একটি মসজিদে শিয়া-সুন্নি সংঘর্ষের পুরনো ভিডিও সাম্প্রদায়িক রঙ লাগিয়ে শেয়ার করা হচ্ছে
ওই ভাইরাল পোস্টে দাবি করা হয়েছে হরিয়ানার এক মন্দিরে মহিলারা কীর্তন গাওয়ার সময় মুসলমানরা তাঁদের ওপর পাথর ছোঁড়ে। কিন্তু ভিডিওটি চার বছর আগের, রাজস্থানে তোলা। আর যে বাড়িটি দেখা যাচ্ছে, সেটি একটি মসজিদ
রাজস্থানে একটি মসজিদের সামনে শিয়া-সুন্নি গোষ্ঠী সংঘর্ষের চার বছরের পুরনো একটি ভিডিও মিথ্যে দাবি সমেত ভাইরাল হয়েছে। বলা হয়েছে, হরিয়ানার একটি মন্দিরে মুসলমানদের ঢিল ছোঁড়ার ভিডিও সেটি।
বুম জানতে পারে সেটি দুই ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে কোনও সংঘর্ষের ছবি নয়। বরং সেটি মুসলমানদের শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে একটি বিবাদের ভিডিও। এবং ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৫ সালে।
ভিডিওটির সঙ্গে দেওয়া ক্যাপশনে লেখা হয়: “গতকাল ফরিদাবাদের আত্তালি গ্রামের এক মন্দিরে কীর্তন গাইছিলেন মহিলারা। তাঁদের ওপর পাথর ছোঁড়ে এক দল শান্তিপ্রিয় মুসলমান। একজন মহিলা ঘটনাটির ভিডিও তোলেন। এবং সেটি এখন সারা দেশে ভাইরাল হয়েছে। কোনও চ্যানেল এটি দেখাবে না।”
(হিন্দি বয়ানটি ছিল: कल शाम को अटाली गांव फरीदाबाद में शांतिप्रिय मुस्लिम लोगो द्वारा मंदिर में कीर्तन कर रही महिलाओ पर पथराव। एक जागरूक महिला ने वीडियो बनाया जो की पूरे हिंदुस्तान में फेल चूका है। किसी न्यूज़ चॅनेल पे ये नहीं दिखाया जाएगा।)
একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী ৩১ জুলাই ২০১৫ তারিখে ওই একই ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। দিল্লির হাউজ কাজি এলাকায় তথাকথিত স্থানীয় মুসলমানদের দ্বারা একটি মন্দির ভাঙচুর হওয়ার পর, ওই ভিডিও আবার নতুন করে শেয়ার করা হচ্ছে। দিল্লির ঘটনাটি সম্পর্কে আরও জানতে, এখানে পড়ুন ।
বিগত কয়েক দিন ধরে ভিডিও ক্লিপটি ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ আর টুইটারে ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, এক উত্তেজিত জনতা একটি সাদা বাড়ি লক্ষ করে পাথর ছুঁড়ছে। বাড়িটি একটি মসজিদের মত দেখতে। কিন্তু ভাইরাল পোস্টে সেটিকে মন্দির বলে দাবি করা হয়েছে।
ভিডিওটি এখানে , আর তার আর্কাইভ সংস্করণ এখানে দেখা যাবে।
তথ্য-যাচাই
ভিডিওটির কয়েকটি স্ক্রিনশট নিয়ে বুম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে। তার ফলে ২০১৫ সালের বেশ কিছু ফেসবুক পোস্ট সামনে আসে। সেগুলিতে ওই একই ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছিল।
‘অল্ট নিউজ’ ভিডিওয় রেকর্ড-করা ঘটনাটি সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখে সেটি জয়পুরের কাগজি কলোনির ঘটনা। জায়গাটি সেখানকার সঙ্গানের থানার অন্তর্গত।
ঘটনাটি সম্পর্কে আরও জানতে, বুম সঙ্গানের থানার স্টেশন হাউস অফিসার লাখান সিং কাটানার সঙ্গে যোগাযোগ করে।
উনি আমাদের ভিডিওটি পাঠাতে বলেন। সেটি দেখার পর কাটানা নিশ্চিতভাবে জানান যে, ভিডিওতে যে বাড়িটি দেখা যাচ্ছে, সেটি একটি মসজিদ।
“ঘটনাটি ২০১৫ সালের। মুসলমান সম্প্রদায়ের শিয়া আর সুন্নি গোষ্ঠীর মধ্যে প্রার্থনার সময় নিয়ে একটা সংঘর্ষ হয়। দুই গোষ্ঠীই আগে প্রার্থনায় যোগ দিতে চাইলে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে।
-লাখান সিং কাটানা, স্টেশন হাউস অফিসার, সঙ্গানের পুলিশ স্টেশন
কাটানা আরও বলেন যে, শেষমেশ ওই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মিটমাট হয়ে যায়।