ভারতের ইভিএম কী জাপানে তৈরি?
ভারতের ভোটিং মেশিন তৈরি করে, ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড ও ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ফেসবুক পোস্টে দাবি করা হয়েছে, জাপান ভারতের ইভিএম মেশিন তৈরি করে। এবং জাপানের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ব্যালট ব্যাবহার করা হয়। ওই পোস্টের সঙ্গে দেওয়া ছবিতে, ভোট কক্ষে দুজন মহিলাকে ব্যালট বাক্সে ব্যালট পেপার ফেলতে দেখা যাচ্ছে। ছবিটিতে লেখা রয়েছে, জাপানিরা আমাদের কাছে ইভিএম বিক্রি করে, অথচ নিজেরা ব্যালটে ভোট দেয়।
পোস্টটিতে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, ‘ব্যাপারটা খুব গোলমেলে’
৩২৭ জন লাইক ও ২৯৫ জন শোয়ার করেছেন। পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
বুম রিভার্স সার্চ করে জেনেছে, পোস্টে ব্যবহৃত ব্যালটে ভোট দেওয়ার ছবিটি ২০১৮ সালে বিভিন্ন প্রতিবেদনে ব্যবহার করা হয়েছিল। আইন সংস্কার করে জাপানে ওই বছর ভোটদাতাদের নূন্যতম বয়স ২০ বছর থেকে কমিয়ে ১৮ বছর করা হয়। ১৯৪৫ সালে প্রথমবার প্রাপ্তবয়স্ক ভোটদাতাদের বয়স ২৫ বছর থেকে কমিয়ে ২০ বছর করা হয়েছিল।
ভারতের ইভিএম মেশিন কী জাপানে তৈরি?
ভারতের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত ভোটিং মেশিন তৈরি করে, ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড ও ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া। ভারতের নির্বাচন কমিশনের ওয়াবসাইটে সে তথ্য দেওয়া আছে।
১৯৮০ সালে এমবি হানিফা প্রথম ভারতের ভোটিং মেশিন তৈরি করেন। ১৯৮১ সালে কেরলে প্রথম ভোটিং মেশিনের ব্যবহার শুরু হয়। ১৯৮৯ সালে নির্বাচন কমিশন ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড ও ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়াকে মেশিন তৈরির বরাত দেয়। আআইটি বম্বে ওই মেশিনের কৌশলগত নক্শা তৈরি করে। ২০১১ সালে অধুনা ভিভিপ্যাট যুক্ত ভোটিং মেশিনের উদ্ভাবন ঘটানো হয়।
জাপানে ভোট কী ব্যলটে হয়?
২০০২ সালে বিশেষ আইন প্রণয়নের মাধ্যমে জাপানের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) প্রয়োগ শুরু হয়। যদিও তা কেবলমাত্র স্থানীয় নির্বাচনে সীমাবদ্ধ ছিল। ধরনা করা হয়েছিল ইভিএম ভোট গণনা ত্রুটিমুক্ত রাখতে ও গণনা প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করবে। কিন্তু ইভিএম প্রোমোশন কো-অপারেশন অ্যাসোসিয়েশন সময়ের সঙ্গে খরচের কথা মাথায় রেখে মেশিনের অধুনিকীকরনে অসম্মত হয়। জাপানের রোকুনহি পৌরসভা ২০১৮ সালের নির্বাচনে মেশিনের বদলে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটোর সিদ্ধান্ত নেয়। একমাত্র এই পৌরসভাতেই জাপানে সর্বশেষ ইভিএমে ভোট প্রক্রিয়া বহাল ছিল। যদিও জাতীয় নির্বাচনে ভোটিং মেশিনের ব্যবহার থেকে জাপান বিরত ছিল।