অসমে এক মহিলাকে বেত্রাঘাত করার বীভৎস ক্লিপ পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা বলে ভাইরাল হল
একটি ভাইরাল ভিডিয়োতে দাবি করা হল, রোহিঙ্গা মুসলমানরা পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের ওপর অত্যাচার করছে। এই ভিডিয়োটি আসলে অসমের। সংবাদে প্রকাশ, গ্রামের মাতব্বরদের নির্দেশেই এই মহিলাকে বেত্রাঘাত করা হয়েছিল।
দু’বছর পুরনো একটি ভিডিয়ো ফের ভাইরাল হল। সঙ্গে মিথ্যে দাবি। ভিডিয়োটিতে দেখা যাচ্ছে যে একটি লোক এক মহিলাকে জনসমক্ষে নির্মম ভাবে বেত্রাঘাত করছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োটিতে দাবি করা হল, ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গের। বুম অনুসন্ধান করে জেনেছে, ভিডিয়োটি আসলে অসমের।
ভিডিয়োটির সঙ্গে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘রোহিঙ্গা মুসলমান অধ্যুষিত এলাকার বাসিন্দা হিন্দুদের ওপর শরিয়া আইন অনুসারে অত্যাচার করা হচ্ছে।’
(মূল হিন্দি: पश्चिम बंगाल में शरिया कानून के तहत लोगों पे हो रहे अत्याचार ज्यादातर बांग्लादेशी रोहिंग्या मुसलमान बहुल क्षेत्रों रहे हिन्दुओं पर अत्याचार पर कोई सुनने वाला नहीं है|)
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যাচ্ছে যে একটি লোক এক মহিলাকে নির্মম ভাবে মারছে। দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েক জন লোক দাঁড়িয়ে ঘটনাটি দেখছে, এবং স্থানীয় ভাষায় কথা বলছে। এক সময় মহিলাটি মাটিতে পড়ে যান, কিন্তু লোকটি মারতেই থাকে। খানিক পরে আর এক জন লোক ও অন্য এক মহিলা এসে নিগৃহীত মহিলাকে তুলে নিয়ে যান। ভিডিয়োটিতে অনেকের হাসির শব্দ শুনতে পাওয়া যাচ্ছে।
এই ভিডিয়োটিতে যে দৃশ্য দেখা যাচ্ছে, তা মর্মান্তিক। তাই আমরা এখানে ভিডিয়োটি শেয়ার করছি না। ভাইরাল ক্লিপটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম অনুসন্ধান করে দেখতে পায়, ২০১৭ সালে ইন্ডিয়া টুডে-তে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল, যাতে এই একই ভিডিয়ো ছিল। প্রতিবেদনটিতে লেখা হয়েছিল যে এই ঘটনাটি অসমের নগাঁও জেলার ধিং গ্রামের। ঘটনাটি সম্বন্ধে বিস্তারিত ভাবে পড়তে পারেন এখানে।
বুম আরও একটি সংবাদ প্রতিবেদনের সন্ধান পায় যাতে অসমের এই ঘটনাটির উল্লেখ ছিল। সংবাদে প্রকাশ, নিগৃহীত মহিলাকে কোনও তুচ্ছ অপরাধের জন্য গ্রামের বয়ঃজ্যেষ্ঠদের আদেশে এমন নির্মম ভাবে মারা হয়েছিল। তবে, মহিলা ঠিক কী করেছিলেন, তা জানা সম্ভব হয়নি। প্রতিবেদনটি এখানে পড়া যেতে পারে।
ভিডিয়োটিতে যে পুরুষ ও মহিলাকে দেখা যাচ্ছে, তাঁদের পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। যাঁরা দাঁড়িয়ে ঘটনাটি দেখছিলেন, তাঁদের এক জনকে দেখে ধর্মে মুসলমান বলে মনে হয়। তবে, এই ঘটনাটি সাম্প্রদায়িক সংঘাতের নয় বলেই মনে হয়।