মাদ্রাসা ছাত্রদের আটক করার এক পুরনো ভিডিও বিভ্রান্তিকর দাবি নিয়ে ফিরে এসেছে
বুম দেখে, ভিডিওটি ২০১৫ সালের। সে বছর পুণের এক মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে নিজেদের পরিচয়পত্র দেখাতে না পারার জন্য ৬৩ জন বাচ্চাকে কলকাতায় আটক করা হয়।
একদল বাচ্চাকে আটক করা নিয়ে ২০১৫ সালের একটি ভিডিও বিভ্রান্তিকর দাবি সমতে ভাইরাল হয়েছে। বলা হয়েছে এক মাদ্রাসায় জঙ্গি হয়ে ওঠার প্রশিক্ষণ দিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তাদের।
বুম তার হেল্পলাইনে একটি ভিডিও পায় ৯ জুন ২০১৯ তারিখে। ওই ভিডিওর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া লিখিত বিবরণে বলা হয়, পুলিশ কলকাতার রাজাবাজার এলাকা থেকে ৬৩ জন ছাত্রকে আটক করে। তারা স্বীকার করেছে যে, জঙ্গি কার্যকলাপ চালানোর জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল এক মাদ্রাসায়।
ওই ক্যাপশনে আরও বলা হয়, মূলস্রোতের সংবাদমাধ্যমগুলি ঘটনাটিকে উপেক্ষা করে, কারণ ‘ওপর থেকে তেমনই নির্দেশ’ ছিল তাদের কাছে।
ভিডিওটিতে একদল বাচ্চাকে তাদের সঙ্গে নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে পুলিশকে।
বুম ইংরেজি ক্যাপশনটির খোঁজ করে। এবং সোশাল মিডিয়ায় ওই একই ক্যাপশন লাগানো একটি ভিডিওর হদিশ পায়।
ক্যাপশনগুলিতে যা দাবি করা হয়, বুম তার মধ্যে পার্থক্য লক্ষ করে। হিন্দি বয়ানে বলা হয় বাচ্চারা নিজেরাই স্বীকার করে যে, তাদের জঙ্গি প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য পাঠানো হচ্ছিল। কিন্তু ফেসবুকে পোস্ট-করা ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয় যে, ওই দাবিটি করে পুলিশ।
তথ্য-যাচাই
ক্যাপশন সার্চ করার যে ফলাফল ফেসবুকে পাওয়া যায়, সেগুলি থেকে বুম জানতে পারে যে, একই ক্যাপশন সমেত ভিডিওটি চার বছর আগে শেয়ার করা হয়েছিল।
একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়েছিল ৭ অগস্ট ২০১৫’য়। অন্যটি ৯ অগস্ট ২০১৫ তারিখে।
সার্চ করার ফলে আমরা এ বিষয়ে ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’, ‘স্ক্রোল’ এবং ‘ডিএনএ’-তে প্রকাশিত তিনটি প্রতিবেদন দেখতে পাই।
সংবাদ প্রতিবেদনগুলিতে বলা হয়, ২ অগস্ট ২০১৫ তারিখে, গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) একজন মাদ্রাসা শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রী সহ ৬৩ জন বাচ্চাকে আটক করে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায় যে, ওই বাচ্চারা বিহারের পুর্ণিয়া-কিষাণগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। তারা যাচ্ছিল পুণের এক মাদ্রাসায় প্রশিক্ষণ নিতে।
স্ক্রোল আর ডিএনএ-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, জিআরপি বলেছিল যে, পরিচয়পত্র দেখাতে না পাওয়ার কারণে তাদের আটক করা হয়।
পুলিশের দিক থেকে জঙ্গি প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত কোনও রকম সন্দেহ প্রকাশ করার কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। এও বলা হয়নি যে, জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছে বাচ্চারা।
লেখাগুলিতে আরও বলা হয় যে, ওই বাচ্চাদের আটক করার ফলে কলকাতার মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে যথেষ্ঠ অসন্তোষ দেখা দেয়। তার ফলে. শহরে ‘দাঙ্গা’ লেগে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় টুইটারে।
তবে, স্ক্রোল তার প্রতিবেদনে জানিয়ে দেয় যে, শহরে কোনও দাঙ্গার ঘটনা ঘটেনি।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বাচ্চাগুলিকে তাদের বাড়ি বিহারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।