না, এই কৃত্রিম আলোকসজ্জার ভিডিওটি চন্দননগরের নয়
মূল ভিডিওটি তুরস্কের ইস্তানবুলের গালাটা টাওয়ারের আলোকসজ্জার। ২০১৮ সালের এপ্রিলে ইস্তনাবুল যুব উৎসব উপলক্ষে প্রদর্শিত হয়েছিল ওই আলোর কারিকুরি।
সোশাল মিডিয়ায় থ্রি-ডি ও লেসার আলোকসজ্জার তুরস্কের একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে সেটি চন্দননগরের আলোকসজ্জার কেরামতি। দীপাবলিতে পশ্চিমবঙ্গের চন্দননগরে নাকি দেখানো হচ্ছে ওই আলোর বাহার।
১ মিনিট ৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে একটি স্থাপত্যের গায়ে মনমুগ্ধকর আলোর কারিকুরি। দেখলে মনে হবে ওই টাওয়ারটি হয়ত ভেঙে পড়বে। পরক্ষণে রঙিন আলোর বাহার। বর্ণময় বল যেন সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসছে। আবার সেই টাওয়ারের স্থাপত্যেই যেন মহাকাশের নক্ষত্র আলোর চলাচল।
ভাইরাল হওয়া ফেসবুক পোস্টটিতে ক্যাপশন লেখা হয়েছে,‘‘ চন্দননগরের নতুন আলোকসজ্জা৷৷ New Deepavali Lighting- Chandannagore, WB’’
পোস্টগুলির দাবি পাশ্চিমবঙ্গের চন্দননগরে দীপাবলিতে ওই আলেকসজ্জা দেখানো হচ্ছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত ৪ লক্ষ ২০ হাজার জন দেখেছেন। ২,৬০০ জনের বেশি শেয়ার করেছেন ওই ভিডিও। লাইক করেছেন ১৮,০০০ জনের বেশি।
ফেসবুক পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
ফেসবুকে অন্যান্য গ্রুপেও একই ক্যাপশন সহ ভাইরাল হয়েছে ওই বাহারি আলোর ভিডিওটি।
ফেসবুকে ভাইরাল
তথ্য যাচাই
বুম যাচাই করে দেখেছে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি আদেও চন্দননগরের আলোকসজ্জার ভিডিও নয়। মূল ভিডিওটি তুরস্কের ইস্তানবুলের গালাটা টাওয়ারের থ্রিডি ম্যপিং ও লেসার আলোর ভিডিও। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে ইস্তনাবুল যুব উৎসব উপলক্ষে সুদর্শন আলোক কৌশলের প্রদর্শন করা হয়েছিল, ওই মধ্যযুগীয় রোমান স্থাপত্যের নিদর্শন— গালাটা টাওয়ারে।
গেটটি ইমেজেস-এ তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনন্দলু এজেন্সীর ইউনুস এমরি গুনাইদিনের তোলা ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিলের ওই গালাটা টাওয়ারে আলোক প্রদর্শনের ভিডিও দেখা যাবে এখানে। ওই উৎসবের আরও ছবি দেখা যাবে এখানে।
গালাটা টাওয়ারের ওই আলো প্রদর্শনের ভিডিও ইউটিউবে খুঁজলেই পাওয়া যায়। নীচে একইরকম একটি ভিডিও দেওয়া হল। ১ মিনিট ১৯ সেকেন্ড সময় থেকে দেখা যাবে ওই একই দৃশ্য।
উপরন্তু বুম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির ছবির সঙ্গে গালাটা স্থাপত্যের গঠনগত মিল মিলিয়ে দেখেছে তা থেকে নিশ্চিতরূপে বলা যায় ভিডিওটি গালাটা টাওয়ারেরই।
তবে রাজ্যের অন্য কোথাও এই আকারের কৃত্রিম টাওয়ার তৈরি করে এই ধরনের আলোর প্রদর্শন করা হচ্ছে কিনা অথবা আসন্ন জগদ্ধাত্রী পুজো উপলক্ষে প্রদর্শন করা হবে কিনা তা বুমের পক্ষে স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
ক্যানসার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে, যেমন— স্তন ক্যানসার নিয়ে সচেতনতায় গোলাপি ও প্রস্টেট ক্যানসারের সচেতনতায় নীল আলোয় সাজানো হয়েছিল গালাটা টাওয়ার।
সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি থেকে সাম্প্রতিক ঘটনাবালী চন্দননগরের আলোকসজ্জার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। সে আলোর বাহার শুধুমাত্র ফরাসডাঙ্গার বিখ্যাত জগদ্ধাত্রী পুজোতেই প্রদর্শন হয়না, সে আলোর রোশানায় শারোদৎসব, দীপাবলি এবং কালী পুজোয় ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তেও।