মক্কায় গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহুতির চেষ্টার পুরনো ভিডিও সাম্প্রদায়িক রঙ লাগিয়ে পুনঃপ্রচার
ভাইরাল পোস্টে বলা হয়েছে এক ইরানীয় মুসলমান কাবায় দুধ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন যে, তাঁর পূর্বপুরুষরা হিন্দু ছিলেন আর কাবা ছিল এক শিবলিঙ্গ।
দু’বছরের পুরনো এক ভিডিওয় একটি লোককে সৌদি আরবের মক্কার কাবায় পেট্রল ছুঁড়তে দেখা যাচ্ছে। সেই ভিডিওটি এখন শেয়ার করা হচ্ছে এই দাবি করে যে, ছুঁড়ে-দেওয়া তরল পদার্থটি আসলে দুধ, পেট্রল নয়।
ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে দেওয়া ক্যাপশনে বলা হয়েছে, “এক ইরানীয় যুবক কাবায় দুধ ঢালে এবং দাবি করে তাদের পূর্বপুরুষরা হিন্দু ছিল এবং কাবা একটি পবিত্র শিবলিঙ্গ।"
(মূল হিন্দিতে: “ ईरान के यूवक ने मक्का मे दूध चढाया ओर बोला हमारे पूर्वज हिन्दू थे और ये पवित्र शिवलिंग है।")
পঞ্চাশ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সাদা কাপড়-পরা এক ব্যক্তি বোতল থেকে কাবার ওপর তরল পদার্থ ঢালছে। তারপর, সে আরবি ভাষায় কিছু কথা বলে, কিন্তু সেখানে উপস্থিত বাকি ভক্তরা তাকে সঙ্গে সঙ্গে ধরে ফেলে আর নিয়ে চলে যায়। আরবিতে ‘কাবা’র মানে ‘কিউব’ বা ঘনক্ষেত্র। কাবাকে ইসলামের সবচেয়ে পবিত্রস্থান বলে মনে করা হয়। সৌদি আরবে মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদের কেন্দ্রে রয়েছে ওই বিশেষ গঠনটি।
বিগত কয়েকদিনে, ভিডিওটি কয়েক হাজার বার শেয়ার করা হয়েছে। পোস্টটি দেখা যাবে এখানে ও পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটিকে ফ্রেমে ফ্রেমে ভেঙ্গে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে। তার ফলে ইউটিউবের বেশ কয়েকটি লিঙ্ক ও সংবাদ প্রতিবেদন সামনে আসে। সেগুলিতে ওই একই ভিডিও ব্যবহার করা হয় এবং বলা হয় লোকটি ওই পবিত্র স্থানে পেট্রল ঢালছিল।
প্রতিবেদনগুলি অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটে ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯’এ। সেদিন মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদে এক ব্যক্তি গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিল।
যে লোকটিকে ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তাকে সৌদি আরবেরই নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এবং কর্তৃপক্ষ জানায় যে, মানসিক অসুস্থতায় ভুগছিল সে। রিপোর্টগুলি এখানে ও এখানে পড়ুন।
প্রতিবেদনগুলির মধ্যে একটিতে, ওই ঘটনার অন্য কোণ থেকে তোলা আরও একটি ভিডিও ব্যবহার করা হয়।
ভুয়ো ভাইরাল খবরের উৎস
মক্কায় শিবলিঙ্গ আছে এমন একটা দাবি, এখও ইন্টারনেটে ঘুরছে। এর স্বপক্ষে তথ্যনিষ্ট কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়না।
‘শিবলিঙ্গ’ শব্দটি দিয়ে গুগুলে সার্চ করলে, নীচের ফলাফলগুলি পাওয়া যায়।