অসমের গণপ্রহারের ভিডিও সাম্প্রদায়িক ব্যাখ্যা দিয়ে ভাইরাল
ভাইরাল হওয়া পোস্টে দাবি করা হয়েছে, নিহত ব্যক্তি হিন্দু জঙ্গিদের শিকার l কিন্তু করিমগঞ্জ পুলিশ এই সাম্প্রদায়িক ব্যাখ্যা মানতে নারাজ
ফেসবুক ও টুইটারে শেয়ার হওয়া আসামের একটি পোস্টে দেখা যাচ্ছে, গুরুতর আহত এক ব্যক্তি রাস্তার উপর পড়ে আছে । সঙ্গে একটি ভুয়ো বিবরণ, যা জানাচ্ছে ব্যক্তিটি হিন্দু জঙ্গিদের দ্বারা প্রহৃত হয়েছে । ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, লোকটির শরীর থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে । ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে — লোকটি মুসলমান, যাকে আরএসএসের লোকেরা পিটিয়ে মেরেছে । স্থানীয় পুলিশ অবশ্য বুমকে জানিয়েছে, লোকটিকে স্রেফ চোর সন্দেহে লোকেরা পেটায়, জখম অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে পরদিন সে মারা যায় । পুলিশ ঘটনাটির মধ্যে কোনও সাম্প্রদায়িক ব্যাপার খুঁজে পায়নি ।
জনৈক নাদিম খান ২০ জানুয়ারি ফেসবুকে একটি ২৫ সেকেন্ডের ভিডিও পোস্ট করেন, যাতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা এক ব্যক্তির মাথা থেকে রক্তক্ষরণ হতে দেখা যাচ্ছে । সঙ্গে ক্যাপশন দেওয়া হয়—“করিমগঞ্জে গণপ্রহারে আরও একজনের হত্যা । সঙ্ঘিরা আবদুল মতিনকে হত্যা করেছে”। ছবিটির একটি স্ক্রিনশট নীচে দেওয়া হলঃ
পোস্টটি ২০০ জন শেয়ার করেছে এবং প্রায় ৬০০০ জন দেখেছে । টুইটারেও একই ক্যাপশন ভাইরাল হয়েছে, তবে তার ভিডিওটিতে দুটি ক্লিপ ব্যবহার করা হয়েছে— যার একটিতে কিছু লোক একজনকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে চলেছে, আর অন্যটি রাস্তায় রক্তাক্ত পড়ে থাকা ব্যক্তির । দুটি ক্লিপ একই ঘটনার কিনা, বুম সেটা যাচাই করে দেখতে সক্ষম হয়নি ।
One more Mob lynching.. This time in Karimganj Assam ..
— Md Asif Khan آصِف (@imMAK02) January 20, 2019
Abdul Mateen lynched by mob ... pic.twitter.com/bKTHUmZcid
তথ্য যাচাই
বুম দুটি ভিডিও ক্লিপই বিশ্লেষণ করে দেখেছে এবং করিমগঞ্জ পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে । করিমগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইনম সইকিয়ার বক্তব্য—“দ্বিতীয় ক্লিপটির লোকটি একটি চোর, যাকে স্থানীয়রা বেধড়ক পেটায় । লোকটির নাম আবদুল মতিন—একটা মামুলি চোর । ১৮ জানুয়ারি একটি স্কুল থেকে লোহার গ্রিল চুরি করার সময় স্থানীয় লোকেরা তাকে ধরে ফেলে বেদম প্রহার করে । মার খেয়ে প্রাণভয়ে পালানোর সময় সে পড়ে যায় এবং আরও জোর চোট পায় । ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে, যেখানে পরদিন সে মারা যায় । পুলিশ দুজনকে গ্রেফতারও করেছে । তবে ঘটনাটির মধ্যে কোনও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের ব্যাপার নেই, স্রেফ চোর বলেই লোকে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে তাকে পেটায়” ।
করিমগঞ্জ পুলিশ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে টুইটও করেছে ।
Prompt action was taken by Karimganj Police by detaining 2 suspects for assaulting Abdul Motin. Victim got admitted in SMC. Abdul was caught while selling the govt. iron gates. Case is registered, situation is under control. Karimganj Police is maintaining proper law and order.
— Karimganj Police (@karimganjpolice) January 20, 2019
সইকিয়া আরও জানান, তাঁরা ভিডিওর অন্য ক্লিপটি বিশ্লেষণ করে দেখছেন, যাকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সে আর প্রহৃত চোরটি একই ব্যক্তি কিনা ।