ট্রেনের মাথায় চড়া ব্যক্তির তড়িদাহত হওয়ার ভয়ানক দৃশ্যের ভিডিও মুম্বইয়ের ঘটনা নয়
ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গের মালদা টাউন স্টেশনের, যেখানে এক ব্যক্তি একটি এক্সপ্রেস ট্রেনের মাথায় চড়ে ওভার হেড তার স্পর্শ করে আত্মঘাতী হয়।
পশ্চিমবঙ্গের মালদা শহরে এক ব্যক্তির ট্রেনের মাথায় চড়ে বৈদ্যুতিক তার ছুঁয়ে আত্মহত্যা করার একটি মর্মান্তিক ভিডিও মুম্বইয়ের ঘটনা বলে অনলাইনে ভুল ভাবে শেয়ার করা হচ্ছে।
ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, একটি এক্সপ্রেস ট্রেন স্টেশনে এসে দাঁড়ালে এক ব্যক্তি তার মাথায় চড়ে এবং তারপর দু হাত দিয়ে মাথার উপরের তার ছোঁয়ার চেষ্টা করতে থাকে। কয়েক মুহূর্ত পরে তার হাতজোড়া ওই তার ছুঁয়ে ফেলে, আর তার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার গোটা শরীর দাউদাউ করে আগুনে জ্বলে যায়।
ভিডিওর দৃশ্যটি খুব অস্বস্তিকর বলে বুম এটি তার প্রতিবেদনের অন্তর্ভুক্ত করছে না।
ভিডিওটি পশ্চিম রেলওয়ের মালাদ স্টেশনের বলে চালানো হচ্ছে। ফেসবুক পোস্টে তার হিন্দি ক্যাপশনটি এ রকম, "মুম্বইয়ের মালাদ স্টেশনে এক ব্যক্তি ট্রেনের ছাদে চড়ে বিদ্যুতের তার ছুঁয়ে আত্মহত্যা করছে, তার ভিডিও দেখুন।"
(মূল হিন্দিতে ক্যাপশন: "मुंबई के मलाड स्टेशन पर एक युवक ने ट्रेन की छत पर चढ़के, बिजली की तार छू कर की आत्महत्या। देखें वीडियो में।")
ফেসবুক পোস্টটি এখানে দেখা যাবে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
এই একই ভিডিও এর আগে টুইটারেও ভাইরাল হয়েছিল। কিন্তু নেটিজেনরা ঘটনাটিকে পশ্চিমবঙ্গের মালদা শহরের ঘটনা বলে ধরিয়ে দেওয়ার পর সেটি তুলে নেওয়া হয়।
তথ্য যাচাই
আমরা একটি প্রাসঙ্গিক অনুসন্ধান চালাই এবং দেখি যে ভিডিওটি ১৭ নভেম্বর মালদা স্টেশনে ঘটা একটি আত্মহত্যার ঘটনার।
মিলেনিয়াম পোস্ট রিপোর্ট করেছে, ঘটনাটি ১৭ নভেম্বরের, যখন ওই লোকটি মালদা টাউন স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা নিউ দিল্লি-ফরাক্কা এক্সপ্রেসের ছাদে গিয়ে চড়ে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের একটি অংশ অনুযায়ী, "সূত্রের খবর, রবিবার, ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ নিবাসী এক ব্যক্তি বিনোদ ভুঁইয়া (৪০) প্ল্যাটফর্মে তার স্ত্রী ও তিন সন্তানের সঙ্গে অপেক্ষা করছিল। তার পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনও পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া শুরু হয়। ঝগড়ার মধ্যেই বিনোদ হঠাত করে প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষমাণ নিউ দিল্লি-ফরাক্কা এক্সপ্রেসের মাথায় চড়ে যায়। তার স্ত্রী এবং ট্রেনের অন্য যাত্রীরা চিৎকার করে তাকে নেমে আসতে অনুরোধ করে। মালদা টাউন স্টেশনের স্টেশন মাস্টার দিলীপ চৌহানকেও খবর দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও সাহায্য এসে পৌঁছনর আগেই বিনোদ গিয়ে হাই-ভোল্টেজ তার ছুঁয়ে ফেলে এবং তার সারা গায়ে আগুন ধরে যায়।"
বিনোদের শরীরের ৯০ শতাংশই দগ্ধ হয়ে যায় এবং তাতেই তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে একটি স্থানীয় সংবাদ বুলেটিনও আপনারা দেখে নিতে পারেন।