না, জামিয়ায় গুলিবিদ্ধ ছাত্রের ক্ষত ভুয়ো নয়
বুম সেই ষড়যন্ত্রের তত্ত্বকে খণ্ডন করে, যা দাবি করে গুলিবিদ্ধ ছাত্রটি কেচাপ-এর বোতল ব্যবহার করে রক্তপাত দেখিয়েছে।
বৃহস্পতিবার জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শাদাব ফারুকের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ছবি ভেসে উঠতে-না-উঠতেই একটি লাল প্লাস্টিককে গোল করে দেখিয়ে সোশাল মিডিয়ায় একটি ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব ভাইরাল করা হয় যে, ফারুকের আহত হওয়ার ব্যাপারটা মেকি।
৩০ জানুয়ারি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে জমায়েত একদল ছাত্রকে লক্ষ্য করে এক বন্দুকবাজ গুলি চালায়। ফারুকের বাঁ হাতে গুলি লাগে এবং তাকে শুক্রবার অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্স থেকে চিকিত্সার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। বন্দুকধারী যেহেতু একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক, তাই ভারতীয় আইন অনুসারে তার পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে মোতায়েন দিল্লি পুলিশের এক বিশাল বাহিনীর সামনেই কয়েক ফুট দূরে এই দুঃসাহসী হামলার ঘটনা গোটা দেশকে স্তম্ভিত করে দেয়। কিন্তু সোশাল মিডিয়ায় অনেককেই দেখা গেছে আততায়ী ও পুলিশের প্রতি সহানুভূতি জ্ঞাপন করতে।
সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আহত শাদাবকে এক মহিলা ধরে-ধরে নিয়ে যাচ্ছেন এবং ছবিতে একটি লাল প্লাস্টিককে গোল করে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বেশ কয়েকজন ছবির ক্যাপশনে এমনও সন্দেহ প্রকাশ করেছে যে, আক্রমণটি সাজানো ছিল এবং ফারুক তার আহত হওয়ার গোটা ঘটনাটাই সাজিয়েছে।Thank God the bottle was there, #Jamia scientists says TOMATO KETCHUP is the best First Aid medicine. pic.twitter.com/eo5lohikhL
— MECHYMANISH (@mechymanish) January 30, 2020
ऐसा कैसे है की जिसे गोली लगी उसे कोई देख भी नहीं रहा, सब अपने अपने रोल निभा रहे हैं।
— Vivek Ranjan Agnihotri (@vivekagnihotri) January 31, 2020
कम से कम कोई तो होगा जिसका कुदरती केच अप बॉटल देख के मन ललचाया होगा। pic.twitter.com/Xxhobi3dzq
दोस्तों, इस कुदरती केच अप बोतल के बारे में कुछ पता चला?
— Vivek Ranjan Agnihotri (@vivekagnihotri) January 31, 2020
इतना ही पता चल जाए कौन से अस्पताल में पट्टी बंधी? क्या गोली हाथ को छू के निकली बिना ज़ख्म?
क्या कोई बताएगा की सत्य क्या है? pic.twitter.com/OqMN4ww2I8
Portable bottle with blood transfer ability https://t.co/xPBoCi3fUR
— Rahul Roushan (@rahulroushan) January 30, 2020
ফারুক গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ছবি তোলা এক আলোকচিত্রী মহম্মদ মেহেরবান-এর সঙ্গে বুম যোগাযোগ করে। আমরা সেই ফোটো বিশ্লেষণ করে দেখেছি, লাল প্লাস্টিকটি একটি জলের বোতল, কোনও কেচাপ-এর বোতল নয়।
"আমার লাল জলের বোতল:" মিধাত সামরা, আহত ফারুকের সঙ্গে থাকা জামিয়ার ছাত্রী
"একটি ছেলে দৌড়ে আসছিল হাতে পিস্তল নিয়ে। সে কিছু একটা চেঁচিয়ে বলছিল এবং তার হাতে পিস্তল দেখে অনেকেই তার দিকে ছুটে যায়। শাদাবও তখন তার দিকে ছুটে গিয়ে তাকে শান্ত করার চেষ্টায় বলে—'পিস্তলটা নীচে করো।'
"যখন তৃতীয় বার শাদাব ওকে পিস্তল নামিয়ে রাখতে বলে, তখনই সে গুলি করে। গুলির শব্দ শুনেই আমি ফারুকের দিকে ছুটে যাই এবং তাকে নিয়ে নিকটবর্তী হোলি ফ্যামিলি হাসপাতালের দিকে দৌড়তে থাকি আর পুলিশকে চিত্কার করে বলতে থাকি ব্যারিকেড সরিয়ে নিতে। কিন্তু পুলিশ ব্যারিকেড সরায়নি। ফারুক যখন তার রক্তাক্ত হাতটা দেখিয়ে পুলিশকে জানায় যে সে আহত, তখন পুলিশ বলে ব্যারিকেডের উপর দিয়ে ডিঙিয়ে যাও। ফারুকও অগত্যা ব্যারিকেড ডিঙিয়েই হোলি ফ্যামিলি হাসপাতালের দিকে চলে যায়।"
সামরার এই বিবরণ সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবিতে সমর্থিত হয়েছে। সেখানে আহত শাদাব ফারুককে স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে পুলিশের ব্যারিকেড ডিঙিয়ে হাসপাতালের দিকে যেতে এবং সামারা হাতে লাল জলের বোতল নিয়ে তার পিছনে-পিছনে চলেছেন।
The fact that @DelhiPolice didn't even bother to open the barricade for the injured says a LOT about their seriousness and how law and order is nothing but a JOKE to them!
— Khyati Singh (@JustKhyati) January 30, 2020
Shame.#Jamia pic.twitter.com/mUkVOusBFk
সামারা তার লাল জলের বোতলের একটা ছবিও বুমকে পাঠিয়েছেন, যা ভাইরাল হওয়া ছবির বোতলের সঙ্গে হুবহু এক এবং সেটা জলেরই বোতল; কেচাপ-এর নয়, যেমনটা ভাইরাল টুইটগুলিতে মিথ্যা দাবি করা হচ্ছে।