না, ‘মোদি অ্যাপেল’ নামটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামে দেওয়া হয়নি
সোশাল মিডিয়ায় একটি ভাইরাল পোস্টে দাবি করা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার এক ব্যবসায়ী প্রধানমন্ত্রীর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের ব্যবসার নাম দিয়েছে মোদি
একটি জনপ্রিয় আপেলের নাম মোদি, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম থেকে সেটির নামকরণ হয়নি, যদিও সোশাল মিডিয়া পোস্টে তেমনটাই দাবি করা হয়েছে।
প্রখ্যাত শিল্পী অ্যামেডিও ক্লেমেন্ট মোদিগ্লিয়ানির নাম থেকেই নামকরণ হয়েছে ওই প্রজাতির আপেলের। নগ্ন ছবি আঁকার জন্য উনি বিখ্যাত হয়েছিলেন। তাঁর ছবিতে বেশ চড়া মাত্রায় লাল রঙের ব্যবহার ছিল।
সপ্তাহশেষে বুম বেশ কয়েকটি হিন্দি পোস্ট দেখতে পায় যাতে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার এক ব্যবসায়ী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বারা এতটাই প্রভাবিত হয়েছিলেন যে, উনি নিজের আপেল ব্যবসার নাম দেন মোদি।
হিন্দিতে বলা হয়েছিল: “मेलबॉर्न, ऑस्ट्रेलिया : नरेंन्द्र मोदी जी से प्रभावित फिलिपो ने अपने नए सेब के व्यवसाय को मोदी के नाम पर रखा। भारत के बाजारों में भी मिलेगा ये सेब।
বেশ কয়েকটি ফেসবুক আর টুইটার পেজ পোস্টটি শেয়ার করে। পোস্টগুলির আরকাইভ সংস্করণ এখানে , আর এখানে দেখা যাবে। আর ফেসবুক পোস্টটি দেখা যাবে এখানে ।
তথ্য যাচাই
ওই জাতের আপেল একটি শঙ্কর প্রজাতির ফল। ইতালির কনসরজিও ইতালিয়ানো ভিভাইস্টি (সিআইভি) ২০০৭ সালে ‘লিবার্টি’ আর ‘গালা’ দুই ধরনের আপেলের মিলন ঘটিয়ে এক শঙ্কর প্রজাতি তৈরি করে।
ভুয়ো পোস্টে ‘ফিলিপো’ বলে যাঁর উল্লেখ আছে, তিনি হয়তো সিআইভি’র চেয়ারম্যান পিয়ের ফিলিপ্পো তাগ্লিয়ানি।
বুম ‘মোদি অ্যাপেল অস্ট্রেলিয়া’র’ অফিসিয়াল পেজও খুঁটিয়ে দেখে। দেখা যায়, মোদি বলতে সেখানে যাঁকে বোঝানো হয়েছে, তিনি হলেন একজন বিখ্যাত শিল্পী, আমেদিও মোদিগ্লিয়ানি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নন।
ওই ওয়েবসাইটের ‘অ্যাবাউট’ পেজে ‘অ্যাপেল’ সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা আছে।
“The unusual name comes from the world of art, more exactly from Amedeo Modigliani, an artist born in Livorno and affectionately known as Modì to his friends; he was famous for his portraits of women painted using intense red earth colours, just like those of the Modì Apple.”
বাংলায় এর মানে দাঁড়ায়, “এই বিচিত্র নামটি এসেছে আর্টের দুনিয়া থেকে।আরও নির্দিষ্টভাবে, আমেদিও মোদিগ্লিয়ানি থেকে। উনি একজন আর্টিস্ট, যিনি জন্মেছিলেন লিভোর্নো’য়, যাঁর বন্ধুরা তাঁকে মোদি বলে ডাকত। তাঁর আঁকা মেয়েদের ছবির জন্য উনি খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। আর সে সব ছবিতে উনি বেশ চড়া ধরনের লাল প্রাকৃতিক রঙ ব্যবহার করতেন, ঠিক মোদি আপেলের রঙের মত।”
আমেদিও মোদিগ্লিয়ানি ছিলেন একজন ইতালীয় ইহুদি আর্টিস্ট ও ভাস্কর। ১৯২০ সালে তাঁর মৃত্যুর পর, তাঁর কাজ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তাঁর উল্লেখযোগ্য ছবিগুলির মধ্যে হল ‘রেডহেডেড গার্ল ইন ইভনিং ড্রেস’, ‘জান হিবিটার্ন ইন রেড শল’, এবং ‘মাদাম পম্পাদুর’।
বুম অস্ট্রেলিয়ায় মোদি অ্যাপেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাঁদের ওয়েবসাইটে যা বলা আছে, সে কথারই পুনরাবৃত্তি করেন তাঁরা। বলেন, আমেদিও মোদিগ্লিয়ানির নামই অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে নামকরণে।
ভাইরাল ছবির রিভার্স ইমেজ সার্চ
একাধিক ছবি দেওয়া হয়েছে ওই ভাইরাল পোস্টের সঙ্গে, যাতে দাবি করা হয়েছে, নরেন্দ্র মোদীই মোদি অ্যাপেলের প্রেরণা।
আমরা ছবিগুলির রিভার্স সার্চ করি। দেখা যায় সেগুলির বেশিরভাগই কম্পানির ফেসবুক পেজ বা টুইটার হ্যান্ডেল থেকে তোলা হয়েছে।