কোচবিহারের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করে দাবি যে সেটি ত্রিপুরার ঘটনা
আসল ভিডিওটি ২৮ জুন দিনহাটার পেটলার। বিজেপি সমর্থকদের তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। গোরক্ষকদের গরুবোঝাই গাড়ি আটকানো নিয়ে বচসা শুরু হয় দুই দলের মধ্যে।
ভাইরাল হওয়া ফেসবুক পোস্টে একটি ভাঙচুরের ঘটনা পোস্ট করে দাবি করা হয়েছে ভিডিওটি ত্রিপুরার ধর্মনগরের। আসলে ভিডিওটি পশ্চিমবঙ্গে কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার পেটলা এলাকার।
১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে একদল দুষ্কৃতকারীদের টিনের দেওয়ালের একটি ঘরকে লাঠি দিয়ে আক্রমন করতে দেখা যাচ্ছে। বাড়িটির দেওয়াল সংলগ্ন পতাকা তোলার বেদী থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
পোস্টটিতে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, ''সবকা সাথ সবকা বিকাশের নগ্ন রুপ! না, এটা বিহার, গুজরাট ও উত্তর প্রদেশের চিত্র নয়। এটা শান্তির রাজ্য ত্রিপুরার ধর্মনগরে। গতকাল ধর্মনগরের গেরুয়া সন্ত্রাসীদের তান্ডব বিস্তারিত ভিডিও দেখুন''
এই প্রতিবেদনটি লেখার সময় পর্যন্ত ৬,৫৫২ জন দেখেছে এই ভিডিওটি। শেয়ার করেছেন ১০৩ জন। পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
১ জুলাই ২০১৯ অন্য একটি ফেসবুক পোস্ট বুমের নজরে আসে। পোস্টটিতে ক্যাপশন লেখা ছিল, 'এবার দেশের এই হাল।'
(মূল হিন্দী তে পোস্টটি: 'अब ये हालत है मुल्क़ की।')
একই ভিডিও সহ আর একটি পোস্ট বুমের নজরে আসে। ভাইরাল হওয়া ওই পোস্টটিতেও ক্যাপশন লেখা হয়, 'দিনহাটায় তান্ডব গেরুয়াবাহিনীর।' ৩০ জুন ২০১৯ পোস্ট করা হয় ফেসবুকে।
ওই দিনই বর্ধমান টিভি নামে জেলার একটি স্থানীয় চ্যানেল থেকে এটিকে দিনহাটার ঘটনা বলে দাবি করা হয়।
বুম কুচবিহারের এক সাংবাদিকের সাথে যোগাযোগ করে। তিনি বলেন, "এটা দিনহাটা পেটলা এলাকার ঘটনা, সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের একটি পার্টি অফিস ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে।"
কী হয়েছিল পেটলাতে
বুম কোচবিহার জেলার স্থানীয় সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলে যাচাই করে দেখেছে ২৮ জুন শুক্রবার ওই ঘটনা ঘটে কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার অন্তর্গত পেটলাতে। তৃণমূলের পার্টি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ করা হয় বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
সংবাদ প্রতিদিন-এর প্রতিবেদনে প্রকাশ, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা দিনহাটার পেটলায় গরু বোঝাই একটি গাড়ি আটকে দেয় এলাকার গোরক্ষক বাহিনীর কয়েকজন যুবক। চালকের কাছে কাগজপত্র চেয়ে হেনস্থা করা হয় তাকে। দুই পক্ষের বাদানুবাদের ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীরা পরস্পরের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে। পুলিশের গাড়িতেও হামলা চালানো হয়। বিস্তারিত পড়া যাবে এখানে।
বুম কোচবিহারের এসপি অভিষেক গুপ্তকে বার্তা পাঠিয়েছে, তার প্রত্যুত্তর পাওয়া গেলে প্রতিবেদনটি সংস্কার করা হবে।
ধর্মনগর সংঘর্ষ
ত্রিপুরায় আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে চলেছে ২৭ জুলাই। মনোনয়ন পত্র তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ১ জুলাই থেকে। রবিবার উত্তর ত্রিপুরা জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার কাছে ধর্মনগরের পশ্চিম চন্দ্রপুর গ্রামে বিজেপি ও সিপিএম কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জন ব্যক্তি আহত হন। ১৫ টি মটর বাইক ও একটি ছোট গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। বিস্তারিত পড়া যাবে এখানে ও এখানে। ইতিমধ্যে, ত্রিপুরায় ৮২ শতাংশ পঞ্চায়েত আসনে বিনা নির্বাচনে বিজেপি জয়লাভ করেছে।