না, ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলার জন্য কংগ্রেস কর্মীদের ওপর পুলিশ কোনও লাঠিচার্জ করেনি
ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসকর্মীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের একটি পুরনো ভিডিওটিতে একটা পাকিস্তানের অ্যাঙ্গেল দেওয়া হয়েছে
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ছত্তিশগড়ের বিলাসপুরে গত বছর সেপ্টেম্বরে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের কর্মীদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করছে। লাঠিচার্জের ওই দৃশ্যটিই ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যাচ্ছে, যেন কংগ্রেসকর্মীরা প্রতিবাদ করতে গিয়ে পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দেওয়ায় পুলিশের হাতে মার খাচ্ছে।
২৯ সেকেন্ডের ভিডিও ক্লিপে দেখা যাচ্ছে কংগ্রেস কর্মীদের পুলিশ ভ্যানে তোলার সময় তাদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ হচ্ছে বৃষ্টির মতো। বহু ফেসবুক ব্যবহারকারী এই ছবিটিই শেয়ার করেছে।
ওই পোস্টের সঙ্গে একটি বিভ্রান্তিকর লেখায় দাবি করা হচ্ছে যে, কংগ্রেসকর্মীরা একটা মিটিঙে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগান দিচ্ছিল। ঠিক সেই সময় ওই প্রতিবাদের ওপর নজর রাখার জন্য যে সব পুলিশকর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছিল, তারা হস্তক্ষেপ করে। এবং দলের কর্মীদের পিটিয়ে পুলিশ জাতীয় কর্তব্য পালন করেছে বলে পোস্টগুলিতে দাবি করা হয়েছে।
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটি ফ্রেমে-ফ্রেমে ভেঙে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে। সেই সার্চ বা অনুসন্ধানে দেখা যায় - ছত্তিশগড়ে পুলিশ ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ তে কংগ্রেস কর্মীদের দ্বারা সংঘটিত প্রতিবাদ বিক্ষোভটি যখন ভেঙে দিচ্ছিল, ওই ভিডিওটি ছিল সেই সময়ে তোলা। প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া’র রিপোর্ট অনুযায়ী ওই ঘটনায় ৫২ জন কংগ্রেসকর্মী গ্রেপ্তার হয় এবং ৭ জন আহত হয়।
কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধী ওই ভিডিওটির সমালোচনা করে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী রমন সিং’র উদ্দেশে টুইট করেছিলেন।
ওই ঘটনা নিয়ে আমরা অনেকগুলি নিউজ রিপোর্টও দেখতে পাই। যেগুলি সেইসময়ে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপেস ,দ্য হিন্দু , ইন্ডিয়া টুডে ,প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া’য় , বেরিয়েছিল। কিন্তু এগুলির একটা খবরেও এটা বলা হয়নি যে, কংগ্রেসকর্মীরা ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগান দিচ্ছিল এবং সেই কারণেই তাদের প্রতিবাদ ভেঙে দিচ্ছিল পুলিশ।
খবরগুলিতে বলা হয়েছিল যে, শিল্পমন্ত্রী অমর আগরওয়াল তাঁর একটি মন্তব্যে কংগ্রেস দলকে ‘কাচরা’ বা জঞ্জাল বলে উল্লেখ করেন। তারই প্রতিবাদে সেদিন কংগ্রেসকর্মীরা বিক্ষোভ জানাচ্ছিল।
তবে এটা ঠিক পরিষ্কার নয় যে, পুলিশ সেদিন বিক্ষোভ প্রতিবাদ ভাঙতে ঠিক কি কারণে ওইরকম মরিয়া হয়ে উঠেছিল। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস একজন সিনিয়র পুলিশ অফিসারের সঙ্গে কথা বলে। সেখানে তিনি বলেন কংগ্রেস কর্মীরা ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেছিল এবং পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করছিল।
পিটিআই যে রিপোর্ট করে তাতে দেখা যায়, “অ্যাডিশনাল সুপারিনটেন্ডেন্ট অফ পুলিশ(এএসপি)নীরজ চন্দ্রকরের দাবি কংগ্রেস কর্মীরা মন্ত্রীর বাড়ির মধ্যে আবর্জনা ছুঁড়ে ফেলে। এবং একজন মহিলা পুলিশকর্মী ও পুরুষ কনস্টেবলদেরও হেনস্তা করে। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ-কেসও করা হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা তখন জেলা কংগ্রেস অফিসের সামনে গিয়ে ধরনায় বসে। বলেন পুলিশ অফিসার।
পুলিশ যখন আবার কংগ্রেসকর্মীদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করে তখন তারা আবার পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করে দেয়। সেই জন্য যাদের বিরুদ্ধে কেস করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে ‘মৃদু বলপ্রয়োগ’ করতে হয়,” জানান চন্দ্রকর।