না, ধৃত সন্ত্রাসবাদী তার স্বীকারোক্তিতে আরএসএসের নাম উল্লেখ করেনি
তিন বছরের পুরনো এই ছবির ধৃত সন্ত্রাসবাদী নাকি স্বীকার করেছে, আরএসএসের কাছ থেকে সে অস্ত্র ও টাকাপয়সা পেয়েছে
দু জন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হেফাজতে বন্দি এক সন্ত্রাসবাদীর ২০১৬ সালের পুরনো ছবি দেখিয়ে বলা হচ্ছে, সে নাকি স্বীকার করেছে, আরএসএস তাকে অস্ত্রশস্ত্র ও অর্থ দিয়েছিল হিন্দুদের মারতে, যাতে সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ছড়ানো যায় ।
ছবিটির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, জীবন্ত ধরা পড়া এক কাশ্মীরি সন্ত্রাসবাদী জিজ্ঞাসাবাদের সময় স্বীকার করেছে, আরএসএস তাকে অর্থ এবং অস্ত্র জোগায় এবং হিন্দুদের হত্যা করতে বলে যাতে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের বিষ বপন করা যায় ।
জনৈক কিরণ যাদবের ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করা এই পোস্টটি আলাদা করে কোনও দাবি করেনি । কিন্তু পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার পরে-পরেই তিন মাসের পুরনো এই পোস্টটি নতুন করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার পক্ষে যথেষ্ট ।
তথ্য যাচাই
তার ছবিটির স্ক্রিনশট অনুসন্ধান করে বুম তার গ্রেফতার হওয়ার বেশ কয়েকটি রিপোর্ট সংবাদমাধ্যমে খুঁজে পায় । প্রতিটি রিপোর্টেরই শিরোনাম ছিল, এই ব্যক্তি একজন পাকিস্তানি জঙ্গি, যে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে । রিপোর্টগুলির তারিখ ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর ।
উপরে যে লিংকগুলি শেয়ার হয়েছে সেগুলি থেকে এবং সংবাদ-রিপোর্ট থেকেও স্পষ্ট, ভিডিওতে যে দাড়িওয়ালা লোকটিকে দেখা যাচ্ছে, তার নাম আবদুল কায়ুম । সে জম্মু-কাশ্মীরের আখনুর সেক্টর থেকে ধরা পড়েছিল ২০১৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ।
কায়ুম স্বীকার করেছে যে সে ২০০৪ সালে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের মুজফ্ফরাবাদের মনসেরায় লস্কর-ই-তৈবার প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল ।
গত বছরেই তার আরএসএস সংশ্রবের গল্পটা সোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো ব্যাখ্যা দিয়ে চালু করা হয়, যখন সে দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানদের হাতে বন্দি ছিল । এমনকী কায়ুমের সঙ্গে কংগ্রেস দলের যোগসাজশের গল্পও অন্য কয়েকটি পোস্টে ছড়ানো হয় ।
কায়ুম তার স্বীকারোক্তিতে লস্কর-ই-তৈবার সঙ্গে যোগাযোগের কথাই শুধু স্বীকার করেছে । কিন্তু কোথাওই, কোনও সংবাদ বা রিপোর্টে আরএসএস কিংবা কংগ্রেস দলের সঙ্গে তার যোগাযোগের প্রসঙ্গ ওঠেনি ।