গোমাংস নিয়ে যাবার অজুহাতে মধ্যপ্রদেশে গোরক্ষকদের তাণ্ডবের শিকার ৩
মধ্যপ্রদেশ পুলিশ বুমকে বলেছে- একজন হিন্দু ও দুজন মুসলিম গোমাংস নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত ও আক্রমনকারীদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
স্বঘোষিত গোরক্ষকরা দুজন পুরুষ ও এক মহিলাকে গোমাংস নিয়ে যাওয়ার সন্দেহে পেটালো। মধ্যপ্রদেশের সিওনি জেলার ২২ মে ২০১৯ এর ঘটনা। তাদের ‘জয় শ্রী রাম’ বলতে বাধ্য করা হয়। আক্রমনের শিকার একজন মহিলা ও একজন পুরুষ মুসলমান আপরদিকে অন্য পুরুষটি হিন্দু।
মধ্যপ্রদেশ পুলিশ তিনজনকেই গোমাংস বহনের অভিযোগে গ্রেফতার করেছে। অবশ্য যারা আক্রমন করেছে তাদের ৫ জনকেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
এই নক্কারজনক ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে সোশ্যাল মিডিয়ায় দুটি ভিডিও ২৪ মে ২০১৯ ভাইরাল হবার পর।
একটি ভিডিওতে অভিযুক্ত পুরুষ ব্যক্তিকে খুটিতে বেঁধে কাঠের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে দেখা যায়। অন্য ভিডিওটিতে দেখা যায়, আক্রমনকারীদের হতে বন্দি মহিলাকে জুতো দিয়ে পেটাতে পেটাতে ‘জয় শ্রী রাম’ বলতে বাধ্য করা হচ্ছে।
এই ভিডিওটি যাচাই করার জন্য ট্যুইটারে আমাদের কিছু পাঠক ট্যাগ করেছিলেন। আমরা সিওনি জেলার পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে দুন্ডার থানার পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
বুমস কি দুন্ডা থানায় থানায় যোগাযোগ করলে একজন পুলিশ আধিকারিক পরিচয় গোপনের শর্তে এঘটনা নিয়ে বিস্তারিত জানান আমাদের।
“ঘটনাটি ঘটে ২২ মে (২০১৯)” ওই পুলিশ আধিকারিক বলেন।
“দুজন পুরুষ ও একজন মহিলা সহ তিনজনের একটি দল গোমাংস নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। স্বঘোষিত গোরক্ষদের একটি দল তাদের প্রলুব্ধ করে এবং তিনজনকে আটক করে লাঠি দিয়ে পেটায়।”
তিনি বুমকে আরও বলেছেন, ওই তিনজনকে আক্রমনের পরে গোরক্ষকরা তাদের ওখানে শাসানি দেয় পুলিশকে জানালে চরম পরিনতির জন্য প্রস্তুত থাকতে।
“যাইহোক, আমরা ঘটনাটির খবর পেয়েছিলাম। আমরা তাগের গ্রেফতার করি। প্রথমে ওই তিনজনকে গোমাংস বহনের অপরাধে। পরে আমরা ওই আক্রমনকারীদের সবাইকেও গ্রেফতার করি। ”ওই পুলিশ আধিকারিক বলেন।
বাজেয়াপ্ত মাংস হায়দ্রাবাদের ল্যবে পাঠানো হয়েছে মাংসটি গোমাংস ছিল কীনা, ওই আধিকারিক বলেন।
ওই আক্রমনকরীদের কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগ আছে কিনা ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে ওই আধিকারিক কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি।
যদিও, ওই আক্রমনে প্রসঙ্গে উঠে আসা একটি বিশেষ গোষ্ঠীর জড়িত থাকার নাম বলায় তিনি বলেন ওই আক্রমনকারীদের একজন ওই গোষ্ঠীর সদস্য।
একজন আক্রমনকরী, দাগী অপরাধী, শ্রী রাম সেনার সদস্য
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একজন পুলিশ আধিকারিক বলেন
বুম একজন আক্রমনকারীর ফেসবুক প্রোফাইল পরীক্ষা করা দেখেছে যা ট্যুইটারে একজন ভিডিও সহ ট্যুইট করেন। পরে তিনি ওই ট্যুইটার ব্যবহারকারী ডিলিট করে দেন।
আমরা খুঁজে পেয়েছি ওই ভিডিওতে আক্রমনে নেতৃত্ব দেওয়া শুভম সিং নামে ওই ব্যক্তি একই।
শুভম সিং তার ফেসবুক পেজে সন্ত্রাসবাদে অভিযুক্ত প্রজ্ঞা ঠাকুর-এর সঙ্গে তোলা ছবি আপলোড করেছে। প্রজ্ঞা ঠাকুর সম্প্রতি ভূপাল থেকে নির্বাচিত হয়ে লোকসভার সাংসদ হয়েছেন।
তার ফেসবুক প্রোফাইলের আরও অনেক ছবি দেখায় তার সঙ্গে শ্রী রাম সেনার সম্পর্ক।
বুম ভিডিওটি হিংসাত্মক হওয়ায় এখানে দিচ্ছে না।