ফ্যাক্ট চেক
ত্রিকোণ প্রেমকে সাম্প্রদায়িক টুইস্ট বারাসাতে?
নোয়াপাড়া, নেতাজি পল্লী, বারাসতের বাসিন্দা, পুরবী এই ভিডিওটিতে অভিযোগ করেছেন যে তিনি একজন মুসলিম ব্যেক্তি, তার মা এবং বান্ধবীর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল।
পুরবী ব্যানার্জি নামে একজন মহিলার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে। ভিডিওতে পুরবী অভিযোগ করেছেন যে, তাঁকে একজন 'মুসলিম ব্যেক্তি' মারধর করে। ভিডিওটি লাইভ শুট করা হয় এবং প্রচুর পরিমাণে ফেসবুক গ্রুপে শেয়ার করা হয়। ভিডিওতে পুরবীকে ক্রন্দনরত অবস্থ্যায় ন্যায়ের জন্যে আবেদন করতে দেখা যায়। নোয়াপাড়া, নেতাজি পল্লী, বারাসতের বাসিন্দা, পুরবী এই ভিডিওটিতে অভিযোগ করেছেন যে তিনি একজন মুসলিম ব্যেক্তি, তার মা এবং বান্ধবীর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল। তিনজন বারাসাতে তার বাড়িতে ঢুকে তাঁকে মারধর করে। এই ভিডিওটি সোশ্যাল নেটওয়ার্ক গ্রুপগুলিতে ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হয়েছিল, এবং নিমেষের মধ্যে ১৫ লাখেরও বেশি ভিউস পায়। এখানে ‘আমরা সনাতনি’ পাবলিক গ্রুপ থেকে ভিডিও দেখুন। ভিডিওর আর্কাইভ করা লিঙ্ক এখানে পাবেন। ঘটনার পর পুরবী স্থানীয় বারাসাত থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পরে তিনি অভিযোগ করেছেন যে, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের হস্তক্ষেপের কারণে বিষয়টি নিশ্চিতভাবে ধামাচাপা দেওয়া হয়। এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেননি। ভিডিওর মূল উদ্দেশ্য তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ এবং তাদের ‘মুসলিম তোষণ' নীতিতে খনন। অপরদিকে, দ্বিতীয় একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে যা প্রধানত পুরবীর থানার থেকে ফেরার পরে শুট করা হয়। ভিডিওটিতে পুরবী অভিযোগ করেছেন যে রাহুল মণ্ডল ওরফে মুশাররফ হোসেন এবং তার বান্ধবী রিদ্ধি ওরফে চুমকি রায়ের মধ্যে পুরবীকে নিয়ে একটি বচসা বাধে। ভিডিও থেকে জানা যায় যে, পুরবী ও রাহুল অর্কেস্ট্রা ডান্সার এবং তাদের ঘনিষ্ঠতা চুম্কির কাছে একটু অপ্রিয় হয়ে দাঁড়ায়। পরে চুম্কি তাকে হুমকি দেয়, রাহুল ওরফে মুশাররফ হোসেনের জীবন থেকে চলে যাওয়ার জন্যে। পুরবী নিজের হাতে বিষয় নেওয়ার সিধান্ত নেন, এবং একটি গ্রুপকে নিয়ে চুমকির বাড়িতে হানা দেন। অপমান সহ্য না করতে পেরে, চুমকি এবং রাহুল পুরবীকে আক্রমণের চেষ্টা করে। তখনই পুরবী রাহুল ও চুম্কির বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করার সিদ্ধান্ত নেন বারাসাত থানায়। দ্বিতীয় ভিডিওটি এখানে দেখে নিন। যা স্পষ্ট হল – একটি ত্রিকোণ প্রেমের খোলসা। বুম পুরবীকে যোগাযোগ করে, কিন্ত তিনি এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চান নি। ভিডিওতে, পুরবীর মতে, তৃনমূলের নেতাদের হস্তক্ষেপের জন্যে স্থানীয় পুলিশ কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি। বারাসাত থানার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এএসআই আব্দুল্লাহ বিশ্বাস বলেন, "আমরা এমন কোন অভিযোগ পাইনি গত সপ্তাহে। কেউ যদি এফআইয়ার করতে আসে আমরা তাদের ফিরিয়ে দিতে পারি না। সে ক্ষমতা আমাদের নেই। এছাড়াও, প্রায়ই আমরা লোকেদের অপেক্ষা করতে বলি, তাদের সাথে কথা বলার জন্য, সিনেয়রদের সাথে পরামর্শ করার জন্যে, বিষয়টি সম্পর্কে অবমাননাকর তথ্য জানাতে এবং তারপর একটি পদক্ষেপ নিতে বলি। অভিযোগকারী অনেক সময় অপেক্ষা করতে অস্বীকার করে।" স্থানীয় তৃণমূল নেতাকেও বুম যোগাযোগ করার চেষ্টা করে! তার কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেলে প্রতিবেদনটি আপডেট করা হবে।
Next Story