গোয়ায় রুশ ভক্তদের দ্বারা পুলিশকে মারার দৃশ্য পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা বলে চালানো হচ্ছে
ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বুম দেখে যে, ঘটনাটি গোয়ায় ২০০৮ সালে ঘটেছিল
![](https://bangla.boomlive.in/wp-content/uploads/sites/3/2019/05/ISKCON_GOA_Featured.jpg)
ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনসাসনেস বা ইসকন-এর রুশ অনুগামীদের গোয়ায় পুলিশকে মারধোর করার এক পুরনো ভিডিও মিথ্যে দাবি সমেত আবার প্রচারে আনা হয়েছে। তাতে বলা হচ্ছে যে, ভিডিওটি পশ্চিমবাংলার। যেখানে রাস্তায় ভক্তদের গীতা বিক্রি করায় বাধা দেওয়া হয়েছিল।
ভিডিওটি ১.২৫ মিনিট দীর্ঘ। তাতে দেখা যাচ্ছে কিছু সনাতনি ধর্মীয় পোশাক পরা ব্যক্তি পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিতে লিপ্ত। এবং পথচারিরা দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য দেখছে।
ফেসবুকে ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, “ইসকনের সন্ন্যাসীরা কলকাতার কাছেই রাজপথে নাম সংকীর্তন করতে করতে গীতা বিক্ৰী করছিলেন। শান্তির ধর্মের কিছু যুবক এসে বাধা দেয়। বই কেড়ে নেয়, সন্ন্যাসীদের গায়ে হাত দেয়। বিদেশী কৃষ্ণভক্তরা পালাবার বান্দা নন। তাঁরাও রুখে দাঁড়ান। পাল্টা মারেন। দর্শক পুলিশ এবার এগিয়ে আসে। সন্ন্যাসীদের গ্রেফতার করতে। কেন গ্রেফতার? নাম সংকীর্তন কি বাংলায় নিষিদ্ধ? গীতা বিক্ৰী করা যাবে না? ছিঃ। এই ঘটনার কোনো প্রতিবাদ অবশ্যই হবে না। কারণ বাঙালি সেক্যুলার। বাংলা প্রগতিশীল।বাংলার মানুষ ও বুদ্ধিজীবী বড় বড় বিষয় নিয়ে, কাঠুয়া নিয়ে, উন্নাও নিয়ে ব্যস্ত। এই 21শে এপ্রিলের(2018) ঘটনা।
ভিডিওটি নীচে দেখা যাবে, আর তার আর্কাইভ সংস্করণ, এখানে ।
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটি ইনভিড সফ্টওয়্যারের সাহায্যে যাচাই করে এবং তার প্রধান ফ্রেমগুলি বিশ্লেষণ করে দেখে সেটি আসলে গোয়ার ঘটনার ভিডিও, পশ্চিমবঙ্গের নয়। এবং ভিডিওটির ৩ সেকেন্ড চলার পরই ব্যাকগ্রাউন্ডে পুলিশ লেখা ভ্যানে গোয়া পুলিশকে দেখা যায়। ওই ঘটনার ওপর কিছু নিউজ রিপোর্টও বুম দেখে। তাতে দেখা যায় ঠিক একই ঘটনা নিয়ে ‘হেরাল্ড গোয়া’তে একটি রিপোর্ট বেরিয়েছে।
![](https://bangla.boomlive.in/wp-content/uploads/sites/3/2019/05/WhatsApp-Image-2019-05-02-at-2.19.14-PM.jpeg)
তবে নিউজ পোর্টালের ওয়েবসাইট আরকাইভে ওই নিউজটির সন্ধান মেলেনি। ইতিমধ্যে ওই ঘটনার প্রত্যুত্তরে ২০১২ সালে রেডইট একই হেডলাইন সমেত খবরটি পোস্ট করে। তাতে এও উল্লেখ করা হয় যে, ঘটনাটি ২০০৮ সালে ঘটেছিল।
বুম ভিডিওটি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য হেরাল্ড গোয়ার তৎকালীন এডিটরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।তাঁর মতামত জানা গেলেই খবরটি আপডেট করা হবে।
ওই একই ভিডিও ২০১৮ সালে ১৬ এপ্রিল ইউটিউবে আপলোড করা হয়।
বুম গোয়ার একজন স্থানীয় রিপোর্টারের সঙ্গেও যোগাযোগ করে। যিনি বেশ দৃঢ়তার সঙ্গেই দাবি জানান যে, ঘটনাটি সত্য। কিন্তু সেটি ২০০৮ সালেই ঘটেছিল কিনা সে বিষয়ে সুনিশ্চিত করতে পারেননি।