভেসে যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি।
দু'জন মহিলার সমুদ্রের প্রবল ঢেউয়ে (Swept Away) ভেসে যাওয়ার মর্মান্তিক দৃশ্যের সম্পর্কহীন ভিডিও মিথ্যে দাবি সহ ছড়িয়ে দাবি করা হচ্ছে ঘটনাটি ঘটেছে মুম্বইয়ের (Mumbai) বান্দ্রা সমুদ্র সৈকতে (Bandra Beach)।
বান্দ্রা থানার ইনস্পেক্টর রাজেশ দেবরে'র সঙ্গে বুম যোগাযোগ করলে, lনি নিশ্চিত করেন যে, ওই ভাবে সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার কোনও ঘটনা বান্দ্রার সমুদ্র সৈকতে ঘটেনি।
ভারতের আবহাওয়া দফতর তাদের বিস্তারিত পূর্বাভাসে জানায় যে, মুম্বই, পুনে, সাতারা, সোলাপুর, সাঙ্গলি ও কোলাপুর সহ মহারাষ্ট্রের বেশ কিছু জায়গায় ভারী বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারী বৃষ্টির কারণে, ১৪ জুলাই পালঘর জেলায় সব স্কুল বন্ধ থাকবে।
ভিডিওটিতে দুই মহিলাকে জলের টানে সমুদ্রে ভেসে যেতে দেখা যাচ্ছে। অন্যরা সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকেন। এক ব্যক্তি ওই মহিলাদের বাঁচানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
ফেসবুক পেজ 'হরিয়ানা বুলেটিন' ও 'আধার নিউজ হরিয়ানা', ভিডিওটি মুম্বইয়ের বান্দ্রা বিচের ঘটনা বলে প্রতিবেদনে লেখে।
ভিডিওটির সঙ্গে দেওয়া হিন্দি ক্যাপশনে লেখা হয়, "সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে খেলা করার চেষ্টা মর্মান্তিক হয়ে ওঠে দুই মহিলার ক্ষেত্রে। জোয়ারের ঢেউ তাঁদের সমুদ্রে টেনে নিয়ে গিয়ে প্রাণহানি ঘটায়।"
(হিন্দিতে লেখা মূল ক্যাপশন: मुंबई में बांद्रा समुद्र तट पर लहरों के साथ खिलवाड़ पर करना पड़ा दो महिलाओं को भारी ऊंची लहरें बहा ले गई 2 महिलाओं को लहरों की ताकत को कम आंकना लील गया जिंदगी)
যাচাইয়ের জন্য ভিডিওটি বুমের হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইনেও আসে।
তথ্য যাচাই
ভিডিওটির মুখ্য ফ্রেমগুলি নিয়ে বুম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে। তার ফলে, আমরা ওমান-এ প্রকাশিত বেশ কিছু প্রতিবেদন দেখতে পাই। তাতে বলা হয়, ভিডিওটি ওমান-এর ধোফার গভর্নরেট-এর (প্রশাসনিক এলাকা) আল-মুঘসেইল সমুদ্রতটে তোলা। ১০ জুলাই, সেখানে জলোচ্ছ্বাসের ফলে পাঁচ সদস্যের এক পরিবারের দু'জন ভেসে যান।
আবু ধাবি'র সংবাদ সংস্থা 'এরেম নিউজ', ওয়েদার ওমান-এর করা একটি টুইট শেয়ার করে। তাতে ওই একই ভিডিও ছিল। ওই টুইট অনুযায়ী, ভিডিওটিতে একটি এশীয় পরিবারের সদস্যদের ডুবে যেতে দেখা যাচ্ছে। তাঁরা নিরাপদ সীমা লঙ্ঘন করার ফলে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
বুম ভিডিওটি স্বাধীন ভাবে যাচাই করতে পারেনি।
আরও জানতে আমরা 'ওয়েদার ওমান' হ্যান্ডেলটির সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁদের প্রতিক্রিয়া পাওয়ার পর আমরা এই প্রতিবেদন আপডেট করব।
তাছাড়া, বান্দ্রার সমুদ্রতটে দুই মহিলার তলিয়ে যাওয়ার কোনও খবর আমরা দেখতে পাইনি। বুম বান্দ্রা থানার ইনস্পেক্টর রাজেশ দেবরে'র সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি নিশ্চিত করেন যে, বান্দ্রা সৈকতে ওই রকম কোনও ঘটনা ঘটেনি।
ওমানে ডুবে মৃত্যু সাঙ্গলি পরিবার
খবরে প্রকাশ, পশ্চিম মহারাষ্ট্রের সাঙ্গলি জেলার জাট শহরের এক পরিবারের শিশু সহ তিন সদস্য ১০ জুলাই ২০২২-এ ওমান-এর সমুদ্রে ডুবে যান। তাঁরা পিকনিক করতে গিয়েছিলেন সমুদ্র সৈকতে। মৃতদের শশিকান্ত মহামানে, তাঁর ন'বছরের মেয়ে শ্রুতি ও ছ'বছরের ছেলে শ্রেয়াস বলে শনাক্ত করা হয়।
১০ জুলাই করা এক টুইটে, ওমান পুলিশ জানায়, "ঢেউয়ের টানে, তিন শিশু সহ, পাঁচ সদস্যের একটি এশীয় পরিবার সমুদ্রে তলিয়ে যায়। ধোফার গভর্নরেট-এর মুঘসেইল এলাকার পাথুরে জায়গায় নিরাপদ সীমার বেড়া অতিক্রম করলে, তাঁরা সমুদ্রে পড়ে যান। অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল কাজ করছে।"
মাসকাট ডেইলির খবর অনুযায়ী, ইদ অল আজহার ছুটির সময়, ভারী বৃষ্টির ফলে, ওমান-এর বিভিন্ন গভর্নরেটে আন্তত ১৪ জন ব্যক্তি জলে ডুবে মারা গেছে।
আরও পড়ুন: কেদারনাথ মন্দিরের পুরোহিতকে বলা হল ২৬ বছর বয়সী নরেন্দ্র মোদীর যোগাসন