না, ইনি উইং কমান্ডার অভিনন্দনের মা নন
টিভিতে ইমরান খানকে দেখে চোখে জল আসা এক বৃদ্ধার ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ইনি উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের মা
টেলিভিসনে ইমরান খানের ছবি দেখে কাঁদতে থাকা এক বৃদ্ধা মহিলার দুটি ছবি দেখিয়ে সোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো প্রচার চলছে যে, ইনি উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের মা । ‘শান্তির পথে একটি পদক্ষেপ’ হিশেবে পাকিস্তানের হেফাজতে ধৃত ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার ইমরান খানের ঘোষণার পরই অর্থাৎ ২০১৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকেই এই পোস্টগুলি সোশাল মিডিয়ায় ঘুরতে শুরু করে ।
পোস্টের আর্কাইভ সংযোগ এখানে এবং এখানে দেখুন।
একই ফোটো শেয়ার করে হিন্দি ক্যাপশন দিয়ে লেখা হয়—“অভিনন্দনের মা তাঁর হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে ইমরান খানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন । জয় হিন্দ ভারত!”
এই পোস্টের আর্কাইভ বয়ান দেখুন এখানে ।
এই ফোটোগুলি টুইটারেও জায়গা করে নিয়েছেঃ
তথ্য যাচাই
পাকিস্তানের পার্লামেন্টে ইমরান খান অভিনন্দনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানানোর পরদিনই অভিনন্দনের বাবা অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল এস বর্তমান এবং মা ডাক্তার শোভা বর্তমান ইন্ডিগো বিমান সংস্থার উড়ান ধরে চেন্নাই থেকে দিল্লিতে পৌঁছন । উড়ানের সহযাত্রীরা তাঁদের পরিচয় পাওয়ার পর সমবেতভাবে তাঁদের অভিনন্দিত করেন এবং উড়ান থেকে নামতে তাঁদের জন্য পথ করে দেন । সেই মুহূর্তের তোলা ভিডিও এরপর অচিরেই সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় । ভিডিওতে স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে, সহযাত্রীদের অভিনন্দনে ডাক্তার শোভা বর্তমান দৃশ্যতই মুগ্ধ ।
ভিডিওটিতে এটা পরিষ্কার যে, ভাইরাল হওয়া স্থিরচিত্রের বৃদ্ধাটি আদৌ অভিনন্দনের মা ডাক্তার শোভা বর্তমান নন l সেই থেকে বেশ কয়েকটি সংবাদ-চ্যানেল ডাক্তার শোভা বর্তমান এবং সীমান্তহীন ডাক্তারদের সংগঠন-এর (Doctors Without Borders) হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন উপদ্রুত, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশে তাঁর কাজ করার বিষয়ে বিশদ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ।
বুম ফোটোগ্রাফগুলি বিশ্লেষণ করে দেখেছে যে, টিভির পর্দায় চ্যানেলের যে প্রতীক দেখা যাচ্ছে, সেটি পাকিস্তানের জিওটিভি-র । সঙ্গে উর্দু ভাষায় লেখা রয়েছে, ‘অন্যান্য মুসলিম দেশের লোকও অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন’ ।
আমরা ছবিটির পিছনকার ইতিহাস খোঁজ করে দেখেছি, পাকিস্তানিরা এটি ২০১৮ সালে ব্যবহার করেছেন । টুইটারে উর্দুতে লেখা হয়েছে, “যখন এরকম সব মায়ের আশীর্বাদ তোমার উপর বর্ষিত হয়, তখন কেউ তোমার ক্ষতি করতে পারবে না । ইমরান খান জিন্দাবাদ!”