ভাইরাল ভিডিও ইসকন অনুগামীদের মমতা ব্যানার্জিকে ভোট দিতে বলছে; দূরত্ব বজায় ইসকনের
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ইসকন বলেছে, “ওই ভিডিও তৈরি/প্রচারের সঙ্গে ইসকন কোনও ভাবেই যুক্ত নয়”
![](https://bangla.boomlive.in/wp-content/uploads/sites/3/2019/03/ISKCON-FEatured-Final.jpg)
‘ইন্ট্যারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস’ (ইসকন) জানিয়েছে যে, তারা রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা অবলম্বন করে চলে এবং কোনও রাজনৈতিক দল বা নেতাকে সমর্থন করে না। একটি ভিডিও পশ্চিমবঙ্গে ইসকন অনুগামীদের মমতা ব্যানার্জির পক্ষে ভোট দেওয়ার আর্জি নিয়ে সোশাল মিডিয়ার প্রচার হতে থাকলে, ইসকন ওই বিজ্ঞপ্তি দেয়।
সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগ বলে যে, মিডিয়া রিপোর্ট থেকে একটি ভিডিওর অস্তিত্বের কথা তারা জেনেছে, যাতে নাকি ইসকনের তৈরি ওই তথাকথিত ভিডিওতে পশ্চিমবঙ্গে ইসকন অনুগামীদের একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করার আবেদন করা হয়েছে।
মার্চ ৩০, ২০১৯-এ দেওয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ইসকন সবসময়/এবং এখনও সব রাজনৈতিক দলগুলি থেকে সমদূরত্ব বজায় রেখেছে এবং কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দল/নেতাকে অন্যদের তুলনায় বেশি গুরুত্ব দেয় না।”
ওই প্রেস রিলিজে, ইসকনের ন্যাশনাল ডিরেক্টর অফ কমিউনিকেশন বা জাতীয় জনসংযোগ ডিরেক্টর যুধিষ্ঠির দাস বলেন, “মিডিয়া রিপোর্টগুলি বিভ্রান্তিকর। এবং আমরা দ্বর্থহীনভাবে জানাতে চাই যে, ওই ভিডিও তৈরি/প্রচারের সঙ্গে ইসকন কোনও ভাবেই যুক্ত নয়।
পুরো বিবৃতিটা নীচে দেওয়া হল।
![](https://bangla.boomlive.in/wp-content/uploads/sites/3/2019/03/WhatsApp-Image-2019-03-31-at-8.16.15-AM-700x957.jpeg)
বাংলা দৈনিক ‘সংবাদ প্রতিদিন’ ওই একই ভিডিও মার্চ ২৯, ২০১৯ তারিখে ইউটিউবে আপলোড করে।
গৌড়ীয় বৈষ্ণবধারার প্রবক্তা শ্রীল ভক্তি বিনোদা ঠাকুর এক ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে নদীয়ার মায়াপুর শ্রীধামে এক বর্ণাঢ্য মন্দির তৈরি হবে। কী করে তা বাস্তব হল, সে কথা তুলে ধরা হয়েছে ওই ২.১৩ মিনিটের ভিডিওতে।
শ্রীল প্রভুপাদ কী ভাবে তাঁর অনুগামীদের মায়াপুরে একটি ধর্মীয় কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য কয়েক’শ একর জমি জোগাড় করতে বলেছিলেন, সে কথা বর্ণনা করা হয়েছে ওই ভিডিওতে। তারপর উল্লেখ করা হয়েছে মমতা ব্যানার্জির অবদানের কথা—কী ভাবে উনি জমির সিলিং তুলে দিয়ে তা সম্ভব হতে সাহায্য করেন। পরিশেষে, ভাষ্যকার ইসকনের ভক্তদের উদ্দেশে বলেন, ‘তাঁরা যেন বিচক্ষণতার সঙ্গে সেই নেতাকেই ভোট দেন, যিনি অসময়ে তাঁদের পাশে থেকেছেন’। সঙ্গে ভক্তবৃন্দ সহ মমতা ব্যানার্জীর ছবি দেখা যায়।
ভাইরাল ভিডিওটি তৈরির পেছনে কার হাত আছে, তা পরিষ্কার জানা যায় নি।
উইকেন্ড হওয়ার ফলে, কোনও টিএমসি মুখপাত্রকে তাঁর মতামতের জন্য পাওয়া যায় নি।
বুম যুধিষ্ঠির গোবিন্দ দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে। উনি বলেন, “আমি প্রথমে ‘ইন্ডিয়া টুডে’তে একটা রিপোর্ট দেখি। তাতে, এক ভিডিওর কথা উল্লেখ করে, একটি বিশেষ পার্টির প্রতি আমাদের আনুগত্যের কথা বলা হয়। তাদের কলকাতার প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করে আমি নিশ্চিত হই যে, সেটি আমাদের তৈরি ভিডিও নয়। কারা সেটি তৈরি করেছে সে বিষয়েও আমার কোনও ধারণা নেই। তবে, আমরা ইতিমধ্যেই ওই ভিডিও নির্মাতাদের খুঁজে বার করার জন্য বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছি।”
‘ইন্ডিয়া টুডে’ পরে ইসকনের বক্তব্য ছাপে।
বুম আরও দেখে যে, ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ প্রকাশিত একই ধরনের খবর সোশাল মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে। ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর ওয়েবসাইটে ভিডিওটির জন্য ইসকনকে ক্রেডিট দেওয়া হয়েছে। এই প্রতিবেদনটি লেখার সময় পর্যন্ত ওই ওয়েবসাইটে কোনও রকম সংশোধন করা হয়নি।