জনতাকে ল্যাপটপ বিতরনের আশ্বাস দিয়ে হাজতে আইআইটি-র স্নাতকোত্তর ছাত্র
হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হওয়া একটি বার্তা মারফত এই প্রস্তাব দেওয়ায় বহু লোক তাতে ঠকে গিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য ভুয়ো ওয়েবসাইটে জমা দিয়েছেন।
‘নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্বে পুনর্নির্বাচন উপলক্ষে’ মুফতে ল্যাপটপ বিলি করার ঠগবাজি করে কানপুর আইআইটি-র এক প্রাক্তন ছাত্র ২০১৯-এর ২ জুন দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন।
বিজেপির চমকপ্রদ নির্বাচনী সাফল্য এবং নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্বে পুনরভিষেকের পর-পরই বুম তার হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইনে একটি বার্তা পায়, যাতে বলা হয়, সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির অধীনে ২ কোটি লোককে বিনামূল্যে ল্যাপটপ বিলি করা হবে।
বার্তাটিতে আরও দাবি করা হয় যে, ৩০ লক্ষ যুবক ইতিমধ্যেই এই কর্মসূচিতে ল্যাপটপ হাতে পেয়ে গেছেন।
বার্তাটিতে একটি ওয়েবসাইটের সংযোগও (লিংক) দেওয়া হয়, যেখানে সরলমনা লোকেরা তাঁদের ব্যক্তিগত খুঁটিনাটি তথ্য জমা করতে থাকেন। সংযোগটি খুললে যে ওয়েবসাইট খোলে, তাত প্রধানমন্ত্রীর একটি ছবি দিয়ে ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মুফত ল্যাপটপ বিতরণ যোজনা-২০১৯।
বার্তাটি কেবল হোয়াটসঅ্যাপ ভাইরাল হয়নি, ফেসবুক এবং টুইটারেও বহু লোক সেটি শেয়ার করতে থাকেন।
তথ্য খননের আর এক কেলেঙ্কারি
দিল্লি পুলিশের আইপিএস অফিসার মধুর ভার্মা একটি টুইটে জানিয়েছেন, এই ভুয়ো বার্তাটি ছড়ানোর জন্য দায়ী ব্যক্তিকে ২ জুন ২০১৯-এ গ্রেফতার করা হয়েছে।
কানপুর আইআইটি-র ২০১৯ ব্যাচের ২৩ বছর বয়স্ক স্নাতকোত্তর ছাত্র রাকেশ জাঙ্গিদ-কে রাজস্থানের নগৌর জেলায় তাঁর নিজের শহর থেকেই ২ জুন গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, গুগল অ্যাডসেন্স মারফত টাকা রোজগারের লক্ষ্যেই এই ওয়েবসাইটটি খোলা হয়।
দিল্লি পুলিশ পিটিআইকে জানিয়েছে, জাঙ্গিদের লক্ষ্য ছিল, ওয়েবসাইট মারফত লোকেদের ব্যক্তিগত খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করে নেওয়া। তাঁর মতলব ছিল, অতঃপর সেই তথ্যগুলো সাইবার অপরাধীদের কাছে সরবরাহ করে বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে এবং সরলমনা লোকেদের কাছ থেকে চাপ দিয়ে টাকাপয়সা আদায় করে নেওয়া।
পুরো ঘটনাটির তদন্ত এখনও চালু রয়েছে, যেহেতু পুলিশ সন্দেহ করছে, এর পিছনে আরও অনেকের জড়িত থাকার সম্ভাবনা।
এই প্রথম যে এমন কেলেংকারি হোয়াটসঅ্যাপ মারফত ভাইরাল হল, এমনও নয়।
২০১৮ সালের জুলাই মাসে এমনই একটি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা ভাইরাল হয় যে, ভারত সরকার বিনা পয়সায় জনসাধারণকে সাইকেল বিতরণ করছে। কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপের বার্তা ‘এনক্রিপ্ট করা’ থাকায় সচরাচর এই ধরনের কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্তদের খুঁজে পাওয়া কিংবা গ্রেফতার করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে।