পাকিস্তানি নেটিজেনরা হিমাচল প্রদেশে আপেল গাছ ধ্বংস করার ভিডিওকে কাশ্মীরের ঘটনা বলে শেয়ার করছে
বুম দেখেছে, ভিডিওটি কাশ্মীরের নয়, হিমাচল প্রদেশের। যেখানে বেআইনি জবরদখল বন্ধ করতে হাইকোর্ট ওই গাছগুলি কেটে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল।
হিমাচলপ্রদেশে আপেল গাছ কেটে ফেলার একটি ভিডিওকে পাকিস্তানের বেশ কয়েকজন নেটিজেন এই ভুয়ো ব্যাখ্যা সহ শেয়ার করছে যে, ভারত সরকার কাশ্মীরিদের আপেল বাগান ধ্বংস করে দিচ্ছে।
ভারত সরকার ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করে দেয়।
ভিডিওটিতে বেশ কিছু আপেল গাছ কেটে ফেলার দৃশ্য দেখানো হয়েছে, যার তদারকি করছেন সুপারভাইজাররা এবং স্থানীয় পুলিশ।
ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে একটি উর্দু ক্যাপশন সহ, যার বাংলা অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, “৩৭০ ধারা লোপ করে অধিকৃত কাশ্মীর দখল করার পর ভারতীয় মোদী সরকার অত্যাচার শুরু করেছে এবং নিরীহ-নির্দোশ কাশ্মীরিদের ফলের বাগান পর্যন্ত ধ্বংস করে দিচ্ছে। ভিডিওটি যতজন পারেন, ফেসবুকে শেয়ার করুন এবং ‘লাইক’ দিন।”
ভিডিওটি বিভিন্ন ফসবুক পেজ ও টুইটারেও ভাইরাল হয়েছে।
টুইটারেও একই বিবরণী এবং ক্যাপশন সহ ভিডিওটি শেয়ার হয়েছে।
তথ্য যাচাই
বুম এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পেরেছে যে, ভিডিওটি কাশ্মীরের ঘটনার নয়, কারণ যারা গাছ কাটছে, তারা স্থানীয় হিমাচলি ভাষাতেই নিজেদের মধ্যে কথা বলছে।
তা ছাড়া, ছবিতে দুজন লোককেও দেখা যাচ্ছে প্রথাগত হিমাচলি টুপি পরে।
আমরা ভিডিওটিকে কয়েকটি মূল ফ্রেমে ভেঙে খোঁজ লাগিয়ে দেখেছি, গত বছর জুলাই মাসে এই ভিডিওটি ইউটিউবে আপলোড করেছিল হিমাচল ওয়াচার নামে একটি সংস্থা।
সেই ভিডিওটির নামকরণ ছিল—“ফলন্ত গাছের হত্যাকাণ্ড চলছে’’
বাকি বিবরণীটা এইরকম, “হাইকোর্টের নির্দেশে বনভূমিতে জবরদখল ঠেকাতে ফলন্ত আপেল বাগানের হত্যাকাণ্ড জারি রয়েছে। হাজার-হাজার আপেল গাছ ইতিমধ্যেই কাটা পড়েছে, আরও অনেক গাছই এই অভিযানে নির্মূল হওয়ার অপেক্ষায়। এটা ঠিক যে, অরণ্যসম্পদকে জবরদখলমুক্ত করার এই প্রয়াস অভিনন্দনযোগ্য, কিন্তু একই সঙ্গে এক লপ্তে এতগুলো গাছ নির্মূল করলে সামগ্রিক পরিবেশের উপর তার প্রতিকূল প্রভাবও পড়তে পারে।”
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সংবাদপত্র জানাচ্ছে, গত বছর মে মাসে হাইকোর্ট বিশেষ তদন্তকারী দলকে এক সপ্তাহের মধ্যে সিমলার এই আপেল বাগানের সব গাছ সাফ করে দেবার সময়সীমা ধার্য করেছিল।