ফ্যাক্ট চেক
‘জাগুয়ারের বদলে অডিতে চড়েই আসতে হল’: সত্যি কি সুহানা খান এ কথা বলেছেন?
না, সুহানা খান জাগুয়ার-এর বদলে অওডিতে চড়তে বাধ্য হওয়া নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেননি মোটেও। ‘ফেকিং নিউজ’ নামের একটি স্যাটায়ার ওয়েবসাইট মজার ছলে এই লেখাটি প্রকাশ করে।
‘ভোগ ইন্ডিয়া’-র কভার শুট করেছিলেন সুহানা। আর সেই উপলক্ষ্যেই FakingNews.com সুহানা খানকে নিয়ে এই মজার লেখাটি প্রকাশ করে। বহু নেটিজেন অবশ্য ইয়ার্কিটা ধরতেই পারেননি। তাঁরা খবরটাকে সত্য মনে করে শেয়ার করেছেন। এটি যে নিছকই একটি বানানো খবর, তার কোনও ব্যাখ্যা ছাড়াই নিবন্ধটির স্ক্রীনশট হোয়াটসঅ্যাপে শেয়ার হতে থাকে। তবে, সবাই বোকা বনেননি। কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়াতেই পোস্ট করে জানিয়েছেন, যে ভাবে বহু মানুষ একটা ব্যঙ্গাত্মক লেখাকে সত্যি ভেবে শেয়ার করে চলেছেন, তাতে তাঁরা বিস্মিত। টুইটার ব্যবহারকারী সায়ান সাপুই টুইট করেন যে বেশির ভাগ লোকই যে বিশ্বাস করছে সুহানা খান সত্যিই বলেছে যে জাগুয়ারের বদলে অওডিতে চড়ে আসতে বাধ্য হওয়াটা রীতিমত ঝঞ্ঝাটের ছিল, সেটা দেখে তিনি স্তম্ভিত। এটা ফেকিং নিউজ-এর একটা মজার খবর ছাড়া আর কিছুই নয়। ফেসবুক আর হোয়াটসঅ্যাপে যে স্ক্রিনশট আর মেসেজ আসে, তার সবক’টাকেই বিশ্বাস করবেন, আবার অভিযোগ করবেন যে মিডিয়া আপনাদের নিজেদের স্বার্থে খেয়ালখুশি অনুযায়ী চালাচ্ছে, লেখেন সায়ন। অগস্টে ভোগ ইন্ডিয়া-র প্রচ্ছদে শাহরুখ খানের কন্যা সুহানা খানের ছবি ছাপা হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ফের বলিউডের স্বজনপোষণের সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। ম্যাগাজিনে ওই আঠারো বছর বয়সীকে বলা হয়েছে ‘ছাত্রী, থিয়েটার-ভক্ত, আর ভবিষ্যতের তারকা’। এ বছর জুনে ভোগ ইন্ডিয়ার প্রচ্ছদে (Click here) প্রয়াত শ্রীদেবীর কন্যা জাহ্নবীর ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। তবে, সেই ছবি ঘিরে এমন উত্তপ্ত আলোচনা শুরু হয়নি। অগস্টের ২ তারিখ ফেকিং নিউজের ওয়েবসাইটে নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়। প্রসঙ্গত, ফেকিং নিউজ ওয়েবসাইটটি নেটওয়ার্ক ১৮-এর ফার্স্টপোস্ট-এর অধীনে। তার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল শেয়ার হতে থাকে লেখাটি। নিবন্ধটির লেখক হিসেবে দেওয়া হয়েছিল একটি টুইটার হ্যান্ডল— @jurnoleast সেই হ্যান্ডল-এর বায়োতে স্পষ্ট লেখা ছিল ‘স্পুফ। হিউমার। সারকাজম।’ অর্থাৎ, লেখক যে সত্যি খবর লেখেন না, বরং পুরোটাই ইয়ার্কি, তা স্পষ্ট ভাবেই বলা। উপরন্ত, ফেকিং নিউজ এর About us অংশে স্পষ্ট লেখা রয়েছে এটি একটি স্যাটায়ার ওয়েবসাইট এবং এখানে প্রকাশিত ‘খবর’-কে খবর হিসেবে গুরুত্ব দেওয়ার কোনও কারণ নেই। ইয়ার্কির ছলে নিবন্ধটি সুহানা খানের মুখে বেশ কিছু কথা বসায়। তার কয়েকটা উদাহরণ: “বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন ভোগ-এর প্রচ্ছদে আসার জন্যে আমাকে যথেষ্ট সংগ্রাম করতে হয়নি। কিন্তু আমি বলছি, হাজার হাজার নিউকামারদের চেয়ে আমার জীবন একটুও ভিন্ন নয়।” —ফেকিং নিউজ “তার ফটোশুটের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে সুহানা জানায়, “এটা আমার জন্য একটা কঠিন দিন ছিল। আমার জাগুয়ার খারাপ হয়ে গেল। এবং আমাকে অওডিতে চেপে স্টুডিও অবধি যেতে হল। স্টুডিওটাও ছিল দোতলায়, এবং বিল্ডিংয়ে একটা লিফট অবধি ছিল না। তাই আমাকে সিড়ি ভেঙেই উঠতে হল। পুরো পাঁচ মিনিট কাটাতে হল শহরের এই বিশ্রী গরম আর আর্দ্রতার মধ্যে।’’ —ফেকিং নিউজ ওয়েবসাইটটার নাম ‘ফেকিং নিউজ’ হওয়া সত্ত্বেও বহু ফেসবুক ইউজারই এই খবরটাকে সত্যি ভেবে শেয়ার করলেন, আর তাতে জুড়়ে দিলেন নিজেদের তীর্যক মন্তব্যও। কেউ লিখছেন, ‘সুহানার দুঃখের কথা শুনে আমার চোখে জল চলে এল। আবার কেউ বললেন, ‘সুহানার এক দিনের সংগ্রামের তুলনায় আমাদের গোটা জীবনের দুঃখকষ্টও তুচ্ছ।’
Next Story