এবার কলকাতার ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কারসাজি করা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে
বুম দেখে যে, মূল ভিডিওটিতে ধর্মঘট চলাকালে ছাত্রদের স্লোগান দেওয়ার দৃশ্য ধরা হয়েছিল।
একটি ভিডিওতে কয়েক জনকে নাচতে দেখা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে তাঁরা নাকি কলকাতার এনআরএস মেডিকেল কলেজের ছাত্র। তাঁদের দুজন সহকর্মীকে মারধোর করার প্রতিবাদে তাঁরা ধর্মঘট করলে, পশ্চিমবাংলা জুড়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙ্গে পড়ে। অথচ তারই মাঝে এনআরএস মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের নাচতে দেখা যাচ্ছে। এমনটাই দাবি করা হয়। কিন্তু ভিডিওটি সম্পূর্ণ ভুয়ো।
মূল ভিডিওটিতে ছাত্ররা স্লোগান দিচ্ছিল। সেটিকে ফাস্ট ফরওয়ার্ড করে এগিয়ে নিয়ে তার ওপর বসিয়ে দেওয়া হয় একটি আলাদা সাউন্ডট্র্যাক। আর বলা হয় যে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যখন বিপর্যস্ত, তখন এনআরএস-এর ছাত্ররা আনন্দ করছেন।
ভিডিওটি বেশকিছু পেজে ভাইরাল হয়েছে। সেটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, “একদিকে মৃত্যুর মহাসমাবেশ চিকিৎসকদের হরতালে। অন্যদিকে জুনিয়র ডাক্তার দের মহোৎসব দেখুন। কোনদিন দেখেছেন ডাক্তার নাচছে ????? তাও আবার চিকিৎসা বন্ধ করে ?”
তথ্য-যাচাই
এক অস্বাভাবিক গতিতে ছাত্ররা নাচছিল। সেটাই ইঙ্গিত করে যে ভিডিওটিতে কারিকুরি করা হয়েছে। যে সব পেজ থেকে সেটি শেয়ার করা হয়, সেগুলির পরিচালকদের তীব্র সমালচনা করেন নেট ব্যবহারকারীরা। তাঁরা বলেন, ভিডিওটির এডিটিং অত্যন্ত নিম্নমানের।
বুম দেখে যে, মূল ভিডিওটিতে ধর্মঘট চলাকালে ছাত্রদের স্লোগান দেওয়ার দৃশ্য ধরা হয়েছিল।
এনআরএস মেডিকেল কলেজের ছাত্র সুপ্রিয় ঘোষ ভিডিওটি তোলেন ও নিজের পেজে সেটি শেয়ার করেন। বুম ঘোষের মতামত চেয়েছে। সেটি পাওয়া গেলে এই প্রতিবেদন আপডেট করা হবে।
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন যে, বহিরাগতরা জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে মদত দিচ্ছে। তাঁর ওই উক্তি আন্দোলনরত ডাক্তারদের আরও উত্তেজিত করে তোলে। তাঁরা ওই ‘বহিরাগত’ শব্দটিকে ঘিরে স্লোগান দিতে থাকেন, আর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বিক্ষোভকারীরা তালে তাল মেলাতে থাকেন তাঁদের সঙ্গে।
বুম আরও দেখে যে, নচিকেতার গান ,‘ডাক্তার’, ওই ভিডিওটির ওপর বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ, এনআরএস মেডিকেল কলেজে এক ৭৫ বছর বয়সি রোগীর মৃত্যু হলে, তাঁর আত্মীয়রা জুনিয়র ডাক্তারদের মারধোর করে। ওই আক্রমণের প্রতিবাদে ডাক্তারি ছাত্র ও চিকিৎসকরা কাজ বন্ধ করে দিলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনায় বসে তাঁদের সমস্যাগুলি সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলে ডাক্তাররা তাঁদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।