না, জেএনইউ থেকে নিখোঁজ ছাত্র নাজিব আহমেদ আইসিস-এর পতাকা নিয়ে ছবি তোলেননি
এটি ২০১৫ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা রয়টার্স-এর তোলা ইরাকের একটি ছবি ।
ইরাকের শিয়া যোদ্ধাদের একটি পুরনো ফোটো নতুন করে সোশাল মিডিয়ায় ভেসে উঠেছে, যা দেখিয়ে বলা হচ্ছে, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজিব আহমেদ নাকি ইসলামি স্টেটে (আইসিস) যোগ দিয়েছেন । ছবিটিতে একদল যোদ্ধাকে একটি কালো পতাকায় রঙ করা দেওয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে কিংবা হাঁটু মুড়ে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে, যে-পতাকাটি আইসিস-এর নিশান হিসাবে জেহাদিরা ব্যবহার করে ।
ফোটোটির ক্যাপশনে লেখাঃ “একে চিনতে পারছেন? ইনিই সেই জেএনইউ-র কমরেড নাজিব, যিনি আইসিসে যোগ দিয়েছিলেন ।” সঙ্গে নির্দেশ করা হয়েছে ঠিক মাঝখানে হাঁটু মুড়ে বসে থাকা এক তরুণের দিকে যিনি দু-আঙুলে ভি অর্থাৎ বিজয়ের চিহ্ন দেখাচ্ছেনঃ
ছবিটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন । আর তার আর্কাইভ সংস্করণ দেখুন এখানে এবং এখানে ।
"JNU থেকে ডিরেক্ট প্লেসমেন্ট ISIS-তে।
চিনতে পারছেন এনাকে??
আরে এটা আপনাদের কমরেড নজীব!
হ্যাঁ JNU-এর নজীব… আজাদী গ্যাং-এর সেই নজীব!!
ভারতকে টুকরো টুকরো করার স্বপ্ন দেখা গ্যাং-এর নজিব!!
বাম-কামু-মাকুদের প্রিয় শান্তির ছেলে নজীব।যিনি JNU থেকে ডাইরেক্ট প্লেসমেন্ট হয়েছেন ISIS-এ!
সিরিয়া থেকে রাহুল গান্ডু-কেজরিওয়াল-সীতারাম ইয়েচুরিকে সালাম জানিয়েছে।"
ভিপ্লবদীর্ঘজীবীহউক
তথ্য যাচাই
বুম ছবিটির তত্ত্ব-তালাশ করে দেখেছে, এটি ২০১৫ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা রয়টার্স-এর তোলা ইরাকের একটি ছবি । মূল ছবিটির ক্যাপশন ছিলঃ “ইরাকের শিয়া যোদ্ধারা ২০১৫ সালের ৭ মার্চ আল আলম শহরের কাছে আল কসাইবা নগরে একটি দেওয়ালের কাছে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, যে দেওয়ালটিতে ইসলামি স্টেট জঙ্গিদের ব্যবহৃত একটি কালো পতাকা আঁকা রয়েছে ।” ছবিটি তুলেছেন থায়ির আল সুদানি ।
রয়টার্সের মূল ছবিটি এখানে দেখুন ।
অথচ জেএনইউ-র বায়োটেকনলজি বিভাগের এমএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র নাজিব আহমেদ নিখোঁজ হন ২০১৬ সালের ১৫ অক্টোবর, এই ছবিটি প্রকাশিত হওয়ার এক বছরেরও বেশি কাল পরে ।
বস্তুত, গত বছর টাইমস অফ ইন্ডিয়া এক রিপোর্টে ‘আইসিস-এর প্রতি নাজিবের ঝোঁকে’র কথা প্রচার করে, সে যেসব ওয়েবসাইট ঘাঁটত, সে সংক্রান্ত তথ্যের ভিত্তিতে । এই তথ্য এবং তার ভিত্তিতে রচিত রিপোর্টের মালমশলা আবার দিল্লি পুলিশের সরবরাহ করা, যারা নাকি ওই ওয়েবসাইটগুলি ঘেঁটে দেখেছে । পরে অন্যান্য সংবাদমাধ্যম যখন সেই ভুয়ো রিপোর্টের অসারতা ধরিয়ে দেয় এবং দিল্লি পুলিশও এ ধরনের কোনও তথ্য সরবরাহের কথা অস্বীকার করে, তখন অগত্যা টাইমস অফ ইন্ডিয়াও প্রতিবেদনটি তুলে নেয় ।
এ সংক্রান্ত রিপোর্টটি দেখুন এখানে ।
গত বছর অক্টোবরে সিবিআই-ও নিখোঁজ ছাত্র নাজিবকে খোঁজা বন্ধ করে দেয় এবং তাকে নিয়ে বানানো ফাইল তাকে তুলে রাখে । এ বিষয়ে আরও জানতে দেখুন এখানে ।