অক্সফোর্ড আভিধানে লেখা আছে ‘ইন্ডিয়া মানে ইসলাম নে দি ইস মুল্ক কি আজাদি’ দাবিটি ভুয়ো
অক্সফোর্ড আভিধানে এরকম কিছু লেখা নেই। ইন্ডিয়া নামের উৎস ইন্দুস নদীর ‘ইন্দুস’ থেকে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি পোস্টে দাবি করা হয়ছে। ভারতের নাম অক্সফোর্ড ডিক্সেনারি অনুযায়ী, “INDIA মানে ইসলাম নে দি ইস মুল্ক কি আজাদি।”
পোস্টটিতে লেখা হয়েছে, "ভারতের অপর নাম INDIA কেন..? (Meaning টা কেবল প্রতিকী-মুসলিমদের অবদান বোঝাতে ব্যবহার করা হয়েছে-ভুল বুঝবেন না) ১. আমেরিকাকে ইংরেজিতে America বলে। ২. জাপানকেও ইংরেজিতে Japan ই বলে। ৩. ভুটানকেও ইংরেজিতে Bhutan ই বলে।…. ইংরেজিতে Pakistan বলে। তবে একমাত্র ভারতকেই ইংরেজিতে India বলা হয়
কেন?? অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এর ডিকশনারি থেকে নেওয়া. INDIA এর মিনিং নিম্নরূপ দেওয়া হল:
I, ইসলাম।N, নে।D, দি।I, ইস মূলক কো। A, আজাদী। অর্থাৎ "ইসলাম নে দি ইস মুলক কো আজাদী" (ইসলামই এই দেশকে স্বাধীনতা দিয়েছে।) এই হলো India এর মিনিং।…"
এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত ২০৮ জন লাইক, ৪০ জন শেয়ার ও ৪১৬ জন মন্তব্য করেছেন ওই পোস্টটিতে। পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে। মূল পোস্টটির স্ক্রিনশট নীচে দেওয়া হল।
তথ্য যাচাই
বুম অক্সফোর্ড ডিক্সেনারি অনুসন্ধান করে দেখেছে। সেখানে ‘ইসলাম নে দি ইস মুলক কো আজাদী’ থেকে ‘ইন্ডিয়া’র উৎপত্তি হয়েছে এরকম কিছু লেখা নেই।
উৎস হিসাবে সেখানে লেখা হয়েছে,
‘‘গ্রিক থেকে লাতিনে ইন্দুস নদীর ‘ইন্দুস’ থেকে ইন্ডিয়া, পারস্য ভাষায় ‘হিন্দ’ সংস্কৃত ‘সিন্ধু’ নদী থেকে, বিশেষত ‘দ্য ইন্দুস’ ও ইন্দুস তীরবর্তী অঞ্চল। গ্রিক ও পারসিক উভয় ভাষাতে ইন্দুস পূর্ব দিকের দেশ। হিন্দি ও হিন্দুর তুলনার সঙ্গে।’’
মূল ইংরাজিতে লেখাটি হল,
“Origin
Via Latin from Greek India, from Indos, the name of the River Indus, from Persian Hind, from Sanskrit sindhu ‘river’, specifically ‘the Indus’, also ‘the region around the Indus’ (compare with Sindhi). Both the Greeks and the Persians extended the name to include all the country east of the Indus. Compare with Hindi and Hindu.”
বুম অক্সফোর্ড অভিধানকে ইমেলে যোগাযোগ করে। যদিও তারা এখনও কোন ইমেলের উত্তর পাঠাননি।
বুমের তরফে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপিকা নূপুর দাশগুপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি জানালেন, “নবম শতকে বাগদাদের বিখ্যাত চিকিৎসক- পণ্ডিত রব্বান আল-তাবারি, অল-রাজী এবং ইবন সেনা তাঁদের রচনায় ভারতের চিকিৎসা বিজ্ঞানের কথা লিখতে গিয়ে ‘হিন্দ’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন।
একাদশ শতকে আল-বিরুনি তার লেখাতে ‘হিন্দু’ শব্দের উল্লেখ করেছেন। তারও আগে সিন্ধু বা ইন্দাসের ওপর দিকের অংশকে উল্লেখ করা হয়েছে এই নামে। পারস্য উচ্চারনে ‘হ’ এর ভাষাগত বিবর্তন ‘হিন্দ’ কথাটির উদ্ভব উপেক্ষা কার যায়না।”