ইয়েমেনে ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তির প্রকাশ্য প্রাণদন্ডকে দুবাইয়ের ঘটনা বলা হচ্ছে
বুম দেখে ইয়েমেনে তোলা হয়েছিল ভিডিওটি। সেখানে এক শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যা করার অপারাধে এক ব্যক্তিকে প্রাণদন্ড দেওয়া হয়েছিল।
এক বালিকাকে ধর্ষণ করার অপরাধে এক ব্যক্তির প্রাণদন্ড প্রকাশ্যে কার্যকর করার মতো ভয়ঙ্কর এক ভিডিও এখন সোশাল মিডিয়ায় প্রচার করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বলা হচ্ছে, ঘটনাটি ঘটেছে দুবাইয়ে, যেখানে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটার কিছুক্ষণের মধ্যেই সে দেশের বিচারকরা লোকটির প্রাণদন্ড ঘোষণা করেন।
হায়দরাবাদে ২৬ বছর বয়সী এক পশুচিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যা যখন দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছে এবং মেয়েদের নিরাপত্তার বিষয়টি আবার সামনে এসেছে, ঠিক সেই সময় এই ভিডিওটি শেয়ার করা হচ্ছে। ২৮ নভেম্বর, এক বীভৎস ঘটনায়, চারজন লোক হায়দ্রাবাদের পশুচিকিৎসককে প্রথমে ধর্ষণ করে, তারপর তাকে হত্যা করে তার দেহ পুড়িয়ে দেয়।
১ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের ভাইরাল ভিডিওটিতে এক পুলিশ অফিসারকে খুব কাছ থেকে অভিযুক্ত লোকটিকে গুলি করে মারতে দেখা যায়। সমবেত জনতার সামনেই লোকটির মরদেহ একটি ক্রেনের সঙ্গে বেঁধে উঁচু করে ঝুলিয়ে রাখা হয়। ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, "৫ বছরের মেয়েকে ধর্ষণ করা হয় দুবাইয়ে…ওই ঘটনার ১৫ মিনিটের মধ্যে, কোর্ট অপরাধীকে প্রকাশ্যে গুলি করে মারার নির্দেশ দেয় পুলিশকে…"
ভিডিওটির বীভৎসতার কারণে বুম ভিডিওটিকে এই প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করেনি।
একই ধরনের বয়ানে ভিডিওটি ২০১৮ থেকে ফেসবুক আর টুইটারে ভাইরাল হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
আমরা ভিডিওটির প্রধান ফ্রেমগুলি আলাদা করে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। তার ফলে, ইউটিউবে আপলোড করা ওই একই ভিডিওটি সামনে আসে। সেটির ক্যাপশন ছিল পোর্তুগিজ ভাষায়। তাতে বলা হয় ঘটনাটি ইয়েমেনের রাজধানী সানায় ঘটেছিল।
নীচে ওই ভিডিওর একটি স্ক্রিনশট দেওয়া হল।
প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করলে, ওই ঘটনা সংক্রান্ত একাধিক রিপোর্ট উঠে আসে। 'দ্য স্টার অনলাইন' নামের এক মালয়শীয় সংবাদ ওয়েবসাইটে ওই ঘটনার কিছু ছবিও আপলোড করা হয়েছিল জুলাই ২০১৭ সালে।
তবে ধর্ষণ করার ১৫ মিনিটের মধ্যেই অভিযুক্তকে প্রাণদন্ড দেওয়া হয় কিনা, তা প্রকাশিত রিপোর্টগুলি থেকে স্পষ্ট হয় না।
ঘটনাটি ঘটে ইয়েমেনে। অভিযুক্তকে মহম্মদ আল মঘরাবি বলে শনাক্ত করা হয়। সে দেশের রাজধানী সানায়, কয়েক'শ মানুষের সামনে তাকে ৩১ জুলাই গুলিকরে প্রাণদন্ড কার্যকর করা হয়। একটি তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণ করার অভিযোগে সে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল।
'ইন্ডিপেন্ডেন্ট-এর একটি প্রতিবেদনের শিরোনামে বলা হয়, "তিন বছরের মেয়েকে ধর্ষণ ও হত্যা করার অভিযোগে দোষী ব্যক্তিকে মেশিনগান দিয়ে মারা হয়।" রিপোর্টটিতে বলা হয়, শারিয়া আইন অনুযায়ী প্রাণদন্ড কার্যকর করা হয়। হত্যার সাজা হিসেবে মৃত্যুদন্ডই দেওয়ার কথা বলা আছে তাতে, কিন্তু কিভাবে তা কার্যকর করা হবে, তা স্পষ্ট করে বলা নেই। প্রতিবেদনটি এখানে পড়ুন।
'নিউজ-১৮'-এর এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ধর্ষণকারীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর হওয়ার পর, বাচ্চা মেয়েটির বাবা বলেন, "মনে হচ্ছে আমার পুনর্জন্ম হল; খুবই স্বস্তি বোধ করছি।