মহারাষ্ট্রে জাতি নিপীড়নের ঘটনা বলে পুরনো বিবস্ত্র মহিলার ছবি শেয়ার
এই একই ছবি ২০১৪ সাল থেকে ইন্টারনেটে ঘুরে বেরাচ্ছে। ২০১৪ সালের ২৬ শে নভেম্বর ভারতে দলিতদের উপর ধর্ষণের ঘটনা বলে টুইট করা হয়েছিল পাকিস্তান সাইবার ফোর্স নামের একটি টুইটার অ্যাকাইন্ট থেকে।
ভাইরাল হওয়া বিবস্ত্র এক নাবালিকার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। দাবি করা হয়েছে সেটি মহারাষ্ট্রে জাতি নিপীড়নের ঘটনা। পোস্টটির ছবিতে দেখা যাচ্ছে, এক নাবালিকা বিবস্ত্র অবস্থায় দাড়িয়ে রয়েছেন। তার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে বেশ কয়েকজন পুরুষ।
পোস্টটিতে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, “গতকাল মহারাষ্ট্রে নিম্নবর্ণের হিন্দু মহিলাকে উলঙ্গ করে শহর ঘোরালো উচ্চবর্ণের হিন্দুরা, এটাই বিজেপির ভারত মাতা। হায় রে মোদী, হায় রে ভারতের মা! (সংগৃহীত)”
এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত ১৭০ লাইক ও ৩৩১ জন শেয়ার করেছেন। পোস্টটি পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
একই ছবি সহ অন্য আর একটি পোস্টে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, ‘‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও, গতকাল মহারাষ্ট্রের অমরাবতী জেলায় এক নিম্ন বর্ণের দলিত অসহায় মহিলার উপর উচ্চ বর্ণের হিন্দু বিজেপি নরপিশাচদের পাশবিক অত্যাচার, জয় ছিরিরাম, ভারতমাতা কী জয় ছিঃ_ধিক্কার’’
পোস্টটি লাইক করেছে ৩৭২ জন ও শেয়ার করেছেন ২১২ জন ব্যক্তি। পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
এই একই ছবি ২০১৪ সাল থেকে ইন্টারনেটে ঘুরে বেরাচ্ছে। ২০১৪ সালের ২৬ শে নভেম্বর ভারতে দলিতদের উপর ধর্ষণের ঘটনা বলে টুইট করা হয়েছিল পাকিস্তান সাইবার ফোর্স নামের একটি টুইটার অ্যাকাইন্ট থেকে।
২০১২ সালে দ্য হিন্দু-তে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার কারাদ তালুকের অধীন মুলগঁওয়ে ৪২ বছর বয়সী এক দলিত মহিলাকে ৫ জন উচ্চবর্ণের ব্যক্তি বিবস্ত্র করে ঘোরায়। ওই ঘটনায় ৫ জন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
অভিযোগ ওই মহিলার ছেলে উচ্চ বর্ণের একটি মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায়। মেয়েটির পরিবারের লোকজন ছেলেটির মাকে এভাবে হেনস্থা করে। এই প্রতিবেদনে কোনও ছবি ব্যবহার করা হয়নি। কয়েকদিন পর দ্য হিন্দু ওই ঘটনা নিয়ে আর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে লাঞ্ছিত মহিলা রেখা অরুন চৌহানের ছবি সহ জবানি তুলে ধরা হয়।
বুম পোস্ট ও টুইটের একই ছবি ২০১৭ সালে ফেসঅফমালাওয়াই ও উর্দুপয়েন্ট নামে দুটি ওয়েবসাইটে দেখতে পায়।
ছবি ছাড়া লাহোরওয়ার্লড নামেএকটি ওয়োবসাইটে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে বলা হয়, পাকিস্তানের খাইবার পাকতুনখাওয়া প্রদেশের ডেরা ইসমাইল খান প্রদেশের ৮০ কিমি অদূরে চাউধোয়ান-এর কাছে এক দুর্গম শহরের এক ষোড়শীকে পারিবারিক সম্মান রক্ষার তাগিদে বিবস্ত্র করে ঘোরানো হয়।
বিবিসিতে ২০১৭ সালের ৩ নভেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই ষড়শীকে তার ভাইয়ের আশনাইয়ের বদলা নিতে, ভায়ের প্রণয়িনীর বাড়ির লোকজনের পক্ষ থেকে হেনস্থা করা হয়। বিবস্ত্র করে হাঁটানো হয় তাকে।
ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ আটজনকে গ্রেফতার করলেও এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত সাজাওয়াল অধরা ছিল। এই প্রতিবেদনে কোনও ছবি ব্যবহার করা হয়নি।সেকারনে বুমের পক্ষে ছবিটির উৎস যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
ও
যদিও ছবিটি ইন্টারনেটে ২০১৪ থেকে রয়েছে, বুম ছবিটির মূল সূত্র খুঁজে পেতে সক্ষম হয়নি।