বাজারে কী দাঁতাল পিরানহা? ফের বিভ্রান্তিকর দাবিতে ছড়াল পাকু মাছের ছবি
বিভিন্ন মৎস বিশেষজ্ঞরা বলছেন রুপচাঁদা বা পাকু মাছ রক্ষণাত্মক মাংসাশী নয়। ভারতীয় গবেষণায় ভোজ্য গুণের সন্ধান পাওয়া গেছে।
Claim
সোশাল মিডিয়ায় পাকু মাছের ছবি ছড়িয়ে বিভ্রান্তিকর দাবি করা হচ্ছে সেগুলি পিরানাহা জাতীয় দাঁতাল মাছ যা খেলে বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতা হতে পারে। ভাইরাল হওয়া ফেসবুক পোস্টে লেখা হয়েছে, “#সতর্কবার্তা পিরানহা একটি মানুষ খেকো মাছ। এই মাছটি মাংসাশী। যেখানে পিরানহা মাছ হয় সেখানে একটি মানুষ নামলে সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট সময় লাগবে আস্ত মানুষটিকে হজম করতে।বর্তমানে অনেকেই চুপি চুপি এই মাছ পুকুরে চাষ করতেছে। আর সেই ভয়াবহ মাছগুলো ধরতে হয় পুকুরে বিষ ঢেলে। চেনার উপায় সামনের দাঁত গুলো অবিকল মানুষের দাঁতের মত। খাওয়ার পর যেসমস্ত রোগ হয় ১/ফুসফুস ক্যান্সার,২/ ব্রেন ক্যান্সার,৩/ স্ট্রোক। যদি কেউ এই মাছ বিক্রি করে, সরকারী বিধি মোতাবেক তাকে জেল, জরিমানা করার বিধান রয়েছে। অথচ প্রকাশ্য পুকুরের চাঁন্দা মাছ বলে সাধারণ জনগণকে ধোকা দিয়ে প্রসাশনের নাকের ডগায় বাজারে এই মাছ বিক্রি হচ্ছে।”
FactCheck
বুম দেখে এই মাছগুলি রুপচাঁদা, রুপচাঁদ মাছ বা পাকু মাছ নামে পরিচিত। লাল পেটের পাকু মাছের বিজ্ঞানসম্মত নাম পিয়ারাকটাস ব্রাঞ্চায়পোমাস (Piaractus brachypomus)। ২০১৯ সালে একই ছবি ভাইরাল হলে বুম সে সময় পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকোয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. তাপস কুমার ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি আমাদের বলেছিলেন, "রুপচাঁদা বা পাকু মাছ রক্ষণাত্মক মাংসাশী নয়। সেভাবে দেখলে ভেটকি মাছের চাষও ক্ষতিকারক। বদ্ধ জলাশয়ে চাষ করা যেতে পারে।" তাপস ঘোষ আরও বলেন, "মাছের চাষ আসতে আসতে জনপ্রিয় হলে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এসব মাছে ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড থাকায় হার্টের পক্ষে বরং ভালো বলা যায়। মাছটি সুস্বাদু হওয়ায় ইতিমধ্যে কলকাতার বাজারে ছেয়ে গেছে।’’ অপরদিকে পিরানহা মাছের বিজ্ঞানসম্মত নাম পাইগোসেন্ট্রাস নাটারেরি (Pigocentrus nattereri) বা লাল পেটের পিরানহা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মাংসাশী বা রক্ষনাত্মক বলা হয়। এটি ক্যারিকাসাইডি (caricacidae) ফ্যামিলির অন্তর্গত। সব পিরানহা প্রজাতি রক্ষনাত্মক নয়। তামিলনাড়ু মৎস বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ফেলিক্স ২০২০ সালে দ্য হিন্দুকে বলেন, ভারতের কৃষি ও মৎস সংক্রান্ত গবেষণাপত্রকে উল্লেখ করে জানান পাকু মাছের ভোজ্য গুণের সন্ধান পাওয়া গেছে।